মায়েদের জন্য কি একটাই দিন? উত্তরটা হল না। মা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। ভাল থাকার ও ভাল রাখার কারণ। মা শব্দটিতে যেন এক গভীর মায়া-মমতা আর ভালবাসা জড়িয়ে আছে। তাঁদের অবদানের আত্মত্যাগ এবং তাঁদের সব কিছু স্বীকৃতির জন্য সারা বিশ্বেই এই দিনটাকে পালন করা হয়।
সকলের জীবনে প্রথম গাইড, দার্শনিক, পরামর্শদাতা এবং বন্ধু হয় মাI আমরা সকলেই চোখ বন্ধ করে যাঁর উপর ভরসা করতে পারি। যিনি কখনও আমাদের ইচ্ছেকে অস্বীকার করেন না। সেই নিঃশর্ত ভালবাসা এবং সৌন্দর্যের সম্পকর্কেই আমরা মা রূপে অভিহিত করি।
কথায় আছে, যেহেতু ঈশ্বর সর্বত্র উপস্থিত থাকতে পারেন না, তাই তিনি মায়েদের তৈরি করেছিলেন। পৃথিবীর সব কিছু বদলানো যায়। কিন্তু মায়ের ভালবাসা কখনও বদলাবার নয়। একটি শিশু তার সর্বস্ব দেখতে পায় তার মায়ের চোখে। মায়ের মতো অমন শক্তিশালী কেউ হয় না। যিনি নিজের সন্তানকে শত কষ্ট সত্ত্বেও আগলে রাখেন। আর ভালবাসেন নিজের চেয়েও বেশিI আকাশের মতো ধৈর্য ক্ষমতা থাকে মায়ের।
মা তার সন্তানকে সব সমস্যার সমাধান দেখান। প্রত্যেক শিশুকে চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সুন্দরভাবে লালন করে বড় করেনI পৃথিবীর সব মা নিঃস্বার্থভাবে প্রতিটি পরিবারের নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন। মা যেমন তাঁর সন্তানকে এই পৃথিবীর আলো দেখান, সন্তানের ভাল ছাড়া কখনোই খারাপ চান না, তেমনই একটি শিশু বিদ্যালয়ে ভর্তির পরে শিক্ষিকাকে সে প্রথমে তার মায়ের রূপেই পেতে চায়। সেই পথ ধরেই সমাজের কাছে উদাহরণ হিসাবে থেকে গিয়েছেন মৌমিতা মনিকা পাল।
মৌমিতা পেশায় শিক্ষিকা। সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে পড়ান তিনি। তাঁর কাছে শিক্ষক ও মায়ের ভূমিকা একই। মৌমিতা মনে করেন এক জন মা হিসাবে সে যেমন পরিবারের সব দায়িত্ব পালন করেন, তেমনই ঘরের বাইরে সে এক জন শিক্ষিকা হিসাবে প্রতিটি শিশুর মধ্যে ভালবাসার অনুভূতি ছড়িয়ে দেন। কারণ প্রতিটি শিশুকে সে যদি নিজের সন্তানের মত ভালবাসে তা হলে তাদের মনের বিকাশ ঘটাবে সুন্দর ভাবে।
এই প্রসঙ্গে মৌমিতা বলেন, “ছাত্র ছাত্রীদের আমি আপন করে তাদের সুবিধা-অসুবিধায় তাদের পাশে থাকি। তাদের মায়ের মতো দেখাশোনা করি। আমার কাছে সবাই প্রিয়।”
ক্লাসে মৌমিতার সব থেকে পছন্দের ছাত্র অঙ্কুশ ঘোষ। অঙ্কুষ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। অন্যান্য শিক্ষার্থীদের তুলনায় অঙ্কুষকে একটু বেশিই স্নেহ করেন মৌমিতা। তার পাশে থেকে সব সমস্যার সমাধান করে দেন তিনি। তার শিক্ষিকা হিসাবে তাকে সঠিক পথ দেখান মৌমিতা। মৌমিতা বলেন, “আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি অঙ্কুষ যাতে খুব ভাল থাকে। মায়ের মতো স্নেহ দিয়ে ওকে জীবনের পথে এগিয়ে দেবই। যাতে ও যে কোনও পরিস্থিতিতে নিজেকে একা না মনে করে। আমি সব সময় মায়ের মতো ওর পাশে রয়েছি।”
মৌমিতাকে নিয়ে যথেষ্ঠ আশাবাদী অঙ্কুরের মা পাপিয়া ঘোষও। তিনি বলেন, “পড়াশোনার কথা ভেবেই আমি আমার ছেলেকে সেন্ট ফ্রান্সিসে ভর্তি করেছিলাম। তার কারণ উন্নতমানের পড়াশোনা, এখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শেখানোর পদ্ধতি এবং বিদ্যালয়ের ভাল পরিবেশ। আমার ছেলের শ্রেণীর শিক্ষিকা হিসেবে মৌমিতা এক জন ভীষণ ভাল শিক্ষিকা।
আভিবাবকরাও বেশ ভরসা করেন মনিকাকে। কারণও পড়াশোনার বিষয়ে কোনও সমস্যা এলে মৌমিতা নির্দ্বিধায় সব রকম সহযোগিতা করেন। তাঁর স্নেহপরায়নতায় অপ্লুত ছাত্রছাত্রীরা।