পুজোর মরশুম শেষ হতেই শীতের আমেজ। শীতকাল মানেই পিকনিক, উইকএন্ড ট্রিপের প্ল্যানিং শুরু করা। আপনিও যদি এই দলের সদস্য হয়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই ভাবছেন এবার শীতে কোথায় যাবেন? বাঁকুড়া নিশ্চয়ই গিয়েছেন। বিষ্ণুপুর, শুশুনিয়া ঘুরে দেখা হয়ে গিয়েছে। এবার সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে যেতে পারেন কোড়ো পাহাড়ে। বাঁকুড়ার কোথায় এই পাহাড়, কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, ভাবছেন? রইল কোড়ো পাহাড়ের খুঁটিনাটি।
বাঁকুড়া শহর থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কোড়ো পাহাড়। সবুজে ঢাকা ছোট্ট পাহাড়। উচ্চতা খুব বেশি হলে ৫০০ ফুট হবে। কিন্তু এই পাহাড়ের সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন। পাহাড়ের এক পাশ দিয়ে নিশ্চুপে বয়ে চলেছে শালি নদী। তার পাশ দিয়ে লাল মাটির পাকদণ্ডী পথ চলে গিয়েছে জঙ্গলের মধ্যে। এই পথ ধরে বড় বড় পাথরের চাঁই ডিঙিয়ে উঠে পড়া যায় একদম পাহাড়ের মাথায়। পাহাড়ের চূড়ায় বাস অষ্টভূজা পার্বতীর মন্দির। তার পাশাপাশি এই পাহাড়ে একটি আশ্রমও রয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা এবং দুপুর ৩টে থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত মন্দিরের দরজা খোলা থাকে। শীতের সময় সন্ধে তাড়াতাড়ি নামলে মন্দিরের দরজাও বন্ধ হয়ে যায়।
শহুরে কোলাহল বা খুব বেশি জনবসতি নেই কোড়ো পাহাড়ের আশেপাশে। জায়গাটা বেশ ফাঁকা ও নিরিবিলি। পাহাড়ের মাথা থেকে দেখা যায় সূর্যাস্ত। যেহেতু পর্যটন মহলে এই পাহাড়ের খুব বেশি নামডাক নেই, তাই কোড়োতে মানুষ আসেনও কম। মূলত বাঁকুড়া থেকে অমরকানন যাওয়ার পথে পড়ে এই ছোট্ট এলাকাটি। অমরকানন যাওয়ার পথে ছোট্ট সাঁকো পার করে আর এক কিলোমিটার মতো এগোলেই চোখে পড়বে ‘মহিমানন্দ তপোবন আশ্রম’। এরপর রাস্তা ঠিক যেমন-যেমন এগিয়েছে, সেই পথ ধরে এগোলেই পৌঁছে যাবেন কোড়ো পাহাড়ে। পার্বতী মন্দিরের সঙ্গে যে আশ্রম রয়েছে সেটাই ‘মহিমানন্দ তপোবন আশ্রম’। এখান থেকে অনেকেই কোড়ো পাহাড়কে ‘তপোবন’ও বলে।
আশ্রমকে পিছনে ফেলে এগোলেই চোখে পড়বে পাহাড়ে ওঠার সিঁড়ি। দু’পাশে গাছগাছালি। তার মাঝখান দিয়ে হেঁটে উঠতে হবে কোড়ো পাহাড়ের উপর। কোড়ো পাহাড়ের উপর উঠে মনে হবে আপনার উইকএন্ড প্ল্যান সার্থক হয়েছে। তাহলে আর দেরি কীসের, চটপট প্ল্যান করে ফেলুন বাঁকুড়ার কোড়ো পাহাড়ের। কলকাতা থেকে লং ড্রাইভে যেতে চাইলে ১৯ নং জাতীয় সড়ক ধরে নিন। গাড়িতে কোড়ো পাহাড় পৌঁছতে সময় লাগবে প্রায় ৫ ঘণ্টা। কিন্তু উইকএন্ড হয়ে থাকবে মনের মতো।