Kamakhya Temple: টানা ২ বছর পর খুলছে অসমের বিখ্যাত এই মন্দির! ভিড় এড়াতে কুরিয়ার ব্যবস্থা চালু কর্তৃপক্ষের

Assam: মন্দিরের পুরোহিতদের উদ্বেগ, বিপুল সংখ্যক ভক্তদের ভিড়ের কারণে ফের করোনার ঊর্দ্ধমুখী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কোভিডের সমস্ত সতর্তকা অবলম্বন করা হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।

Kamakhya Temple: টানা ২ বছর পর খুলছে অসমের বিখ্যাত এই মন্দির! ভিড় এড়াতে কুরিয়ার ব্যবস্থা চালু কর্তৃপক্ষের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 17, 2022 | 10:13 AM

আগামী ২২ জুন ধুমধাম করে পালিত হবে অম্বুবাচী উত্‍সব (Ambubachi Festival)। আর এই উত্‍সবকে ঘিরে এখন থেকেই সাজ সাজ রব অসমের বিখ্যাত কামাখ্যা মন্দিরে (Kamakhya Temple)। ভারতের ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম এই কামাখ্যা মন্দিরটি অসমের নীলাচল পাহাড়ের পশ্চিমে গুয়াহাটি শহরে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত। মন্দিরের গর্ভগৃহটি রাজধানী শহর তেজপুরের সূর্যমন্দিরের আদলে গঠিত । এই গর্ভগৃহের শিখরটি বাংলার চারচালা আঙ্গিকে নির্মিত । গর্ভগৃহে স্থাপিত আছেন দেবী। এখানে দেবীর কোনও মূর্তি নেই, যোনী আকারে শিলারূপী এখানে দেবীকে উপাসনা করা হয় এবং শিলা মূর্তি সারাবছরই জলমগ্ন থাকে। কোভিড অতিমারির কারণে শেষ ২ বছর জনসাধারণের জন্য মন্দিরের দরজা বন্ধ ছিল। তবে এবছর করোনায় আক্রাম্ত সংখ্যা বাড়লেও, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তাই রাজ্য থেকে করোনার বিধি-নিষেধের উপরও শিথিলতা জারি করা হয়েছে। আগামী ২২জুন থেকে ২৬জুন পর্যন্ত পালিত হবে অম্বুবাচী মেলা।

মন্দির কর্তৃপক্ষের আশা, করোনার কারণে টানা ২ বছর বন্ধ থাকার পর ফের একবার মন্দির খোলায় এ বছর প্রচুর ভক্তের সমাগম হতে পারে। অন্যদিকে, মন্দিরের পুরোহিতদের উদ্বেগ, বিপুল সংখ্যক ভক্তদের ভিড়ের কারণে ফের করোনার ঊর্দ্ধমুখী হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কোভিডের সমস্ত সতর্তকা অবলম্বন করা হলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তাই এবছর মেগা আবাসন শিবিরের ব্যবস্থার পরিবর্তে ভক্তরা যাতে নিজেদের বাড়িতে থেকেই প্রার্থনা করতে পারেন, তার জন্যবিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সঙ্গে কুরিয়রের মাধ্যমে বাড়িতে প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে এই মন্দিরে প্রা ৩৫ লক্ষ ভক্তের সমাগম হয়েছিল। যা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রেকর্ড তৈরি করে।

মন্দিরের ইতিহাস

নবম শতাব্দীর মলেচ্ছা রাজত্বের রাজা ভানামালা ভার্মাদেবের লিপি থেকে প্রথম এই কামাখ্যা মন্দিরের পরিচয় পাওয়া যায় । প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতেও অষ্টম থেকে নবম শতাব্দীর মধ্যেই কামাখ্যা মন্দিরের নির্মাণ কার্য শুরু করেন মলেচ্ছা রাজা । পরবর্তীকালে কামরূপের পাল রাজারা যেহেতু তন্ত্রসাধনায় বিশ্বাসী ছিলেন, তাই সেই সময় থেকেই কামাখ্যা মন্দির তন্ত্রসাধনার মূল পীঠস্থানের পরিচিতি পায় ।

মধ্যযুগীয় সময়ে এই মন্দির ধ্বংসের বহু কাহিনির উল্লেখ পাওয়া যায় । উদাহরণস্বরূপ, ১৫৬৫ সালে বাংলার সুলতান সুলায়মান খান-এর মুসলিম জেনারেল কালাপাহাড় এই মন্দির আক্রমণ করেন। তবে কালাপাহাড়ের আক্রমণ সম্পর্কে বেশ কিছু সংশয় রয়েছে । অনেকের মতে ১৪৯৮ সালের কামাতা রাজত্বের রাজা হুসেন শাহ এই মন্দির আক্রমণ এবং ধ্বংস করেন ।

পরবর্তী কালে কোচ রাজবংশের নির্মাতা রাজা বিশ্ব সিংহ প্রথম এই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান । এই বংশের রাজা নর নারায়ণ ১৫৬৫ সালে কামাখ্যা মন্দিরের পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু করেন । এরপর আবারও বিভিন্ন সাম্রাজের আগ্রাসনে মন্দিরের শিল্পরীতি ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। ১৯২৫ সালে অহম সম্রাট কোচ শিল্পরীতিকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য মন্দিরপুনঃগঠনে দৃষ্টিপাত করেন। এছাড়াও সেই সময় শাক্ত ধর্মমত প্রচারের জন্য ও এই মন্দির পুনঃ গঠন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল।

কিছু ইতিহাসবিদদের মতে এই মন্দিরে আদিবাসী দেবী কমেইখার বহু সূত্র মিলেছে । প্রধানত খাসি এবং গারো জনজাতির আরাধ্য দেবী হলেন এই কমেইখা। কালিকা পুরাণ এবং যোগীনি তন্ত্র নামক গ্রন্থেও দেবী কমেইখার কিরাটা সূত্রের খোঁজ পাওয়া যায় ।

কামাখ্যা দেবী মূলত তান্ত্রিক দেবী হিসেবে পরিচিত । যিনি সিদ্ধ কব্জিকা রূপ অর্থাৎ কালী এবং ত্রিপুরা সুন্দরী দেবীর সম্মিলিত দেবী হিসেবে আরাধনা করা হয় । কালিকা পুরাণ এ দেবী কামাখ্যা সম্পর্কে বর্ণিত আছে – ভগবান শিব এর তরুণী পত্নী কামাখ্যা দেবী সমস্ত ইচ্ছার পরিপূরক এবং তিনি একই সঙ্গে মানুষের মোক্ষ লাভ করান ।তন্ত্র মতে দেবী কামাখ্যা সৃষ্টির আধার হিসেবে ও পরিচিত ।