আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিকে শারদীয়া পূর্ণিমা বা কোজাগরী পূর্ণিমা (Kojagari Purnima) বলা হয়। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর পর ফের একবার ঘরে লক্ষ্মীর (Goddess Lakshmi) আগমনের জন্য অপেক্ষা। আশ্বিনের শেষ পূর্ণিমায় এই লক্ষ্মীপুজোর (Lakshmi Puja) আয়োজন এখন বাংলার ঘরে ঘরে। রবিবার ভোর ৩.৪২ মিনিট থেকেই শুরু হয়ে এদিনের বিশেষ তিথি। মনে করা হয়, এই পূর্ণিমার রাতে, চাঁদের আলো পায়েস (Rice Pudding) রাখলে তা শুভ হয়। হিন্দুদের বিশ্বাস, রাতের চাঁদের উজ্জ্বল রশ্মি থেকে অমৃত বর্ষণ হয়, তাই পায়েস বা ক্ষীর তৈরি করে চাঁদের স্নিদ্ধ উজ্জ্বল আলোর নিচে কয়েক ঘণ্টা রেখে দিয়ে তারপর গ্রহণ করা উচিত। অন্যদিকে এদিন রাতে শ্রীকৃষ্ণ মহারাস করেছিলেন বলে মনে করা হয়। কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে শ্রীকৃষ্ণ সুরেলা বাঁশি বাজিয়ে গোপীদের কাছ থেকে অমৃত পান করেছিলেন। সেই বিশ্বাস থেকেই এদিনের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য রয়েছে। জ্যোতিষমতে, এই বিশেষ রাতে চাঁদ পৃথিবীকে শান্ত করতে, পুষ্টিকর শক্তি ও শান্তির অমৃত বর্ষণ করে।
শারদীয়া পূর্ণিমার রাতে কী কী করবেন
– দশমীর পর থেকেই চাঁদের আলো দেখা স্বাস্থ্য়কর বলে মনে করা হয়। শুধু স্বাস্থ্য নয়, চাঁদের আলো প্রতিদিন দেখলে সারা বছর সুস্থ ও সুখী থাকবেন।
– দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে, এদিন চাঁদের আলো দেখা ভাল। প্রতিরাতে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য তাকানোর অভ্যেস তৈরি করলে আরও ভাল।
– এই রাতে সূঁচে সুতো পরানোর অভ্যেস করলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়।
– শারদীয়া পূর্ণিমায় গর্ভবতীদের নাভিতে চাঁদের আলো পড়লে গর্ভস্থ সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে বলে ধারনা করা হয়।
কোন সময়ে পায়েস খাবেন
কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে চাঁগের আলোর নিচে রাখা পায়েস খেলে বহু রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে বিশ্বাস করেন হিন্দুরা। বিশেষ করে চর্মরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এই ক্ষীর বা পায়েসকে অমৃত বলে বিবেচনা করা হয়। এর সঙ্গে এই ক্ষীর আবার দৃষ্টিশক্তিও বৃদ্ধি করে। কথা বলার সমস্যা রয়েছে যাঁদের,তাঁরাও খেতেপারেন। মহালক্ষ্মীর আশীর্বাদ বজায় থাকে সারা জীবন।
একটি স্টিল বা পিতলের পাত্রে পায়েস রান্না করে চাঁদের আলোর নিচে রাখলে তা অমৃত হয়ে ওঠে। রাত ৮টায় সুতির পাতলা কাপড় গিয়ে ঢেকে রাখুন, রাত ১১টার দিকে লক্ষ্মীদেবীকে নিবেদন করে প্রসাদ হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। তাই এদিন রাতের খাবার অল্প করে খেতে পারেন অথবা যখন খান, তার অনেক আগে ডিনার সেরে ফেলতে পারেন।