IPL 2022: জয় দিয়ে আইপিএল অভিষেক স্মরণীয় করল হার্দিকের গুজরাত

আজ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে অভিষেক হল লখনউ সুপার জায়ান্টসের (Lucknow Super Giants) এবং গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans)। দুটো নতুন দলের লড়াইয়ের সাক্ষী রইল ওয়াংখেড়ে। আর আইপিএল অভিষেকটা জয় দিয়ে রাঙিয়ে রাখল হার্দিক পান্ডিয়ার দল। এক রাহুলের ঝোড়ো ব্যাটিং গুড়িয়ে দিল আর এক রাহুলের দলের স্বপ্ন।

IPL 2022: জয় দিয়ে আইপিএল অভিষেক স্মরণীয় করল হার্দিকের গুজরাত
IPL 2022: জয় দিয়ে আইপিএল অভিষেক স্মরণীয় করল হার্দিকের গুজরাতImage Credit source: GT Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 28, 2022 | 11:57 PM

মুম্বই: কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে শেষ ওভারের টানটান উত্তেজনা একাধিক ম্যাচে দেখা গিয়েছে। আর আজও আইপিএলের (IPL) ম্যাচে সেই শেষ ওভারের নাটক দেখা গেল। শেষ ওভারে এক রাহুলের ঝোড়ো ব্যাটিং গুড়িয়ে দিল আর এক রাহুলের দলের স্বপ্ন। সবার জন্য অভিষেকটা তো আর স্মরণীয় হয় না। আজ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের মঞ্চে অভিষেক হল লখনউ সুপার জায়ান্টসের (Lucknow Super Giants) এবং গুজরাত টাইটান্সের (Gujarat Titans)। দুটো নতুন দলের লড়াইয়ের সাক্ষী রইল ওয়াংখেড়ে। আর আইপিএল অভিষেকটা জয় দিয়ে রাঙিয়ে রাখল হার্দিক পান্ডিয়ার দল।

লখনউয়ের আইপিএল অভিষেকে হার জুটলেও, নজর কাড়লেন ২২ বছরের আয়ুষ বদোনি। একে অভিষেক ম্যাচ, তার ওপর তিনি যখন নামলেন দলের পরিস্থিতি ছিল রীতিমতো কঠিন। কিন্তু মাঠে আয়ুষকে দেখে মনেই হল না, প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন তিনি। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে মহম্মদ সামির তৃতীয় শিকার হলেন যখন মনীশ পান্ডে, মাঠে নামলেন আয়ুষ। দল তখন তীব্র চাপে। ২৯ রানের মাথায় ৪ উইকেট খুইয়ে বসা লখনউয়ের হাল ধরেন দীপক হুডা ও আয়ুষ। এর আগে মাত্র ৫টি টি-২০ ম্যাচে খেলে ৮ রান করেছিলেন আয়ুষ। প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়ে মান রাখলেন আয়ুষ। ধুঁকতে থাকা লখনউকে অক্সিজেন দেয় দীপক-আয়ুষের ৮৭ রানের পার্টনারশিপটা। দুরন্ত ফর্মে ছিলেন হুডা। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দিচ্ছিলেন অভিষেক ম্যাচে নামা আয়ুষ। ১৫.৫ ওভারে গিয়ে আফগান তারকা স্পিনার রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন দীপক। হুডা ৪১ বলে ৫৫ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলে যান। যাতে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছয়। হুডা ফিরলে ক্রুণাল পান্ডিয়ার সঙ্গে জুটি বাঁধেন আয়ুষ। এই জুটিতে ৪০ রান যোগ করে স্কোরবোর্ডে। আইপিএল অভিষেকে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়ার সুযোগ ছিল দিল্লির ছেলে আয়ুষের সামনে। কিন্তু শেষ ওভারে বরুণ অ্যারনের শিকার হন তিনি। ৫৪ রানের মাথায় থামতে হয় আয়ুষকে। আইপিএল অভিষেকে ছয় নম্বরে নেমে ৫০ এর ওপর রান করা প্রথম প্লেয়ার হলেন আয়ুষ বদোনি। দীপকের ৫৫ আর আয়ুষের ৫৪ রান ছাড়া স্কোরবোর্ডে দেখার মতো রান নেই কারও। তবে শেষ বেলায় নেমে ১৩ বলে ২১ রানে নট আউট থেকে যান ক্রুণাল।

