Ambubachi 2022: চলছে অম্বুবাচী, রবিবার পর্যন্ত দেবীমূর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার নিয়ম! কিন্তু কেন?

Hindu Ritual: জ্যোতিষ শাস্ত্রে বলা হয়েছে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করেন, তার পরবর্তী সেই বারের সেই কালে অম্বুবাচী হয়। অর্থাৎ, পৃথিবী এই সময়ে ঋতুমতী হন।

Ambubachi 2022: চলছে অম্বুবাচী, রবিবার পর্যন্ত দেবীমূর্তি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখার নিয়ম! কিন্তু কেন?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 24, 2022 | 8:00 PM

আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পাদ অতীত হলে চতুর্থ পাদে আর্দ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদের মধ‍্যে ধরিত্রীদেবী ঋতুমতী হন । এই সময়কে অম্বুবাচী (Ambubachi 2022) বলে । আবার ঠিক এই একই সময়ে অসমের (Assam) নীলাচল পাহাড়ে যোনিরূপা মহামায়া কামাখ‍‍্যাও (Kamakhya Devi) ঋতুমতী হন। এই সময় তিনদিন দেবী মন্দির বন্ধ থাকে। তিন দিন গত হলে দেবী মন্দির খোলা হয় এবং দেবীর স্নান ও পূজার্চনা শেষে ভক্তদের দেবী দর্শন করতে দেওয়া হয়। প্রবাদে রয়েছে ‘কিসের বার কিসের তিথি, আষাঢ়ের সাত তারিখ অম্বুবাচী।’ এদিন থেকেই হয় অম্বুবাচী শুরু। জ্যোতিষ শাস্ত্রে (Astrology) বলা হয়েছে, সূর্য যে বারের যে সময়ে মিথুন রাশিতে গমন করেন, তার পরবর্তী সেই বারের সেই কালে অম্বুবাচী হয়। অর্থাৎ, পৃথিবী এই সময়ে ঋতুমতী হন।

হিন্দু শাস্ত্রে ধরিত্রীকে মা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জননী মাতা, দেশ মাতা, ধরিত্রী মাতা।অম্বুবাচীর তিন দিন পর্যন্ত কোনো ধরনের মাংগলিক কার্য করা যায়না। চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে কোনো বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ থাকে ও এই সময়ে মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে। যাঁরা আদি শক্তির বিভিন্ন রূপ পুজো করেন, যেমন মা কালী, দেবী দুর্গা, দেবী জগদ্ধাত্রী, মা বিপত্তারিণী,মা শীতলা, দেবী চণ্ডীর মূর্তি বা পট পূজা করেন, তাঁরা এই সময়ে মূর্তি বা পট লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখেন। আমাদের প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী ঋতুকালে মেয়েরা অশুচি থাকে এবং সে সময় তারা মাঙ্গলিক কর্ম থেকেও বিরত থাকেন ।

একইভাবে পৃথিবী এই অম্বুবাচী বা অমাবতির তিন দিন অশুচি থাকে বলে চিন্তা করা হয়ে থাকে । এ সময় যারা ব্রহ্মচর্য পালন করেন যেমন : ব্রহ্মচারী, সাধু,সন্ন্যাসী, যোগীপুরুষ, বিধবা মহিলা (সেই সব বিধবা মহিলা যারা ব্রহ্মচর্য পালন করেন) আমিষ গ্রহণ করেন না, নিরামিষ খান তারা এরা কেউই রজঃস্বলা পৃথিবীর উপর আগুনের রান্না কিছু খান না । বিভিন্ন ফলমূল খেয়ে থাকেন এই তিন দিন । প্রতি বছর আষাঢ় এর ৭ তারিখে এটা শুরু হয় এবং ১০ তারিখে শেষ হয় । এটা আসলে হিন্দুদের একটা লৌকিক আচার। অর্থাৎ ২২ জুন হতে ২৫ জুন পর্যন্ত অম্বুবাচী ব্রতটি বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ পালন করে থাকলেও অসমের কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচীকে কেন্দ্র করে বিশাল উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে।

শস্য শ্যামল উর্বর পৃথিবীর জন্য সন্তানগণ ধরণী মায়ের নিকট এই তিনদিন প্রার্থনা করেন। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার বুক থেকে উৎপন্ন শস্য খাদ্য হিসাবের গ্রহণ করে দুধে ভাতে বেচে থাকতে পারে। ঐতিহাসিক দিক থেকে দেখতে গেলে এই অম্বুবাচীর সঙ্গে কৃষিকাজের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভাবে জড়িত রয়েছে । শাস্ত্রানুসারে কৃষিভিত্তিক দেশ ভারতে অম্বুবাচী কালে বীজ বপন ও হাল ধরার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সাবকাশ শুভকর্ম বর্জনীয়। কিন্তু নিরবকাশ কর্ম ও নিত্য কর্মের ওপর কোনও বিধিনিষেধ নেই। বিবাহ, উপনয়ন, গৃহপ্রবেশ, ভূমি ক্রয়, গৃহ-বাহনাদি ক্রয়, প্রতিষ্ঠাকর্ম প্রভৃতি অন্য অবকাশে বা দিনান্তরে করা যায় বলে এই সাবকাশ কর্মগুলি অম্বুবাচী কালে নিষিদ্ধ। পূজার সময় কোনও মন্ত্র পাঠ করবেন না, কেবল ধূপ-দীপ দেখিয়ে প্রণাম করুন। যাঁরা আদি শক্তির বিভিন্ন রূপ পুজো করেন, যেমন মা কালী, দেবী দুর্গা, দেবী জগদ্ধাত্রী, মা বিপত্তারিণী,মা শীতলা, দেবী চণ্ডীর মূর্তি বা পট পূজা করেন, তাঁরা এই সময়ে মূর্তি বা পট লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা  নিয়ম।