India’s Paatal Lok: ভারতের এই ‘আজব’ গ্রামে করোনা এখনও ছুঁতেই পারেনি!
গভীর জঙ্গলের ভুরিয়া প্রজাতির আদিবাসীদের সঙ্গে বর্হিবিশ্বের তেমন কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা পছন্দও করেন না। নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে পছন্দ করেন।
প্রাচীন ভারতীয় উপাখ্যান অনুযায়ী, পাতাললোক আদতে আন্ডারওয়ার্ল্ডকেই বোঝায়। তবে মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়ারা জেলার নাম শোনেননি অনেকেই। প্রকৃতপক্ষে ভারতে এমন ১২টি গ্রাম রয়েছে যেগুলি মাটির প্রায় তিন হাজার মিটার নীচে অবস্থিত। এতটাই গভীরে যে সেখানে সূর্যের রশ্মিও পৌঁছায় না।
এই ১২টি গ্রাম যেখানে অবস্থিত,তা পাতাললোক নামেই পরিচিত। রেকর্ড বলছে, এই স্থানটি আদতে ঔষধির ভান্ডার। ভাবছেন এই গ্রামে কেউ বাস করে কিনা! অবশ্যই করে। এখানে ভূরিয়া উপজাতির লোকেরা বাস করে। গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই কুঁড়েঘরে থাকেন।
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এই পবিত্র স্থান থেকেই দেবী সীতা ধরিত্রীর বুকে অদৃশ্য হয়েছিলেন। ধরিত্রী দুভাগ যখন হয়েছিল, সেই জায়গায় একটি গভীর গর্ত তৈরি হয়। আবার অন্য এক মত অনুযায়ী, ভগবান রাম ও লক্ষ্মণকে অসুর অহিরাবণের শৃঙ্খল থেকে বাঁচাতে রামায়ণের অপরাজেয় নায়ক হনুমান এই অঞ্চলের মধ্য দিয়ে ভূগর্ভে প্রবেশ করেছিলেন।
পাতাললোক সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্য
এই জায়গাটি ঘন সবুজ পাতায় ঘেরা, রয়েছে কিছু ঔষধি গাছ, ভেষজ উদ্ভিদের আবাসস্থল। রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখির স্বর্গরাজ্য। মধ্যপ্রদেশের এই জায়গাটি ১২০০-১৫০০ ফুটের মতো উচ্চতায় অবস্থিত। এমন স্বর্গীয় স্থানের খোঁজ বহুজনই জানেন না। বার্ড আই ভিউ দিয়ে দেখলে গোটা এলাকাটি ঘোড়ার নালের আকারে দেখা যায়।
দুধী নদী এখানকার প্রধান ও একমাত্র জলের উত্সকেন্দ্র হিসেবে মনে করা হয়। মজার ব্যাপার হল, এই উপত্যকার গভীরে খুব বেশি সূর্যের রশ্মি পৌঁছাতে পারে না একেবারেই। দুপুরের চড়া রোদেও পুরো এলাকা অন্ধকারে ঢেকে থাকে।
এখানকার মানুষজন কেমন?
এই প্রশ্ন অনেকেরই মনে হতে পারে। গভীর জঙ্গলের ভুরিয়া প্রজাতির আদিবাসীদের সঙ্গে বর্হিবিশ্বের তেমন কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা পছন্দও করেন না। নিজেদের কাজ নিজেরাই করতে পছন্দ করেন। নিজেরাই খাদ্য তৈরি করেন। তবে গ্রাম থেকে বেরিয়ে তাঁদের শুধুমাত্র নুন বা লবণ কেনার জন্য বের হতে হয়। তবে সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই গ্রামের সঙ্গে অনেক আগে বর্হিবিশ্বের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না, কিন্তু সম্প্রতি গ্রামগুলির মধ্যে দিয়ে বেশ কয়েকটি সড়ক নির্মাণ করা গিয়েছে। এই সড়কগুলির সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার সংযুক্ত করা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত এই গ্রামগুলি মাটির প্রায় তিন হাজার ফুট নীচে অবস্থিত। মাত্র কয়েক বছর আগেই বেশ কিছু গ্রামবাসী গভীর উপত্যকা থেকে বেরিয়ে এসে পাহাড়ের উপরের অংশে বসতি স্থাপন করেছেন। সারা বিশ্বজুড়ে করোনার আতঙ্ক ছড়ালেও এই পাতাললোকে মারণ ভাইরাস প্রবেশ করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: Bhubaneswar: অল্প বাজেটের মধ্যেই শীতের ছুটি কাটাবেন কোথায়? জেনে নিন এই রাজ্যের অফবিট জায়গাগুলি