বিশ্বের যেসব জায়গায় মাত্রাতিরিক্ত গরম, অর্থাৎ উষ্ণ স্থান, সেইসব এলাকা নিয়ে বরাবরই আলোচনা হয়ে এসেছে। কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেক জায়গাও আছে যেখানকার শীতল আবহাওয়া একপ্রকার অসহনীয়। ঠাণ্ডার কামড়ে জনজাতির সংখ্যা তলানিতে এসে ঠেকেছে। পুরু বরফের আস্তরণেই বছরের বেশিরভাগ সময় আবৃত থাকে এই সমস্ত অঞ্চল। চলুন একনজরে দেখে নেওয়া বিশ্বের সেই সমস্ত হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার শহর।
Oymyakon- রাশিয়ার এই এলাকা মেরু অঞ্চল থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিশ্বের শীতলতম স্থান বলা হয় এই অঞ্চলকে। মাত্র ৫০০ লোকের জনবসতি রয়েছে রাশিয়ার এই এলাকায়। জানা গিয়েছে, Oymyakon- এর গ্রামবাসীরা জানুয়ারি মাসে গড় তাপমাত্রা পৌঁছে যায় মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৯৩৩ সালে Oymyakon এই অঞ্চলে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা মাইনাস ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল।
Snag- কানাডার স্ন্যাগ অঞ্চল বিশ্বের শীতলতম শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। Yukon টেরিটরিতে রয়েছে এই Snag গ্রাম। ১৯৪৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এখানে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা মাইনাস ৬৩ ডিগ্রি রেকর্ড করা হয়েছিল। সেই বছর রেকর্ড হওয়া এই তাপমাত্রা উত্তর আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে কম তাপমাত্রা।
Utqiagvik- আলাস্কার এই এলাকার নাম আগে ছিল Barrow। উত্তরের প্রান্তদেশে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই শহর আর্কটিক সার্কেল থেকে সামান্য দূরেই অবস্থিত। নভেম্বরের ১৮ অথবা ১৯ তারিখ নাগাদ এখানে সূর্য অস্ত যায়। এরপর ৬৫ দিন পর্যন্ত আর সূর্যোদয় হয় না। প্রতি বছর হিমাঙ্কের উপর তাপমাত্রা থাকে ১২০ দিন। অর্থাৎ ৩৬৫ দিনের মধ্যে মাত্র ১২০ দিন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের উপর থাকে। বাকি দিনগুলো Utqiagvik- এই এলাকার তাপমাত্রা জিরো ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে থাকে।
Nursultan- কাজাখস্তানের এই রাজধানী শহরে শীতকালে তাপমাত্রা মাইনাস ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। এখানকার জনসংখ্যা আট লক্ষের কাছাকাছি। এখানকার Astana হল বিশ্বের দ্বিতীয় শীতলতম শহর। এর আগে শীর্ষে রয়েছে মঙ্গোলিয়ার Ulaanbaatar।
Vostok- দক্ষিণ মেরু থেকে এক হাজার কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই Vostok এলাকা। অ্যান্টার্কটিকার এই এলাকা বিশ্বের অন্যতম আইসোলেটেড রিসার্চ স্টেশন। সামান্য কয়েকজন বৈজ্ঞানিক এবং গবেষকই এখানে বসবাস করেন। Vostok বিশ্বের অন্যতম অবসবাসযোগ্য এবং শুষ্ক অঞ্চল। একই সঙ্গে মারাত্মক ঠাণ্ডাও রয়েছে এখানে। মাইনাস ১২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমে যায় পারদ। বিভিন্ন সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে এখানকার রিসার্চ স্টেশনে মে থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত কোনও সূর্যালোক পৌঁছয় না। তবে যখন সূর্যোদয় হয় তখন আবার দিনের প্রায় ২৩ ঘণ্টা সূর্যালোক থাকে এই অঞ্চল। আবহাওয়ার এমন চরাই উতরাই এই অঞ্চলকে আরও বেশি করে মানবজাতির অবসবাসযোগ্য করে তুলেছে।
আরও পড়ুন- Taj Mahal: অপেক্ষা শেষ! চাঁদের আলোয় আবার ঝলমলিয়ে উঠবে তাজমহল