Babar Azam: বিরাটের সঙ্গে তুলনাই কি বুমেরাং? নেতৃত্ব-ব্যাটিং, প্রশ্নের মুখে বাবর

Virat Kohli: এ বার বাবর আজমের পারফরম্যান্স স্ক্যানারে। ৬ ইনিংসে তাঁর অবদান মাত্র ৬৮ রান। নেতৃত্বের দিক থেকে আরও ডুবিয়েছেন বাবর। বিশ্বকাপের এক মাস আগে যা নিঃসন্দেহে চিন্তার। তাঁর নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Babar Azam: বিরাটের সঙ্গে তুলনাই কি বুমেরাং? নেতৃত্ব-ব্যাটিং, প্রশ্নের মুখে বাবর
Image Credit source: PTI
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 13, 2022 | 1:22 PM

দীপঙ্কর ঘোষাল

একটা সময় ছিল, কেউ ভালো ব্যাটিং করলেই সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে তুলনা করা হত। পরবর্তীতে সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে। একটু বিধ্বংসী কিংবা ডাকাবুকো ব্যাটিং করলেই ভিভ রিচার্ডস, বীরেন্দ্র সেওয়াগ। আর এখন, কয়েকটা ভালো ইনিংস খেললেই বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সঙ্গে তুলনা করা হয় তাঁকে। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমের (Babar Azam) ক্ষেত্রেই যেমন। বিরাট কোহলির সঙ্গে বাবর আজমের তুলনা এখন বিশ্ব ক্রিকেটে হট কেক। বিরাটের মতো বাবরকেও বিশ্বের অন্য়তম সেরা, কিংবদন্তি বলতে পিছপা হন না অনেকেই। বিশেষত, পাকিস্তান সংবাদমাধ্য়ম, তাদের প্রাক্তন ক্রিকেটারদের অনেকেই। হাতে গোনা কয়েকজন বিশ্বাস করেন, বাবর এখনও বাবরের সমতূল্য নন। এশিয়া কাপের আগেই পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আক্রমও এমন প্রশ্নের সামনে পড়েছিলেন। তিনি পরিষ্কার করে দেন, বিরাট কোহলি সর্বকালের অন্যতম সেরা। বাবর হয়তো কোনওদিন হতে পারেন। এখনই তাঁকে বিরাটের পর্যায়ে ফেলতে রাজি নন।

গত আড়াই বছর বিরাট কোহলির পারফরম্যান্স স্ক্যানারে ছিল। বিরাট কোহলি নিজের যে মান তৈরি করেছিলেন, শতরান ছাড়া সবই ব্য়র্থতা। ধারাবাহিক সমালোচনায় বিদ্ধ হয়েছিলেন ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি। তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্ন উঠতে শুরু করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে হারের পর। টি ২০ ফরম্যাটে নেতৃত্ব ছাড়েন, ওয়ান ডে থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয় এবং টেস্টে নিজেই ছাড়েন। তাঁকে দলে রাখা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। ইংল্যান্ড সফরের পর বিশ্রাম নিয়েছিলেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বিরাট কোহলি। এক মাস ব্যাটে হাত দেননি। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা হারিয়ে ফেলেছিলেন। মেন্টাল ট্রেনিং কোচ প্যাডি আপটন বিরাটের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করেন। তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এশিয়া কাপে। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩৫ রানের ইনিংস। হংকংয়ের বিরুদ্ধে অর্ধশতরান। ক্রমশ ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান। বিরাট আবারও চেনা মেজাজে। ২ টো অর্ধশতরান এবং একটি শতরান। এশিয়া কাপে পাঁচ ইনিংসে ২৭৬ রান।

এ বার বাবর আজমের পারফরম্যান্স স্ক্যানারে। ৬ ইনিংসে তাঁর অবদান মাত্র ৬৮ রান। নেতৃত্বের দিক থেকে আরও ডুবিয়েছেন বাবর। বিশ্বকাপের এক মাস আগে যা নিঃসন্দেহে চিন্তার। তাঁর নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। একাদশে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার বলতে বাবর, রিজওয়ান এবং ফখর জামান। খুশদিল, ইফতিকার, নওয়াজ বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানও নন আবার বোলারও না। দু-ক্ষেত্রেই কাজ চালানোর মতো। স্কোয়াডে হায়দার আলির মতো তরুণ ব্য়াটসম্যান থাকলেও তাঁকে খেলাননি বাবর। তাঁর মতো ব্য়াট হাতে ধারাবাহিক ব্যর্থ ফখর। মহম্মদ রিজওয়ান অ্য়াঙ্কর ইনিংস খেললেও তাঁর স্ট্রাইকরেট নিয়মিত প্রশ্ন তুলছে। বোলারদের ব্যবহার করা নিয়েও সমালোচিত বাবর। বিশেষত ফাইনালেই যেমন। প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে। সে সময় পার্টটাইম স্পিনার দিয়ে বোলিং করিয়ে গেলেন বাবর। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেনি শ্রীলঙ্কা। শেষ ১০ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান যোগ করে বড় স্কোর গড়ে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপেও তাঁর পরিকল্পনা কিংবা একাদশ বাছাই উন্নতি না হলে নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। তেমনই বিরাটের সঙ্গে বারবার তুলনায় আসাও হয়তো বাড়তি চাপ। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অর্ধশতরানের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন বিরাট। পাকিস্তানের এক সাংবাদিক তাঁকে বাবর নিয়ে প্রশ্ন করেন। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিরাট বুঝিয়ে দেন, এখনই তাঁর জুতোয় পা গলানোর মতো যোগ্যতা হয়নি বাবরের। বিরাটের মন্তব্য ছিল খানিকটা এরকম, ওর কেরিয়ার সবে শুরু হয়েছে, এখনও অনেক পথ পেরনো বাকি।

বিরাটের সঙ্গে বারবার তুলনায় টানাই কি বুমেরাং হয়ে দাঁড়াল বাবর আজমের জন্য? অস্বাভাবিক নয়।