Ambubachi 2022: অবাক কাণ্ড! অম্বুবাচীর সময় তারাপীঠ-দক্ষিণেশ্বর মন্দির খোলা থাকে, কারণটা জানুন

Sati Pith Temple: আসামের কামাক্ষ্যা ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম। সতীর দেহচ্ছেদের সময় দেবীর যোনি কামরূপের নীল পর্বতে পড়েছিল। তাই কামাক্ষ্যা ‘যোনি পীঠ’ নামেও প্রসিদ্ধ।

Ambubachi 2022: অবাক কাণ্ড! অম্বুবাচীর সময় তারাপীঠ-দক্ষিণেশ্বর মন্দির খোলা থাকে, কারণটা জানুন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 8:58 PM

সৌর আষাঢ় মাসে মিথুন রাশিতে সূর্য যখন আর্দ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদে প্রবেশ করেন তখন থেকে তিন দিনব্যাপী প্রায় বিশ দন্ডকাল সময় অম্বুবাচী (Ambubachi 2022) পালিত হয়। এই সময় পৃথিবী বা মা বসুন্ধরা ঋতুমতী হন। পুরাণ মতে, ভূ দেবী হলেন কাশ্যপ প্রজাপতির কন্যা। রামায়ণে তিনিই সীতার জন্মদাত্রী। আবার অন্য একটি মত হল, দ্বাপর যুগে ভূ দেবী কৃষ্ণমহিষী সত্যভামা রূপে জন্ম নিয়েছিলেন। বর্ষার সূচনায় অম্বুবাচীতে রজ:স্বলা হন দেবী। লোককথা অনুসারে, ঋতুমতী নারী যেমন সন্তানপ্রসব করতে পারে, তেমনই পৃথিবী মা ঋতুমতী হওয়ার জন্যই প্রকৃতিতে হয় নতুন প্রাণের সঞ্চার। কৃষিভিত্তিক ভারতীয় সভ্যতায় তাই অম্বুবাচীর দিনগুলি পালিত হয় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে, নিষ্ঠার সঙ্গে।

শাস্ত্রানুসারে কৃষিভিত্তিক দেশ ভারতে অম্বুবাচী কালে বীজ বপন ও হাল ধরার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সাবকাশ শুভকর্ম বর্জনীয়। কিন্তু নিরবকাশ কর্ম ও নিত্য কর্মের ওপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। বিবাহ, উপনয়ন, গৃহপ্রবেশ, ভূমি ক্রয়, গৃহ-বাহনাদি ক্রয়, প্রতিষ্ঠাকর্ম প্রভৃতি অন্য অবকাশে বা দিনান্তরে করা যায় বলে এই সাবকাশ কর্মগুলি অম্বুবাচী কালে নিষিদ্ধ। পূজার সময় কোনও মন্ত্র পাঠ করবেন না, কেবল ধূপ-দীপ দেখিয়ে প্রণাম করুন। যাঁরা আদি শক্তির বিভিন্ন রূপ পুজো করেন, যেমন মা কালী, দেবী দুর্গা, দেবী জগদ্ধাত্রী, মা বিপত্তারিণী,মা শীতলা, দেবী চণ্ডীর মূর্তি বা পট পূজা করেন, তাঁরা এই সময়ে মূর্তি বা পট লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখবেন।

প্রসঙ্গত, অম্বুবাচী চলাকালীন মন্ত্রোচ্চারণ ছাড়া কেবলমাত্র ধূপ-প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা করা, মন্দিরে প্রবেশ ও দর্শন বন্ধ রাখা, বিগ্রহ স্পর্শ না করা, কিংবা গৃহ দেবতার নিত্যসেবা বাদ দেওয়া, বা মন্দির ও গৃহে কোনও দেবী মূর্তি বা পট থাকলে সেগুলি লাল কাপড়ে ঢেকে রাখা— এই সব আরোপিত নিয়মের কোনও প্রমাণ শাস্ত্রে বা তন্ত্রে উপলব্ধ নয়। সতীপীঠ কালীঘাট, নলহাটি, বক্রেশ্বর কিংবা মহাপীঠ তারাপীঠ বা দক্ষিনেশ্বরের মা ভবতারিণী-র মন্দিরে এই নিয়মগুলির কোনওটাই মানা হয় না।

আসামের কামাক্ষ্যা ৫১টি সতীপীঠের অন্যতম। সতীর দেহচ্ছেদের সময় দেবীর যোনি কামরূপের নীল পর্বতে পড়েছিল। তাই কামাক্ষ্যা ‘যোনি পীঠ’ নামেও প্রসিদ্ধ। কামাক্ষ্যা মন্দিরে সাড়ম্বরে অম্বুবাচী উৎসব পালিত হয়। এই সময় কামাক্ষ্যার মন্দির বন্ধ থাকার রীতি আছে। তবে অম্বুবাচীর চতুর্থ দিন ভক্তকূলের জন্য মন্দিরের দ্বার খুলে দেওয়া হয়। কামাক্ষ্যার মন্দিরে দেবী স্বয়ং ঋতুমতী হন বলে লোকবিশ্বাস। তাই এই তিন দিন নিভৃতে রাখা হয় তাঁকে। অলৌকিক ভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের জল লাল হয়ে ওঠে। অম্বুবাচীর প্রবৃত্তি কালে মন্দিরের গর্ভগৃহে পূজারীরা যোনি কুন্ড সাদা কাপড়ে আচ্ছাদিত করে দেন। অম্বুবাচী যোগে দেবীর অঙ্গ আচ্ছাদিত বস্ত্র রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। এই রক্তবস্ত্র শরীরে ধারণ করলে অভীষ্ট সিদ্ধ হয়।

কুব্জিকা তন্ত্রে বলা হয়েছে-এই রক্তবস্ত্র পরিধান করে পূজা জপ করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এই বছর বিশেষ পূজা, অভিষেকের পর ২৫ ও ২৬ শে জুন কামাক্ষ্যা দেবীর দর্শন পাবেন দেশ বিদেশ থেকে আসা দর্শনার্থীরা।