Last Indian Village: একাধিক ধর্মীয় বিশ্বাস জড়িত রয়েছে এই গ্রামের সঙ্গে! জেনে নিন ভারতের সেই শেষ গ্রামের ঠিকানা
চিন-ভারত বর্ডারের শেষ গ্রামের ঠিকানাও এই রাজ্য। সেই গ্রামের নাম হল মানা। ধারণা করা হয় এই গ্রাম থেকেই স্বর্গে যাওয়ার পথ রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের এই মানা গ্রাম সরকারিভাবে উত্তরাখণ্ডের 'ভারতের শেষ গ্রাম' হিসেবে স্বীকৃত।
ভারত তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত। ভারতকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ঐতিহ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভারতের প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি শহরের নিজস্ব স্বতন্ত্র পরিচয় এবং গল্প রয়েছে। এই পরিপেক্ষিতে উত্তরাখণ্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব দৃশ্য।
পর্যটনের দিক থেকে উত্তরাখণ্ড একটি চমৎকার রাজ্য। এখানে আপনি জলপ্রপাত, পাহাড়, নদী, রহস্যময় মন্দির সব কিছুই পেয়ে যাবেন। আর এই রাজ্যেই অবস্থিত এক অন্য স্বর্গ। চিন-ভারত বর্ডারের শেষ গ্রামের ঠিকানাও এই রাজ্য। সেই গ্রামের নাম হল মানা। ধারণা করা হয় এই গ্রাম থেকেই স্বর্গে যাওয়ার পথ রয়েছে। উত্তরাখণ্ডের এই মানা গ্রাম সরকারিভাবে উত্তরাখণ্ডের ‘ভারতের শেষ গ্রাম’ হিসেবে স্বীকৃত।
ভারতের এই শেষ গ্রামটি বদ্রীনাথ থেকে ৩ কিলোমিটার উচ্চতায় অবস্থিত। এই গ্রামটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯,০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। এই গ্রামটি ভারত ও তিব্বতের সীমান্তে অবস্থিত। যদিও কিছুকাল আগে পর্যন্ত এই গ্রামের কথা কেউ জানত না, কিন্তু যেহেতু এখানে পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে, তাই সারা বিশ্বের মানুষ এই গ্রামের সৌন্দর্য দেখতে আসেন। এই গ্রামটি তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যও জনপ্রিয়। এই গ্রামে রান্দপা বর্ণের মানুষের বসবাস।
কথিত আছে যে ভারতের শেষ গ্রাম মানাতে মহাভারতের চিহ্ন দেখা যায়। স্থানীয় মানুষেরা বিশ্বাস করেন যে পাণ্ডবরা স্বর্গ যাত্রার সময় এই মানা গ্রাম অতিক্রম করেছিলেন। এই গ্রামে ব্যাস এবং গণেশের মতো দিব্য গুহা রয়েছে। বেদ ব্যাস বেদ গুফায় চারটি বেদ সংকলন করেছিলেন এবং এখানেই প্রথম মহাভারত বর্ণনা করা হয়েছিল। এই গুহায় বেদ ব্যাসকে নিবেদিত একটি ছোট মন্দিরও রয়েছে। কথিত আছে এই মন্দিরটি পাঁচ হাজার বছরের পুরনো। গণেশ গুহাটি ব্যাস গুহা থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত, যার সম্পর্কে বলা হয় যে ভগবান গণেশ এখানে বসে মহাকাব্য মহাভারত রচনা করেছিলেন।
উত্তরাখণ্ডের প্রতিটি শৈলশহরই পর্যটনের দিক থেকে বিস্ময়কর বলে বিবেচিত হয়। এই গ্রামে আপনি ট্রেকিং, হাইকিংয়ের মত অ্যাডভেঞ্চার মূলক কাজ করতে পারবেন। এছাড়া এখানে রয়েছে জলপ্রপাত, রহস্যময় সরস্বতী নদী। আপনি যদি সাইটসিনের আশায় থাকেন, সেখানেও আপনাকে নিরাশ করবেন না মানা।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৬৫৯৭ উচ্চতায় অবস্থিত নীলকন্ঠ শৃঙ্গ, এই গ্রামের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ কেন্দ্র। নীলকন্ঠ শৃঙ্গ ‘গড়োয়ালের রানি’ নামেও পরিচিত। এই তুষারাবৃত শৃঙ্গটি বদ্রীনাথ মন্দিরের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়েছে। আপনি চাইলে ট্রেক করে পৌঁছাতে পারেন নীলকন্ঠে।
তপ্ত কুন্ড একটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিদর্শন এই জলপ্রপাত। এই জলপ্রপাতের ওপর স্থানীয়দের একটি ধর্মীয় বিশ্বাস আছে। কথিত আছে ভগবান বদ্রীনাথ এখানে তপস্যা করেছিলেন। তপ্ত কুন্ড জলপ্রপাতের অনেক ঔষধি গুণও পাওয়া গেছে, সেই সঙ্গে এই জলে ডুব দিলে নাকি চর্মরোগ নিরাময় হয় বলেও মানুষ বিশ্বাস করেন।
কথিত আছে, পাণ্ডবরা এই ভীমপুল হয়ে অলকাপুরী গিয়েছিলেন। তাই একে স্বর্গের পথ বলা হয়। এই সেতু সম্পর্কে আরও বলা হয় যে পাণ্ডবরা যখন এখান দিয়ে গিয়েছিল, তখন দুটি পাহাড়ের মধ্যে একটি পরিখা ছিল। যা অতিক্রম করা যায়নি। এমন অবস্থায় ভীম একটি পাথর তুলে নিক্ষেপ করে ছিলেন, যা সেতুতে পরিণত হয়েছিল। ধর্মীয় বিশ্বাসের পাশাপাশি এই গ্রাম হিমালয়ের এক অন্য সৌন্দর্য তুলে ধরে মানুষের সামনে।
আরও পড়ুন: একটা বা দুটো নয়, বর্তমানে ৬টি জায়গা ‘সুইজারল্যান্ড অফ ইন্ডিয়া’ নামে জনপ্রিয়