
আর মাত্র কয়েকঘণ্টা। তারপরই শুরু হবে দীপাবলি উতর্সবে। কালীপুজোর ঢাকে পড়বে কাঠি। আলোর রোশনাইয়ে চারিদিক আলোকিত হয়ে উঠবে। সারা বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। দীপাবলির আগের দিন নরক চতুর্দশী বা ভূত চতুর্দশী পালিত হয়। এদিনও আলো জ্বালিয়ে সবাই দীপাবলির জন্য অপেক্ষা করে।

ক্যালেব্ডার অনুসারে, এ বছর দীপাবলি পালিত হবে আগামী ১২ নভেম্বর। দীপাবলির আগে নরক চতুর্দশী উৎসব হয়। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এদিনে ভগবান বিষ্ণুর অবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুর অসুরকে বধ করেছিলেন। সঙ্গে প্রায় ১৬ হাজার সখীকে তার বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেছিলেন।

নরক চতুর্দশীতে, মহিলারা যমদেবের উদ্দেশ্যে সন্ধ্যের সময় বাড়িতে প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন। অনেকে এদিন উপবাস পালন করে থাকেন। সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য মঙ্গলকামনা করে থাকেন। অনেক মহিলা নরক চতুর্দশীর দিন উপবাস করেন এবং তাদের বাড়ির সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করেন। শুধু তাই নয়, এদিন বেশ কিছু প্রতিকারও পালন করে থাকেন।

অনেকে নরক চতুর্দশীকে রূপ চৌদাসও বলে থাকেন। বিশ্বাস করা হয়, এদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর মুখমণ্ডল ও শরীরের অন্যান্য অংশে হলুদ লাগানো উচিত। এরপর জলের মধ্যে নিমপাতা মিশিয়ে স্নান করা উচিত। তাতে সুখ-সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।

নরক চতুর্দশীর সন্ধ্যের সময় মহিলারা যমের নামে ঘরে প্রদীপ জ্বালিয়ে থাকেন। রাতে যমের নামে একটি প্রদীপ দক্ষিণ দিকে জ্বালানো উচিত। নরক চতুর্দশীতে যমরাজকে প্রদীপ দান করলে অকাল মৃত্যুর ভীতি কেটে যায়। যখন প্রদীপের শিখা বাড়বে, তখন তা ঘরে নিয়ে এসে ঠাকুর ঘরে রেখে দিন।

নরক চতুর্দশীর দিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘর পরিষ্কার করা উচিত। ঘর থেকে সমস্ত ভাঙা ও পুরনো আসবাবপত্রও জিনিসপত্র অবিলম্বে বের করে দেওয়া উচিত। ঘরের প্রতিটি কোণগুলি ভালো করে পরিষ্কার করুন। দীপাবলির দিনে দেবী লক্ষ্মী তুষ্ট হয়ে ঘরে প্রবেশ করে থাকেন।

নরক চতুর্দশীর দিন প্রত্যেকের ঘরে অন্তত ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো উচিত। তা শুভ বলে মনে করা হয়। সেই সঙ্গে ঘরের দরজায় চৌদ্দটি প্রদীপ জ্বালিয়ে দক্ষিণ দিকে মুখ করে রাখতে হবে। আসলে নরক চৌদাস নামক এই চৌদ্দটি প্রদীপের প্রভাবে সংসারের সমস্ত সমস্যা দূর হয়।

নরক চতুর্দশীকে অনেকে কালী চৌদাসও বলে থাকে। এই দিনে দেবী কালিকাও আরাধনা করা হয়। দেবী কালীর আরাধনা করলে দুঃখকষ্ট দূর হয়, মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এ দিনে দেবী কালীর বিশেষ পুজো করে থাকেন অনেকে। তাতে অশুভ শক্তি কেটে শুভ শক্তি গৃহে ভরে ওঠে।