
অন্য ভাষার কাজ আজকের দিনে সুবিখ্যাত হচ্ছে অন্য দেশে। মানি হাইস্ট-এর কথা আমরা সবাইই জানি। স্প্যানিশ অরিজিন থেকে তৈরি হওয়া এই সিরিজ যখন প্রথম নেটফ্লিক্সে আসে, কেউ ভাবতেও পারেনি হয়তো যে এই সিরিজ ভারত থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলবে। 'প্যারাসাইট'-এর সময় থেকেই একটা বড় অংশের দর্শক অন্য দেশের, অন্য ভাষার কাজকে সাদরে গ্রহণ করে নেওয়া শুরু করেছে।

নেটফ্লিক্সের জন্য স্কুইড গেম ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেই বিষয়ে অনেক ধরনের অ্যানালাইসিস আছে। মোদ্দা কথা হল, মানি হাইস্টের পর পরই আরও একটা ফরেন সিরিজ এরকম সাড়া ফেলে দেবে এটা নেটফ্লিক্সের বাড়তি পাওনা। আপাতত ফ্রেঞ্চ কাজ 'লুপিন' বেশ কিছুটা সাড়া ফেললেও, সবাইকে ছাপিয়ে নিজের জায়গা করে নিয়েছিল স্কুইড গেমস।

স্কুইড গেমসের এই অবিসংবাদিত সাফল্যের জন্য মূলত এর টানটান চিত্রনাট্যই দায়ী। এছাড়াও, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ এই সিরিজের সঙ্গে নিজের একটা কানেকশন খুঁজে পাওয়াও এর সাফল্যের অন্যতম একটা কারণ।

এখানে দেখানো নানান ধরনের সংঘর্ষের কথা মানুষকে আকর্ষণ করেছে। প্রতিদিনের ধার নেওয়া, সেই ধার শোধ করতে না পারা আর তারপর এমন একটা সুযোগ আসে যেখানে কিছু খেলা জিতলেই সারা জীবনে আর টাকার চিন্তা করতে হবে না। বোঝাই যাচ্ছে, এই সিরিজ পছন্দ করার কারণটা খুব সহজ।

এমনকি স্কুইড গেমসকে ঘিরে ঘটেছে একের পর এক ঘটনা। হোয়াং ডং হুকের তৈরি ওয়েব সিরিজ়টির নাম ‘স্কুইড গেম’। বেঁচে থাকা ও অস্তিত্ব রক্ষাকেই করা হয়েছে সিরিজ়ের মূল উপজীব্য। কিন্তু এ হেন ওয়েব সিরিজ়কে নিষিদ্ধ করেছে উত্তর কোরিয়া। সিরিজ়কে ঘিরে এক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে সম্প্রতি।

উত্তর কোরিয়ার বাসিন্দা সেই ব্যক্তি ‘স্কুইড গেম’-এর কপি বিলি করছিলেন। তারপর কিম জং হু-এর সরকার হুকুম দেয় প্রাণে মেরে ফেলতে হবে সেই ব্যক্তিকে। আদেশ অনুযায়ী কাজও হয়েছে। ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড় করানো হয় সেই ব্যক্তিকে। তারপর অনেকটা সিরিজের চিত্রনাট্যের মতোই গুলি করে মেরে ফেলা হয় তাঁকে।

এমনকি এই সিরিজকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে মোবাইল গেমও। ভারতীয় মোবাইল গেমিং দুনিয়ায় প্রবেশ করেছে নেটফ্লিক্সের হিট সিরিজ স্কুইড গেম। পুনে-ভিত্তিক স্টুডিও সুপারগেমিংয়ের একটি অ্যাকশন মাল্টিপ্লেয়ার গেম সিলি ওয়ার্ল্ডের হাত ধরেই এমনটা সম্ভব হতে চলেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার থ্রিলার থেকে অনুপ্রাণিত একটি নতুন মোড এই গেমে রাখা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে।

হ্যালোউইনের সময় স্কুলে স্কুইড গেমসের কস্টিউমকেও ব্যান করা হয়েছিল। বিচিত্র পোশাকের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল নিউইয়র্কের তিনটি স্কুল। হ্যালোউইনের আগে স্কুইড গেমের পোশাক যাতে হিংসাত্মক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত না হয়ে পড়ে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছিল।

এই সিরিজকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল একাধিক ফ্যান থিওরিও। পরিচালক এই ফ্যান থিওরিগুলোর কথা শুনে বলেন, ‘এই দর্শকরা অবশ্যই আমার চেয়ে অনেক বেশি সৃজনশীল।’ তিনি তখন যোগ করেন যে সেলসম্যান স্কুইড গেমের একজন প্রাক্তন স্টাফ ছাড়া আর কিছুই না।