ইনসুলিন হল অগ্ন্যাশয়ে উৎপাদিত একটি হরমোন, রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে করে। কিন্তু ডায়াবেটিস হল এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা এই ইনসুলিন হরমোনের কার্যকারিতার উপর প্রভাব ফেলে। যার জেরে শরীরে বাড়তে থাকে সুগার লেভেল।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে তার বেশি কিছু লক্ষণ শরীরে প্রকাশ পায়। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে চোখের উপর প্রভাব পড়ে। দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হতে থাকে। এতে রেটিনার রক্তনালীগুলির ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অবস্থাকে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি বলে।
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ডায়াবেটিসের লক্ষণ। রক্ত রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ অতিরিক্ত বেড়ে যায়, তখন কিডনির উপর চাপ পড়ে। কিডনিকে ফিল্টার করার জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হয়। এতে প্রস্রাবের পরিমাণও বেড়ে যায়।
ত্বকেও উপরও ডায়াবেটিসের প্রভাব লক্ষ করা যায়। সুগার বেড়ে গেলে ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি বাড়ে। এর জেরে মুখ ও ত্বক শুষ্ক হতে থাকে। শরীর প্রস্রাবের মাধ্যমে অতিরিক্ত গ্লুকোজ অপসারণে চেষ্টা করে। এর জন্য ডিহাইড্রেশনের সমস্যা দেখা দেয়।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে আপনি সারাক্ষণ তৃষ্ণার্ত বোধ করতে পারেন। এমনকী খিদের পরিমাণও বেড়ে যেতে পারে। এর কারণ হল শরীরের কোষগুলি পর্যাপ্ত গ্লুকোজ গ্রহণ করছে না, যার ফলে মস্তিষ্ক খিদে বা জল তেষ্টার সংকেত বেশি করে পাচ্ছে। এই অবস্থায় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আপনার সমস্যা আরও বাড়তে পারে।
শরীরে কোনও অংশে কেটে গেলে বা কোনও ক্ষত তৈরি হলে সেটা যদি দ্রুত নিরাময় না হয়, তাহলে বুঝবেন রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়েছে। অতিরিক্ত গ্লুকোজ রক্তনালী এবং স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে, যা রক্ত প্রবাহকে ব্যাহত করে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার শরীরের ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। এর জন্য কোনও ঘা বা ক্ষত দ্রুত সারে না।
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে এটা স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে। এর জেরে হাত, পা বা শরীরের অন্যান্য অংশে অসাড়তা, ঝিনঝিন দেখা দেয়। এই অবস্থাকে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি বলা হয়। এই ধরনের লক্ষণ দেখলে অবহেলা করবেন না।
রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে ক্লান্তি তৈরি হয়। কারণ শরীরে তখন কম শক্তি উৎপন্ন হয়। তার সঙ্গে ঘুমের সমস্যা দেখা দেয়। অনিদ্রা ডায়াবেটিসের রোগীদের মধ্যে খুব সাধারণ সমস্যা। এর জেরে মেজাজেও পরিবর্তন আসে, খিটখিটে ভাব বাড়ে। কিন্তু এই লক্ষণকে অবহেলা করলেই বিপদ।