পুজো শেষের সঙ্গে সঙ্গে শীতের একটা হালকা আমেজ তৈরি হয় শহরে। তারপর কখন ডিসেম্বর চলে আসে বোঝাও যায় না। আর দিন ছোট হতে হতে শুরু হয়ে যায় শীতের ছুটি। একটা লম্বা ছুটি পাওয়া যায় বলা চলে। নিত্য দিনের বাদুর ঝোলা বাস, অফিস, কোলাহল থেকে মনে হয় একটু দূরে ঘুরে আসলে কেমন হয়। কিন্তু শীতের আমেজে মন চায় উৎসবে মেতে উঠতে। তাই এখনও যদি প্ল্যান না করে থাকেন তাহলে শীতের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন কচ্ছের রণ থেকে।
গুজরাটের কচ্ছের রণ শুধুমাত্র পশ্চিম ভারতের কাছে নয়, বরং দেশের একটি প্রধান পর্যটন কেন্দ্র। একই জেলার মধ্যে যদি মরুভূমি, সমুদ্র সৈকত, ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদ, সুস্বাদু খাবার, ধর্মীয় মন্দির, বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এই সব কিছু খুঁজে থাকেন তাহলে কচ্ছের রণের থেকে সুন্দর জায়গা এই ভূ-ভারতে নেই। আর এই জায়গাকে যদি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলোয় উপভোগ করতে চান তাহলে শীতের থেকে ভাল সময় আর কিছু হয় না।
রণ শব্দের অর্থ হিন্দিতে মরুভূমি এবং এই জায়গাটি একটি ভিন্ন ধরণের মরুভূমি। দুটি ভাগে বিভক্ত, কচ্ছের রণ লবণাক্ত জলাভূমি। সাদা লবণের এই মরুভূমি চাঁদের আলোয় আরও ঝলমলিয়ে ওঠে। গ্রেট রণ ৭,৮৫০ বর্গ কিলোমিটার এবং লিটল রণ ৪,৯৫০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। আর এর আরেকটি সীমানায় রয়েছে পাকিস্তান।
শীতের সময় এই জায়গার জলবায়ুও থাকে মনোরম। তাপমাত্রা থাকে ১২ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত, যার ফলে এই সুন্দর জায়গা অন্বেষণ করতেও খুব একটা অসুবিধা হয় না। উপরন্ত শীতকালে কচ্ছে রণ বেড়াতে যাওয়ার আরেকটি অন্যতম প্রধান কারণ হল কচ্ছের রণ উৎসব। রণ উৎসব গুজরাট তথা ভারতের এমন একটি উৎসব যেখানে গেলে মন ভরে যাবে আপনারও।
রঙ, সংস্কৃতি এবং দর্শনীয় টপোগ্রাফির মেলবন্ধন দেখা যায় এই মরুভূমিতে। তার ওপর যদি রণ উৎসবে সামিল হতে চান, তাহলে আপনি এর মধ্যে খুঁজে পাবেন গুজরাটের সঙ্গীত, নৃত্য, খাদ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদির একটি যুগলবন্দী। এই বছর কচ্ছের রণ উৎসব শুরু হতে চলেছে ১ লা নভেম্বর থেকে আর শেষ হবে ২০ শে ফেব্রুয়ারি। সুতরাং এর মধ্যে আপনি অনাহাসে ঘুরে আসতে পারেন কচ্ছের রণ থেকে।
শুধু সংস্কৃতি নয়, এই কচ্ছের রণে এমন অনেক দর্শনীয় জায়গা রয়েছে যা আপনার মনে গেঁথে থাকবে সারা জীবন। রয়েছে কচ্ছ বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। এখানে আপনি ফ্লেমিংগো, পেলিকানস এবং কমন ক্রেনগুলি এই শীতের মরসুমে দেখতে পাবেন। আর যদি পুরো কচ্ছের রণের দৃশ্য অন্বেষণ করতে চান তাহলে সোজা চলে যেতে পারেন ব্ল্যাক হিল বা কালা ডুঙ্গার ভিউ পয়েন্টে। ৪৫০০ বছর পূর্বে সিন্ধু সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের সাক্ষী হতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন ধোলাভিরা থেকে।
আরও পড়ুন: ছুটি কাটিয়ে আসুন পশ্চিমঘাট পর্বতমালার দ্য প্রিন্সেস অফ হিলে!