Puri Jagannath and Ekadashi: একাদশীতে ভাত খাওয়া নিষিদ্ধ! কিন্তু জগন্নাথ পুরীতে ঠিক উল্টো, ভাতের ভোগ খাওয়াই রীতি, কেন?
Puri Jagannath: এই প্রথা বা রীতি দেশের একটি মন্দিরে একাদশীর দিন ভাতের ভোগ খাওয়া চলে। পুরীর এই বিখ্যাত মন্দিরে ভাত খাওয়া প্রথা রয়েছে। হিন্দু ধর্ম মতে, একাদশীর দিনে উপবাস পালন করা মানেই ভগবান বিষ্ণুর একনিষ্ঠভাবে আরাধনা করা। রয়েছে বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম। এদিন অনেকেই ভাত না খাওয়ারও বিশ্বাস করেন। তাই পাতে ভাতের একটি কণা পড়া মানেই চরম শোরগোল পড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ঘরে ভাতের হাঁড়িও চড়াও ঘোর পাপকাজ বলে মনে করেন অনেকে।
আগেকার দিনে বিধবা দিদা-ঠাকুমাদের কাছে একাদশীর দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বের বলে মনে করতেন। একাদশীর দিন এগিয়ে এলেই ঘরের একটি শুদ্ধ জায়গায় ফল, মিষ্টি, খই, চিঁড়ে, দই রেখে দিতেন। একাদশী পালন করার সময় পাতে চালের একটি কণাও যেন না থাকে, সেদিকে ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। কারণ চালের কণা খাওয়া মানেই জীবনে ঘটে যেতে পারে মহাপাপ। তাই এদিন শুদ্ধ ও পবিত্র দিনে একাদশীর দিনে ব্রত পাঠ করে, উপবাস পালন করতেন, খেতেন শুধু ফল আর মিষ্টি।
হিন্দুধর্মে একাদশীর তিথির গুরুত্ব অপরিসীম। এদিন ব্রত-উপবাস পালন করে শুধু ফল ও আর মিষ্টি খাওয়াই রীতি। এদিন ভুলেও ভাতের কোনও পদ খাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু এই প্রথা বা রীতি দেশের একটি মন্দিরে একাদশীর দিন ভাতের ভোগ খাওয়া চলে। পুরীর এই বিখ্যাত মন্দিরে ভাত খাওয়া প্রথা রয়েছে। হিন্দু ধর্ম মতে, একাদশীর দিনে উপবাস পালন করা মানেই ভগবান বিষ্ণুর একনিষ্ঠভাবে আরাধনা করা। রয়েছে বেশ কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম। এদিন অনেকেই ভাত না খাওয়ারও বিশ্বাস করেন। তাই পাতে ভাতের একটি কণা পড়া মানেই চরম শোরগোল পড়ে যায়। শুধু তাই নয়, ঘরে ভাতের হাঁড়িও চড়াও ঘোর পাপকাজ বলে মনে করেন অনেকে।
কিন্তু পুরীর মন্দিরের এই ভাতের রহস্য একেবারেই আলাদা। একদিকে যখন একাদশীর দিনে ভাত-রান্না করা ও খাওয়া মন্দিরে তো বটেই, বাড়িতেও নিষিদ্ধ। ঠিক বিপরীতেই রয়েছে পুরীর জগন্নাথ মন্দির। একাদশীর দিন জগন্নাথদেবকে ভাতের ভোগ নিবেদন করাই রীতি। বিশিষ্টদের মতে, জগন্নাথ পুরীতে একাদশী উল্টো করে ঝুলছে। হিন্দুধর্ম মতে, একাদশীর তিথিতে ভাত খাওয়া হলে, পরের জন্মে হামাগুড়ি দেওয়া পোকার গর্ভ জন্ম নিতে হতে পারে। কিন্তু জগন্নাথ মন্দিরে এই রীতির বৈপরীত্য কেন? এর পেছনে রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনি।
এই খবরটিও পড়ুন
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, একদিন ব্রহ্মাদেব স্বয়ং জগন্নাথের মহাপ্রসাদ খাওয়ার ইচ্ছা নিয়ে জগন্নাথ পুরীতে পৌঁছেছিলেন কিন্তু ততক্ষণে মহাপ্রসাদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। মাত্র একটা পাতায় কয়েকটা ধান পড়েছিল। সেই ধান আবার একটি কুকুর চেটে খেয়ে নিচ্ছিল। এমন অবস্থায় ব্রহ্মাদেব ভক্তিতে এতটাই মগ্ন হয়েছিলেন যে ভগবান জগন্নাথের মহাপ্রসাদ খাওয়ার ইচ্ছায় তিনি সেই কুকুরের সঙ্গে বসে ভাত খেতে শুরু করেছিলেন। কাকতালীয়ভাবে সেদিনটি ছিল একাদশী।
ব্রহ্মার এমন ভক্তি দেখে স্বয়ং ভগবান জগন্নাথ আবির্ভূত হন ও ব্রহ্মাকে বিনা দ্বিধায় কুকুরের সঙ্গে তাঁর মহাপ্রসাদের ভাত খেতে দেখে বললেন, ‘আজ থেকে আমার মহাপ্রসাদে একাদশীর নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।’সেদিন থেকেই জগন্নাথ পুরীর একাদশী হোক বা অন্য যে কোনও তিথি পড়ুক না কেন, ভগবান জগন্নাথের মহাপ্রসাদে কোনও উপবাস বা তিথির প্রভাব পড়ে না। তাই জগন্নাথ পুরীতে উল্টো একাদশী উদযাপন করা হলে চালের ভোগই রান্না ও প্রসাদ নিবেদন করা হয়।