কলকাতা: গত শতাব্দীর নয়ের দশকের ক্রিকেট যেমন সচিন তেন্ডুলকর, স্টিভ ওয়া, রিকি পন্টিং, ব্রায়ান লারাদের, তেমনই সারের এক ক্রিকেটারেরও। যিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার দিন থেকেই বুঝিয়েছিলেন, এক প্রতিভার আগমন হয়েছে। দেশের হয়ে যতবার খেলতে নেমেছেন, ততবারই নিজেকে তুলে ধরেছেন। সেরাটা দিয়েছেন। চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসতেন। যে কারণে অ্যাসেজ সিরিজে ছিলেন অন্যতম সফল ক্রিকেটার। কে জানত, তারঁই জীবন থমকে যাবে হঠাৎ। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে চলে গেলেন গ্রাহাম থর্প (Graham Thorpe)। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড তাঁর প্রয়াণের খবর প্রকাশ করার পরই শোকে ডুবে গিয়েছে ক্রিকেটমহল। থর্প শুধু প্রতিভাবান ছিলেন না, ক্রিকেটটাকে উপভোগ করতেন বলে, ভক্তও ছিল বিপুল। তাঁরাই হয়তো নীরবে ফেলছেন চোখের জল।
দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলেছিলেন থর্প। ওপেনার ছিলেন। চার ও পাঁচ নম্বরেও ব্যাট করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সবচেয়ে বড় কথা হল, নয়ের দশকে ক্রিকেটের প্রিয় ছাত্রদের অন্যতম ছিলেন থর্প। টেস্টে তাঁর মোট রান ৬৭৪৪। পাশাপাশি ৮২টা ওয়ান ডে-ও খেলেছেন । ২৩৮০ রান করেছেন। ১৩ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি সারের হয়ে খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। ২১ হাজার ৯৩৭ করেছেন সারের হয়ে। মাত্র ৫৫ বছর বয়সে থর্পের চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছেন কেউই। ইসিবি এক বিবৃতিতে বলেছে, বিশ্ব ক্রিকেট শোকে ডুবে গিয়েছে। থর্পের পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল। এটা ওঁদের কাছে অত্যন্ত কঠিন সময়। থর্প চিরকাল মনে থেকে যাবে খেলায় ওর অবদানের জন্য।
১৯৬৯ সালের ১ অগাস্ট জন্ম থর্পের। আর এক অগাস্টেই চলে গেলেন তিনি। ক্রিকেট ছাড়ার পর থেকে মানসিক ভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। বিয়ে ভেঙে যাওয়া, হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়া থেকে মদে ডুবে যাওয়ার পর ঘটনার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। সেখান থেকে বেরিয়েও আসার চেষ্টা করেছিলেন। বরাবরই জীবন সম্পর্কে উদাসীন ছিলেন থর্প। কিন্তু ক্রিকেট তাঁকে দু’হাত ভরে দিয়েছিল। মাত্র ৮ বছর বয়সে স্থানীয় ক্লাব ব়্যাকলহ্যামের অনূর্ধ্ব ১৭ টিমের হয়ে খেলতে শুরু করেন। ১১ বছর বয়সে সারের চোখে পড়ে যান। আর কখনও সারে ছাড়েননি। স্পিনের বিরুদ্ধে তাঁর স্কিল চিরকাল মনে রাখবে ইংল্যান্ড। ১৯৯৩ সালের অ্যাসেজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওভালে অভিষেক হয়। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরিও করেন। ইংল্যান্ডের কোচ হিসেবেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে তা ছিল খুব কম সময়ের জন্য।