মুম্বই: টানা দশ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে যাওয়া এবং হার। ভারতীয় দলও কি আইসিসি টুর্নামেন্টে ‘চোকার্স’? গত দশ বছরে আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের পারফরম্যান্স এই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। ২০১৩ সালে শেষ বার আইসিসি ট্রফি জিতেছিল ভারত। সে বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এসেছিল। এরপর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে আইসিসির দশটি টুর্নামেন্ট। একই ঘটনা বারবার ঘটলে তা অবশ্যই প্রশ্ন তোলার মতো। তেইশের বিশ্বকাপ ধরে সেই দশটি টুর্নামেন্টে পাঁচ বারই ফাইনালে উঠেছে ভারত। সেমিফাইনালে চার বার। ট্রফি কিন্তু আসেনি। মনোবিদরা কী বলছেন? বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ। ফেভারিট ছিল ভারত। ট্রেন্ডও তাই বলছিল। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। পরবর্তী দুটি বিশ্বকাপ অর্থাৎ ২০১৫ সালে আয়োজক অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৯ সালে আয়োজক ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই ট্রেন্ড বজায় রেখে এ বার ভারতই চ্য়াম্পিয়ন হবে এমনই মনে করা হচ্ছিল। শুধু ট্রেন্ড কিংবা পরিসংখ্যানই নয়। শুরু থেকে পারফরম্যান্সেও সেই প্রত্যাশা। টানা নয় ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা। শেষ চারে নিউজিল্যান্ডের মতো কঠিন প্রতিপক্ষকে ৭০ রানে হারানো। সব দিক থেকেই এগিয়ে ছিল ভারত।
আমেদাবাদে ফাইনালে ভারতের হারের পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি বড় মঞ্চে চাপ নিতে ব্যর্থ ক্রিকেটাররা? সংবাদ সংস্থা পিটিআই কথা বলেছে বেশ কয়েকজন ক্রীড়া মনোবিদের সঙ্গে। তাঁরা অবশ্য মনে করছেন না, স্নায়ুর চাপে বারবার এমনটা হচ্ছে। বরং, সেই দিনটা খারাপ পারফরম্যান্স বলেই মনে করেন। ভারতের নামি অ্যাথলিটদের সঙ্গে কাজ করা ক্রীড়া মনোবিদ গায়ত্রী বার্তক বলেন, ‘আমি এমন কিছু খুঁজে পাইনি যাতে মনে হয়েছে, টিম মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। চাপের মুখে পারফর্ম করতে পারে না বা চোক করছে, এমন মনে করি না। টুর্নামেন্টে সকলেই ইতিবাচক ছিল। একজন প্লেয়ারের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকে তাঁর খেলা শেষ ম্যাচটা, তিন চার-বছর আগে সেমিফাইনালে বা ফাইনালে কী হয়েছিল তা নয়।’
আর এক ক্রীড়া মনোবিদ দিয়া জৈন বলেন, ‘যে কোনও দলেরই একটা দিন খারাপ যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ হল, সেটা থেকে শেখা। অস্ট্রেলিয়া স্বচ্ছ পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিল এবং সেটা বাস্তবায়িত করার জন্য নিজেদের ওপর ভরসা রেখেছে। বড় ম্যাচে চাপ থাকবেই, মানসিক প্রস্তুতিটাই আসল। সত্যি বলতে, এখন এগুলো বিশ্লেষণ করার সময় নয়। বরং আমাদের সেলিব্রেট করা উচিত। বিশ্বকাপ ফাইনালে ওঠা এবং টানা দশ ম্যাচ জেতাও অনেক বড় সাফল্য।’
গত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের হারের পর এ বিষয়ে কথা বলেছিলেন ম্যাথিউ হেডেন। ভারতীয় ক্রিকেট সম্পর্কে তাঁর জানার পরিধি অনেকটাই। ভারতে প্রত্য়েকের DNA-তে ক্রিকেট রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন। সমর্থকদের এই চাপটাও কম নয়। সেটাও বড় মঞ্চে ব্যর্থতার অন্য়তম কারণ বলে মনে করেন মনোবিদরা।