Annakoot Puja 2021: ঐতিহ্যবাহী অন্নকূট উত্‍সবে কটি পদ নৈবেদ্য হিসেবে রাখা হয়?

অন্নকূট পূজা হল গোবর্ধন পূজার আরেকটি নাম, যা দীপাবলি উৎসবের চতুর্থ দিনে পড়ে এবং আজ পালিত হচ্ছে।

Annakoot Puja 2021: ঐতিহ্যবাহী অন্নকূট উত্‍সবে কটি পদ নৈবেদ্য হিসেবে রাখা হয়?
দীপাবলি উৎসবের চতুর্থ দিনে পড়ে এবং আজ পালিত হচ্ছে
Follow Us:
| Updated on: Nov 05, 2021 | 6:56 PM

শ্রীমদ্ভগবত গীতার গোপন শ্রেষ্ঠ বাণী ‘সর্ব ধর্মান পরিত্যাজ মা মে কং স্মরণং ভজ।’ এ কথার আলোকে শরতের ঠিক মাঝামাঝি কার্তিক মাস, এ সময় ব্রজবাসীরা এক বিশেষ অনুষ্ঠানের অয়োজন করে। যা গোবর্ধন পূজা ও অন্নকূট মহোৎসব নামে খ্যাত। এবছর, ৫ নভেম্বর হল গোবর্ধন পূজা বা অন্নকুট মহোৎসব।

শ্রীমদ্ভগবত গীতার দশম স্কন্ধের নবম ও দশম অধ্যায়ে লীলা পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত বশ্যতা স্বীকার স্বরূপ দাস বন্ধন লীলা বর্ণিত হয়েছে। যা আসল পুরাণ শ্রীমদ্ভগবতে বিধৃত লীলাদির প্রভূত রস আস্বাদন করেছেন বৈষ্ণব আচার্যগণ। লীলাপুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ভৌম লীলায় অনেক চমকপ্রদ লীলা প্রদর্শন করেন। অন্নকূট পূজা হল গোবর্ধন পূজার আরেকটি নাম, যা দীপাবলি উৎসবের চতুর্থ দিনে পড়ে এবং আজ পালিত হচ্ছে।

অন্নকূট মানে খাবারের পাহাড়, যেখানে ৫৬রকমের নিরামিষ খাবার প্রস্তুত করা হয় এবং নিয়ম মেনে শ্রীকৃষ্ণ এবং অন্যান্য দেবতাদের স্তরে স্তরে সাজিয়ে নিবেদন করা হয়। সেই সব নৈবেদ্যতে থাকে হরেক রকমের সুস্বাদু মিষ্টি, শাক-সবজি, ডাল, ভাজা সুস্বাদু খাবার। এছাড়া রান্না করা ডালও করা হয়। স্বামীনারায়ণ শিখরবদ্ধ মন্দিরে, সাধুরা সকালে অন্নকূটের আয়োজন শুরু করে এবং দুপুরের আগে শেষ করে।

বৈশ্য গোপ জাতি। কৃষি এবং গো-পালন আমাদের জীবিকা। গো-পালনের জন্য আমাদের ঘাসের প্রয়োজন। চাষের জন্য বৃষ্টি চাই। আর ইন্দ্র হচ্ছে বৃষ্টির দেবতা। তাই আমরা দেবতা ইন্দ্ররাজের পূজা করি।” শ্রীল জীব গোস্বামী তার গোপাল চম্পু গ্রন্থে নন্দ মহারাজের এমনটাই বক্তব্য।

অন্নকূট পুজোর তারিখ ও শুভ মুহূর্ত

তারিখ- ৫ নভেম্বর, শুক্রবার

তিথির সূচনা- ৫ নভেম্বর, ২.৪৪ মিনিটে শুরু হয়েছে এই বিশেষ পুজোর তিথি,

তিথির সমাপ্ত- ৫ নভেম্বর, ১১টা ১৪ মিনিটে তিথি শেষ হবে।

পৌরাণিক কাহিনি

শ্রীল জীব গোস্বামী তার গোপাল চম্পু গ্রন্থে নন্দ মহারাজের বক্তব্য হচ্ছে, ‘বৈশ্য গোপ জাতি। কৃষি এবং গো-পালন আমাদের জীবিকা। গো-পালনের জন্য আমাদের ঘাসের প্রয়োজন। চাষের জন্য বৃষ্টি চাই। আর ইন্দ্র হচ্ছে বৃষ্টির দেবতা। তাই আমরা ইন্দ্ররাজের পূজা করি।” তখন শ্রীকৃষ্ণ বল্লেন, “বাবা, সমুদ্রের মাঝেও বৃষ্টি হয়। সেখানে কেউ ইন্দ্র পূজা করেন না। আমাদের জীবিকা যে গো-পালন, গাভী বর্ধনের জন্য আমরা গোবর্ধনের কাছে ঋণী। ইন্দ্রের কাছে নয়। চলো আমরা গোবর্ধনের পূজা করি।”  এরপর থেকে ইন্দ্ররাজ কুপিত হয়ে প্রবল বর্ষণ শুরু করলেন। ব্রজবাসীদের রক্ষায় শ্রীকৃষ্ণ গিরিধারীরূপে গোবর্দ্ধন শূন্যে ধারণ করলেন। অহংকারী ইন্দ্ররাজ লজ্জিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণ পদে আত্মনিবেদন করলেন। পাশাপাশি ব্রজবাসীরা মহারাজ নন্দ-সহ গোবর্দ্ধন পূজার আয়োজন করেন। সেই পূজার উপাচার অন্নের পাহাড়ের রূপ ধারণ করে। অন্নের পাহাড়টি গোবর্দ্ধনকে নিবেদন করা হয়। উপস্থিত সবাই দেখল এক দিকে সাত বছর বয়সী ছোট কৃষ্ণ দাঁড়িয়ে, অপরদিকে এক বিশাল শ্রীকৃষ্ণ অন্ন ভোজন করছেন। এই অনুষ্ঠান থেকেই গোবর্দ্ধন পূজা ও অন্নকূট মহোৎসবের সূচনা।

গুরুত্ব ও উদযাপন

হিন্দু ভক্তরা এই দিনটিকে তাঁদের সন্তানদের কাছে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ প্রভাবিত করেন। শুভ দিনটি তাঁদের বাড়ির প্রবেশদ্বারে প্রদীপ ও রঙ্গোলি দিয়ে সাজিয়ে উত্‍সব পালন করেন।

আরও পড়ুন: Kali Pujo 2021: মহানগরের এই ৬ বিখ্যাত কালীমন্দিরে কী কী ভোগ দেওয়া হয়, জানেন?