প্রকৃতির অফুরন্ত দান এই দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। প্রতিটি প্রান্তেই রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শন। শুধু আসল রত্নকে খুঁজে পাওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সম্প্রতি এমন এক অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে মর্যাদা দেওয়া হল। মঙ্গলবার, মেঘালয়ের লিভিং রুটি ব্রিজকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তালিকায় আন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এমন সুখবরে দারুণ খুশি মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড কে সাংমা। তিনি ট্যুইটারে লিখেছেন, ‘জিংকিয়েং জেরি: লিভিং রুট ব্রিজ কালচারাল ল্যান্ডস্কেপস অফ মেঘালয়’ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের অস্থায়ী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তা জানাতে পেরে আনন্দিত। এই সফরের জন্য আমি সব সম্প্রদায়ের সদস্য ও অংশীদারদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
পাহাড়ি রাজ্যের পূর্ব খাসি পাহাড় জেলা ও পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড় জেলার ৭২টি গ্রামে রয়েছে প্রায ১০০টিরও বেশি লিভিং রুট ব্রিজ। এই সেতু শুধু প্রকৃতি ও মানুষের সম্পর্ককেই শিলমোহর দিল তা নয়, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং বোটানিক্যাল যোগসূত্র তুলে ধরে সংযোগ এবং স্থিতিস্থাপকতার জন্য অর্থনীতি ও বাস্তুশাস্ত্রের ভারসাম্য বজায় রাখার মজবুত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দেয় বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি এই প্রাকৃতিক সেতুগুলির ইউনেস্কোর স্বীকৃতির জন্য আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইউনেস্কোর মতে, “এই কাঠামোগত ইকোসিস্টেমগুলি শতাব্দী ধরে চরম জলবায়ু পরিস্থিতিতে সঞ্চালিত হয়েছে, এবং মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে গভীর সম্প্রীতি ঘটিয়েছে।” আদিবাসী খাসি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষরা প্রকৃতি ও মানব সভ্যতাকে কীভাবে বন্ধনের জালে জড়িয়ে রেখেছে তা নিজের না দেখলে বিশ্বাস করা দায়।
এই রুট ব্রিজগুলি নদীর ওপর দিয়ে এক গ্রাম থেকে আর একটি গ্রামের যোগ তৈরি করে। সেতুগুলি এই গ্রহের সবচেয়ে আর্দ্র অঞ্চলে অবস্থিত। এর আশেপাশে প্রায় ৭৫টিরও বেশি প্রত্যন্ত গ্রামে সংযোগের সুবিধা দেয়৷ দেশের এই আদিবাসীরা কবে এই জীবন্ত স্থাপত্যের সূচনা করেছিল তার কোনও বিশ্বাসযোগ্য নথি নেই।
একটি নদী বা নদীর ওপর দিয়ে রবার-ডুমুর গাছের নরম শিকড় দিয়ে তৈরি করা হয়। যা দিনে দিনে আরও বেড়ে ওঠে ও বড় গাছের শিকড়কে বহু বছর ধরে শক্তিশালী করে তোলে। কিছু সেতু শত শত বছরের পুরানো বলে মনে করা হয়, এবং একবার সেগুলি পরিপক্ক হয়ে গেলে, সেগুলি সেতু হিসাবে কাজ করে। ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে এবং ৫০ জনের একসঙ্গে সেগুলি অতিক্রম করতে পারে৷
আরও পড়ুন: Rajasthan Diwas 2022: মরুরাজ্যকে নতুন করে চিনতে চান? জেনে রাখুন রাজস্থানের অজানা কিছু তথ্য