আজকের ম্যাচের প্রথম বলেই যে কামাল দেখালেন মহম্মদ সামি, তার প্রশংসা না করে থাকা যায় না। বল হাতে নিয়েই লখনউয়ের অধিনায়কে সাজঘরে পাঠান সামি। সামনের পায়ে সামির বল খেলার চেষ্টা করেছিলেন রাহুল। কিন্তু ব্যাটের কোনায় লেগে বল চলে যায় উইকেটকিপার ম্যাথু ওয়েডের হাতে। প্রথমে আম্পায়ার রাহুলকে আউট না দিলেও ডিআরএস নিয়ে সফল হন হার্দিক। গত মরসুমে পঞ্জাব কিংসে একসঙ্গে খেলেছেন সামি-রাহুল। তবে আজ দু’জনই খেললেন আলাদা এবং নতুন দলে। লখনউয়ের ক্যাপ্টেনের উইকেট হারানোর রেশ তখনও কাটেনি, তৃতীয় ওভারে আবার সামি নিলেন দ্বিতীয় উইকেট। ৯ বল খেলে ৭ রানে ডি’কক ফেরেন প্যাভিলিয়নে। তাতেই থেমে যাননি সামি। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে মনীশ পান্ডের উইকেট তুলে নেন তিনি। আজ বল হাতে দেখা গিয়েছে হার্দিক পান্ডিয়াকে। শুরুটা ভালো করলেও শেষ অবধি ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩৭ রান খরচ করে বসেন তিনি। তবে কোনও উইকেট পাননি। আজ বোলিংয়ের সময় কোনও অস্বস্তিতে দেখা যানি হার্দিককে। ফলে আইপিএলের পরের ম্যাচগুলোতে তিনি নিজের বোলিংকে আরও ধারালো করার চেষ্টা যে করবেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

১২০ বলে ১৫৯ রানের টার্গেটটা খুব আহামরি নয়। কিন্তু শুরুতেই যেভাবে হুড়মুড়িয়ে ধ্বসে পড়েছিল লখনউয়ের টপ অর্ডার, তাতে এই রানটা তোলাটাই কঠিন ছিল লোকেশ রাহুলের দলের কাছে। তবে রান তাড়া করতে নেমে লখনউয়ের মতোই দশা হয়েছিল গুরজাতেরও। মাত্র ৩ বল খেলেই দুশমন্ত চামিরাকে উইকেট দিয়ে বসেন শুভমন গিল। সামির মতোই প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার পর তৃতীয় ওভারেও উইকেট তুলে নেন চামিরা। তৃতীয় ওভারে বিজয় শঙ্করকে (৪) ফেরান শ্রীলঙ্কান বোলার। এর পর ম্যাচের হাল ধরেন ক্যাপ্টেন হার্দিক পান্ডিয়া ও ম্যাথু ওয়েড। ব্যাট হাতে হার্দিক করে গেলেন ২৮ বলে ৩৩ রান। ডেভিড মিলারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ রান। আর শেষ বেলায় অভিনব মনোহরকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন রাহুল তেওয়াটিয়া। এক রাহুলের জয়ের কাঁটা হলেন অপর রাহুল। টানটান শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১১ রান। বল হাতে ছিল আবেশ খানের। শেষ ওভারের দুটো পরপর বলে দুটো চার মারেন মনোহর। তখনও উইকেট তুলে নিলে হয়তো ম্যাচের ফলটা পাল্টে যেতে পারত। কিন্তু তা তো হয়নি উল্টে তেওয়াটিয়া চতুর্থ বলে চার মেরে দলকে পৌঁছে দিলেন ১৬১ রানে। ২৪ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো নট আউট ইনিংস খেলে গেলেন রাহুল তেওয়াটিয়া। তাঁকে সঙ্গ দেওয়া মনোহর করেন ৭ বলে অপরাজিত ১৫ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: লখনউ ১৫৮-৬ (দীপক ৫৫, আয়ুষ ৫৪, মহম্মদ সামি ৩-২৫, বরুণ অ্যারন ২-৪৫)। গুজরাত ১৬১-৫ (রাহুল ৪০ নট আউট, হার্দিক ৩৩, ম্যাথু ৩০, ডেভিড ৩০, চামিরা ২-২২, ক্রুণাল ১-১৭)।