তীব্র গতির হদিশ থাকে? নাহ ভাই, এত ঝড়ঝাপটার গল্পে নেই! ভাবনা, ভরসায় শুধু ছোবল আর ছোবল! ক্রিকেট এক অন্য ধারার খেলা। যে যত বেশি জানে, তত খোলে খেলা। গতি নেই যাঁর, সুইংয়ে মতি তাঁর। বিশ্বাসে যেমন মেলায় বস্তু, সুইংয়ে তেমন উইকেট! নতুন বল যখন হাতে, খাপ খোলে না প্রতিপক্ষ। ইন-আউট, ইন-আউট করতে উইকেট! স্লগেও কথা বলে পুরনো বল। কীভাবে পারেন এত কিছু? ওই যে বললাম, ক্রিকেটটা বোঝেন জলের মতো। সিক্স প্যাক লাগে না এ সবে। ফ্যামিলি প্যাক নিয়ে খেলতে পারেন মাইন্ড গেম।
ভুবনেশ্বর কুমার মানে তো সুইংয়ের সুলতান। ২০১২ থেকে ২০২২ সালের পরিসংখ্যান যদি দিই, তিন ফর্ম্যাটে ৩০০র কাছাকাছি উইকেট। আর শুধু আইপিএল বললে? ২০১১ সালে ডেবিউ। ১৭৬ ম্যাচ খেলে ১৮১ উইকেট। দু’বার ৫ উইকেট, দু’বার ৪ উইকেট। দু’বার পার্পল ক্যাপের মালিক। ৩৫ বছরের এ হেন বোলার আলোচনায় থাকবেন না, হয় নাকি!
প্রশ্ন হল, বেঙ্গালুরুতে কবে অভিষেক হবে? ২০১৪ সাল থেকে টানা ১০ বছর খেলেছেন হায়দরাবাদে। পুরনো টিম ছেড়ে এবার এসেছেন বিরাটের সংসারে। এই ভুবনেশ্বরকে কি চিপকে দেখা যাবে খেলতে? উত্তর- হ্যাঁ অথবা না। না কেন? ফিটনেস সমস্যা রয়েছে ভুবির। যে কারণে তাঁকে কেকেআরের বিরুদ্ধে খেলানো হয়নি। হ্যাঁ কেন? চিপকের মন্থর পিচ। চিপক মূলত স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। এই পিচ জোরে বোলারদের বদ্ধভূমি। তাও ভুবির সফল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। যদি সুইং আর স্লোয়ার কাজে লাগাতে পারেন। আরসিবি ব্যাটিং কোচ দীনেশ কার্তিক যা ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই ম্যাচেই দেখা যেতে পারে ভুবিকে।
টি-টোয়েন্টি এমন এক ফর্ম্যাট, অপ্রত্যাশিত কিছুর অপেক্ষা থাকে সব সময়। এমন খেলায় বৈচিত্র রাখতে হয়। কিন্তু ভেরিয়েশনের জন্য দরকার টাইমিং। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটুকু করলে তবেই না আসে সাফল্য। ভারতীয় দলে একসময় অপরিহার্য ছিলেন। তিন ফর্ম্যাটেই নিয়মিত খেলেছেন। সামি, বুমরারা নিয়ে নিয়েছেন সেই জায়গাটা। তবু তো থেমে থাকা যায় না। ভুবনেশ্বর কুমার বেঙ্গালুরু সফরটা অন্যভাবেই করতে চাইছেন। ফিটনেস দরকার, জানেন। যদি পেয়ে যান, টিমে ঢুকবেন। চিপকেই যদি সেটা হয়, বিরাট-ধোনির আলোয় নিজেকে চেনাতে চাইবেন আলাদা করে। যেভাবে এতগুলো আইপিএলে করে এসেছেন।
গত তিন বছরে খুব যে খারাপ পারফর্ম করেছেন, তা নয়। অধিনায়কত্বও করেছেন হায়দরাবাদে। তবু সেরা ছন্দে দেখা যায়নি। আরসিবির সংসারে পুরনো ঝলকটা দেখিয়ে যেতে চান ভুবি। হারিয়ে যেতে যেতে ফিরে আসার নতুন গল্প লিখে যাবেন হয়তো!