আমস্টারডাম: বাঙালির সাধের দুর্গাপুজো। এ তো আর শুধু পুজো নয়, উৎসব। ধর্মীয় আচার-উপাচার যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে এক বিশাল সামাজিক দিক। বিশ্বের যে যেখানেই থাকুক, পুজোর সময় একবার যেন বাড়ি ফেরাটা মাস্ট। কিন্তু যাঁদের কাজের চাপে বাড়ি ফেরা হয় না? তাঁরাও নিজেদের মতো বন্দোবস্ত ঠিক করে নেন। এই যেমন আমস্টারডাম। নেদারল্যান্ডসের একটি শহর। প্রচুর প্রবাসী বাঙালি রয়েছেন সেখানে, যাঁরা পুজোর সময় কাজের চাপে ফিরতে পারেন না। শারদীয়ার আনন্দে মেতেছেন তাঁরাও। আমস্টারডামের আনন্দধারা। এই বছর সেখানকার পুজো ষষ্ঠ বর্ষে পড়ল। পুরোদস্তুর বাঙালিয়ানা। দেখে মনেই হবে না এ কোনও বিদেশ বিভূঁই। কলকাতা বা শহরতলির পাড়ার কোনও পুজোর থেকে খুব বেশি ফারাক পাবেন না এখানে।
কুমোরটুলি থেকে দেবীর প্রতিমা যায় নেদারল্যান্ডসে। বাংলার প্রাণের পুজো দুর্গোৎসবের ছোঁয়া পৌঁছে যায় বিদেশের মাটিতেও। সপ্তমীর দিন থেকেই পুজোর উন্মাদনা শুরু হয়ে গিয়েছে আমস্টারডামের আনন্দধারায়। আশপাশের যত প্রবাসী বাঙালি রয়েছেন, সবাইকে এই ক’টা দিন দেখা যাবে আনন্দধারায়। সকলে মিলে হাত মিলিয়ে এই মহা আয়োজন করেছেন। শুধু প্রবাসী বাঙালিরাই নন, আনন্দের উৎসবে বাঙালি-অবাঙালি, ভারতীয়-অভারতীয় নির্বিশেষে সকলে সামিল হয়েছেন।
‘আনন্দধারা’-র পুজোর এবারের প্রধান আকর্ষণ ‘থিমের মণ্ডপ সজ্জা’। ভাবছেন, এও আবার কীভাবে হয়? কলকাতা, বা নিদেনপক্ষে দিল্লিতে হয়ত হতে পারে শারদোৎসবের থিম পুজো। কিন্তু দেশের মাটি পেরিয়ে বিদেশেও থিম পুজোর চমক। আনন্দধারায় এবারের পুজোর থিম ‘এক টুকরো কলকাতা’। রয়েছে ঐতিহ্যবাহী হাওড়া ব্রিজ এবং সাবেক কলকাতার এক অপরূপ পটচিত্র। তাই দিয়েই সাজিয়ে তোলা হয়েছে আনন্দধারার পুজো মণ্ডপ। প্রসঙ্গত দেবীর এবার গজে আগমন আর নৌকায় গমন। দেবীর সেই আসা-যাওয়ার খানিক ঝলকও দেখতে পাওয়া দেখা গিয়েছে ‘আনন্দধারা’র পুজোর থিমে। পুষ্পাঞ্জলি থেকে শুরু করে সবাই মিলে আড্ডা, খাওয়া দাওয়া… সব মিলিয়ে বাংলায় না থাকলেও বাঙালিয়ানা কিন্তু এখানে ভরপুর রয়েছে।