Sandhi Puja 2025: দুর্গা নয় সন্ধিপুজোর সময় দেবীর কোন বিশেষ রূপে আরাধনা করা হয়? কী তাঁর মাহাত্ম্য?
Durga Puja Rituals: বিশেষ এই তিথির গুরুত্ব অপরিসীম। সন্ধিক্ষণে বিশেষ রূপের এই পুজো পরিচিত সন্ধিপুজো নামে। কিন্তু এই সময়ে কোন বিশেষ রূপে পূজিত দেবী দুর্গা? কী সেই রূপের মাহাত্ম্য, জানেন?

অষ্টমী-নবমী তিথির সন্ধিক্ষণে ৪৮ মিনিট ধরে বিশেষ রূপে পূজিত হন দেবী দুর্গা। দেবীকে এই সময় অর্পণ করা হয় ১০৮ পদ্ম। জ্বালানো হয় ১০৮ প্রদীপ। এই বিশেষ মুহূর্তে চারিপাশ যেন পরিণত হয় এক মায়াবি পরিবেশে। কথিত অষ্টমী এবং নবমীর সন্ধিক্ষণে মহিষাসুরকে ত্রিশুল বিদ্ধ করেছিলেন মা দুর্গা। এই সময়ে দশরথ পুত্র রামের হাতে বধ হয়েছিলেন লঙ্কেশ দশানন রাবণ। তাই বিশেষ এই তিথিরে গুরুত্ব অপরিসীম। সন্ধিক্ষণে বিশেষ রূপের এই পুজো পরিচিত সন্ধিপুজো নামে। কিন্তু এই সময়ে কোন বিশেষ রূপে পূজিত দেবী দুর্গা? কী সেই রূপের মাহাত্ম্য, জানেন?
শাস্ত্র মেনেই সন্ধিপুজোর সময় পূজিত হন দেবীর চামুণ্ডা রূপ। চামুণ্ডা আসলে মহাশক্তির ভীষণ ও ভয়াল প্রকাশ, যিনি অসুর নিধনের জন্য রুদ্ররূপ ধারণ করেন।
পুরাণে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সহচর দুই অসুর চণ্ড ও মুণ্ডকে বিনাশ করার জন্য দেবী এই বিশেষ রূপ ধারণ করেছিলেন। তিনি তখন অগ্নিশিখার মতো দীপ্ত, তেজস্বিনী ও অপ্রতিরোধ্য শক্তির প্রতীক হয়ে ওঠেন। চণ্ড-মুণ্ড বধের মাধ্যমে তিনি পৃথিবী থেকে অশুভ শক্তিকে দমন করেন এবং ধর্মের প্রতিষ্ঠা করেন। দেবীর ত্রিনয়ন থেকে প্রকট দেবী চামুণ্ডা।
শ্রীশ্রীচণ্ডীতে দেবীর ভয়ংকর রূপের বর্ণনা করে বলা হয়েছে,
“বিচিত্রখট্বাঙ্গধরা নরমালাবিভূষণা। দ্বীপিচর্মপরিধানা শুষ্কমাংসাতিভৈরবা।। অতিবিস্তারবদনা জিহ্বাললনভীষণা। নিমগ্নারক্তনয়না নাদাপূরিতদিঙ্মুখা।।”
দেবীর দেহ শুষ্ক, মাংসহীন। দেবী তলোয়ার, মুগুর ও মায়াপাশে সজ্জিত। করোটিতে রক্তনয়ন। বীভৎস ভাবে জিভ বের করে মুখব্যাদান করে থাকেন তিনি। পুরাণ মতে, যুদ্ধের সময় রক্তবীজ অসুরের সমস্ত রক্ত পান করেছিলেন তিনি। বলা হয়, এই সময় দেবীর মধ্যে সমস্ত মায়া-মমতার অন্ত হয়। তখন তিনি ভীষণ প্রলয়কারিণী। অসুর সংহারে মত্ত। এজন্য সন্ধিপুজোর সময় বাইরের কোনও ব্যক্তিকে দেবীর চোখের সামনে রাখাও নিষিদ্ধ।
বাস্তেব, এটি অশুভ শক্তির ওপর শুভ শক্তির চূড়ান্ত জয়ের প্রতীক। মানুষের অন্তরে যে ভয়, সন্দেহ ও নীচ প্রবৃত্তি থাকে, তার বিনাশকারীর প্রতীক এই শক্তিরূপ।
অতএব, সন্ধিপুজোর সময় দেবী চামুণ্ডার আরাধনা মানে শুধু অসুরবিনাশী শক্তিকে স্মরণ করা নয়, বরং জীবনের অন্ধকারকে দূর করে আলোর পথের প্রতি অঙ্গীকারও প্রকাশ করা।
