জোহানেসবার্গ: ভারতীয় পেসারদের বলের আঘাতে জর্জরিত হয়েও ডিন এলগার (Dean Elgar) প্রোটিয়াদের সিরিজে সমতায় ফিরিয়েছেন। তাঁর অসাধারণ ব্যাটিং, লড়াকু মানসিকতা ঘুরে ফিরে তাঁকে নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য করে দিচ্ছে। খোঁচা খাওয়া বা আহত হওয়া সিংহ যেমন গর্জন করে, এলগারও বুমরা-সামিদের বাউন্সারের পর একটা একটা বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে সেটাই করছিলেন। তবে জো’বার্গে চতুর্থ দিন মাঠে নামার আগে প্রোটিয়া অধিনায়ক তাঁর বাবার কাছে একখানা প্রতিজ্ঞা করে গিয়েছিলেন। এবং বাধ্য ছেলের মতো সেই প্রতিজ্ঞা সফল করে দেখিয়েছেন এলগার।
কী ছিল এলগারের প্রতিজ্ঞা? ফাঁস করেছেন তাঁর বাবা রিচার্ড এলগার (Richard Elgar)। সেঞ্চুরিয়নে বড় ব্যবধানে হারের পর প্রোটিয়াদের লক্ষ্যই ছিল জো’বার্গে ভারতকে হারানো। কিন্তু প্রথম ইনিংসে দুই দলই বেশি রান তুলতে পারেনি। এবং শেষমেশ ২৪০ রানের টার্গেট ছিল এলগারদের সামনে। আর সেটা তুলতে গিয়েই ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে গেলেন এলগার। চতুর্থ দিনের খেলার আগে এলগার তাঁর বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ম্যাচের শেষ অবধি আমি মাঠে থাকব। রিচার্ড এক কলামে এ ব্যাপারে লিখেছেন, “বাবা, আমি কাল খেলার শেষ অবধি মাঠে থাকব। ওরা আমাকে মাঠ থেকে বের করতে চাইলে, ওদের আমার শরীরের কিছু একটা ভেঙে দিতে হবে, তবেই আমাকে মাঠ থেকে টলানো যাবে। শরীরে আঘাত করলে ওরা আমাকে মাঠ থেকে সরাতে পারবে না।”
এর পর সত্যিই দেখা যায়, জো’বার্গে ভারতীয় পেসারদের একের পর এক বাউন্সার সামলে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান এলগার। এবং শেষ হাসিও ফোটে তাঁর মুখে। এত বাউন্সার সামলে ছেলের এই ৯৬ রানের অপরাজিত ইনিংসে একটুও অবাক নন রিচার্ড এলগার। তিনি জানান, স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ডিন এরকমই। ছেলেবেলা থেকেই কোনও আঘাত পেলেও ভেঙে পড়েননি ডিন। বরং আঘাত তাঁকে আরও শক্ত করত, জেতার জেদ চেপে বসত তাঁকে।
রিচার্ড এলগার আরও লেখেন, “ডিন সবসময়ই একজন নেতা ছিল, তার স্কুলে ক্রিকেট বা স্কোয়াশে একজন অধিনায়ক ছিল ও। তাই ওর ব্যক্তিত্বের মধ্যে এটার ছাপ সব সময় দেখা গিয়েছে। এখন অধিনায়কত্ব পাওয়ার পর আমি তাকে শুধু একটাই কথা বলেছিলাম যে, ‘ডিন, তুমি যেমন, তেমনটাই থাকো। নিজেকে পরিবর্তন করবে না। সম্মান তখনই আসবে যখন তুমি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবে, মাঠে এবং মাঠের বাইরে। সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করো, যেভাবে তুমি চাও।”
ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা (India vs South Africa) সিরিজ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ১-১। ফয়সলার ম্যাচ শুরু হতে চলেছে ১১ জানুয়ারি।
আরও পড়ুন: শ্রেয়স-হনুমাদের নিয়মিত সুযোগ পেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে, বলছেন দ্রাবিড়