সাধারণত শ্রাবণের অষ্টম দিনে আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে কৃষ্ণের জন্মতিথি হিসেবে পালন করা হয়। ভারতে অনেক সুন্দর ও জনপ্রিয় কৃষ্ণ মন্দির রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গুজরাটের দ্বারকাধীশ মন্দির, ইসকন বৃন্দাবন, ইসকন বেঙ্গালুরু এবং ইসকন দিল্লি। এছাড়াও, শ্রীকৃষ্ণকে উৎসর্গ করা বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মন্দিরটিও মথুরায় তৈরি করা হচ্ছে। যেটি ২০২২ সালে নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে জানা গিয়েছে।
বৃন্দাবন, উত্তরপ্রদেশ
ভারতের পৌরাণিক ইতিহাস অনুযায়ী, বৃন্দাবনকে একটি পবিত্র স্থান হিসেবে মনে করা হয়, যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর শৈশবের একটি বড় অংশ কাটিয়েছিলেন। আশ্চর্যের কিছু নেই, এই পবিত্র শহরে কৃষ্ণেরর জন্মদিন অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালিত হয়। ইস্কন মন্দির, রংনাথজী মন্দির, বাঁকে বিহারী মন্দির এবং রাধারমন মন্দিরের মতো বিশিষ্ট মন্দিরগুলিতে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে। বৃন্দাবনের মধুবনকে সেই স্থান বলে মনে করা হয় যেখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাস লীলা করেছিলেন। কৃষ্ণের জন্মস্থান, মথুরা এই উপলক্ষে আলো ও ফুল দিয় সাজানো হয়। এই সময়ে, কৃষ্ণের দোলনার দোলগুলি বেশ সুন্দর ফুলের সাজানো হয়।
মহারাষ্ট্র
অনেক জনপ্রিয় সিনেমার দৃশ্য এবং গানে দহি হান্ডি পর্ব দেখেছি। ছোট ছেলেরা, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতীক হিসেবে একটি মানব পিরামিড তৈরি করে। সবার শীর্ষে থাকা ব্যক্তি বা ছোট ছেলে সেই দই ভরতি হাঁড়ি ফাটানোর জন্য পিরামিডের উপরে উঠে যায়। এই অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার সময় তারা ‘গোবিন্দ, গোবিন্দ’ জপ করেন।
দ্বারকা, গুজরাট
দ্বারকাকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মূল রাজ্য হিসেবে ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। দ্বারকাধীশ মন্দিরে তাঁকে উৎসর্গ করা হয়েছে। জন্মাষ্টমীর দিনে, মন্দির প্রাঙ্গণ সুন্দর আলো এবং ফুল দিয়ে সাজানো হয়। দ্বারকাধীশ মন্দির কৃষ্ণকে তার শিশু রূপকে কীর্তন ও ভজন দিয়ে পূজা করে। মন্দির কর্তৃপক্ষ স্বর্ণ, হীরা এবং অন্যান্য মূল্যবান গহনা দিয়ে ভগবান দ্বারকাধীশকে অলঙ্কৃত করেন।
মণিপুর
ইম্ফলে হিন্দুরা শ্রী শ্রী গোবিন্দজী মন্দির, ইম্ফাল, ইসকন-এ প্রার্থনা করে উৎসব উদযাপন করেন এবং প্রভুর প্রতি উৎসর্গীকৃত মনিপুরী অনুষ্ঠানগুলি এই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ
ভারতের পূর্বাঞ্চলে, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণপ্রেমীরা উপবাস রেখে গোপাল বা শিশু কৃষ্ণকে মিষ্টি দিয়ে জন্মাষ্টমী পুজো উদযাপন করে। ভাগবত পুরাণ দশম অধ্যায় বলা হয়েছে, কৃষ্ণের জীবনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি অংশ। প্রসাদ হিসেবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ৪০০টিরও বেশি ভোগ দেওয়া হয়। জন্মাষ্টমীর সময়, বাংলার ঘরে ঘরে একটি অত্যন্ত সুস্বাদু মিষ্টি খাবার তৈরি হয়। তাল দিয়ে তৈরি তালের বড়া এই সময় অত্যন্ত লোভনীয় একটি খাবার।