নয়াদিল্লি : ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ভারতের সাফল্যের রেসিপি কী ছিল? টপ অর্ডার যেমন রান করেছিল, মিডল অর্ডার তেমনই চাপ সামলেছিল। যুবরাজ সিং, মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো ব্যাটাররা মিডল অর্ডারের কাজটা সহজ করে তুলেছিলেন। যুবির (Yuvraj Singh) মতো কাউকে মিডল অর্ডারে দরকার ভারতের। ১৪ ওভার থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত স্কোরবোর্ড সচল রাখা, বিপক্ষের বোলিংকে মাথায় চড়তে না দেওয়া, উইকেট না হারানো, স্ট্রাইক বদলের কাজটা চালিয়ে যাওয়া। ঘটনা হল, ২০১১ সালের পর থেকে বিশ্বকাপ (ICC Cricket World Cup 2023) বা আইসিসির বড় টুর্নামেন্টগুলোর আগে মিডল অর্ডার কে সামলাবেন, এমন মুখ খুঁজতে বসতে হয় ভারতকে। প্রতিবার ঠিক এই জায়গাতেই ধাক্কা খায় ভারতীয় টিম। বিশ্বকাপও থেকে যায় অধরা। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আগে এই কাজটা কে করতে পারেন রোহিত শর্মার টিমের হয়ে? ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়ারের চোট। লোকেশ রাহুল হয়তো ফিরবেন দ্রুত, ম্যাচ ফিট হতে সময় লাগবে। ভারত কি তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জিততে পারবে? কী বলছেন যুবরাজ সিং? TV9 Bangla Sports তুলে ধরল এই প্রতিবেদনে।
কুড়ি-বিশের যুগে ওয়ান ডে ক্রিকেট ক্রমশ বাতিলের তালিকায় ঢুকে পড়ছে। ৫০ ওভারের ফর্ম্যাটে মাঝের ওভারগুলোতে একঘেয়ে স্পিন সামলানোর মতো বোরিং কাজ করার ক্রিকেটার ক্রমশ বিরল হয়ে পড়ছেন। তার উপর চোট আঘাতের গল্পে আরও চাপ বাড়ছে ভারতীয় টিমের। ৪ ও ৫ নম্বরে এই পরিস্থিতিতে কাকে খেলানো যেতে পারে? পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে ভারতীয় শিবিরে। গত ৯টা ওয়ান ডে ম্যাচে অক্ষর প্যাটেল, ঈশান কিষান, সূর্যকুমার যাদবদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে। ছোট ফর্ম্যাটে এঁরা যতই সফল হোন না কেন, ওয়ান ডে-তে টিমকে ভরসা দিতে পারেননি।
যুবির স্পষ্ট কথা, ‘যদি ওপেনাররা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায়, তা হলে কিন্তু মিডল অর্ডারকেই টিমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা করতে হবে। তখন কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের ক্রিজে গিয়েই চালালে চলবে না। মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের চাপটা হজম করতে হবে। কিছু বল ছাড়তেও হতে পারে, যাতে একটা বড় পার্টনারশিপ তৈরি করা যায়। এটা একটা কঠিন কাজ। এটা যথাযথ করার জন্য অভিজ্ঞ লোকই দরকার।’
২০২০ সাল থেকে যদি ভারতের ওয়ান ডে স্ট্যাট দেখা হয়, তা হলে মাঝের ওভারগুলোয় মাত্র তিনজন ভারতীয় ব্যাটার সাফল্য পেয়েছেন। সঞ্জু স্যামসন, রবীন্দ্র জাডেজা এবং লোকেশ রাহুল। এঁদের মধ্যে রাহুলই সবচেয়ে সফল। ২০২০ সাল থেকে ৯৫.৬৭ গড়ে রান করেছেন। সব মিলিয়ে তাঁর ওয়ান ডে গড় ৫৭.৭৫। ওয়ান ডে ফর্ম্যাটে রাহুল অত্যন্ত ভরসার মুখ সন্দেহ নেই। বিশেষ করে চাপে মুখে পারফর্ম করতে পারেন।রান তাড়া করার ক্ষেত্রে তাঁর বিকল্প এই মুহূর্তে নেই। যে কারণে তাঁকে দ্রুত টিমে দেখতে চাইছে টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু চোট থেকে ফেরার পর তিনি কত দ্রুত ফর্ম দেখাতে পারেন, তা নিয়ে কিন্তু আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
যুবির মতো প্রাক্তনের মন্তব্য, ‘দেশ ভক্তের মতো আমি বলতেই পারি, ভারত বিশ্বকাপ জিতবে। কিন্তু সত্যি কথা বললে, ভারতের মিডল অর্ডারে চোটের কারণে আমি অনেক ফাঁকফোকর দেখতে পাচ্ছি। যদি এই সমস্যাগুলো দূর না করা যায়, তা হলে কিন্তু চাপের ম্যাচগুলোতে ভারতকে ঠোক্কর খেতে হবে। চাপের ম্যাচে পরীক্ষা তো করাই যাবে না। ওপেন করা আর মিডল অর্ডারে ব্যাট করা কিন্তু এক জিনিস নয়। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টে এমন কেউ কি আছেন, যিনি মিডল অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে কাজ করছেন? মিডল অর্ডার একেবারেই তৈরি নয়, এই দায়িত্বটা কিন্তু কাউকে না কাউকে নিতে হবে।’