AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

IPL 2022: বাবা চালান সেলুন, আইপিএল অভিষেকেই চমকে দিলেন ছেলে

নামগোত্রহীন কেউ কেউ হঠাৎ করে চমকে দেন আইপিএল ভক্তদের। ঠিক যেমন দিলেন কুলদীপ সেন। সেলুনে চুল কাটতে হয় বাবা রাম পাল সেনকে। আয়ও তেমন নয়। তবু কুলদীপ স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন।

IPL 2022: বাবা চালান সেলুন, আইপিএল অভিষেকেই চমকে দিলেন ছেলে
IPL 2022: বাবা চালান সেলুন, আইপিএল অভিষেকেই চমকে দিলেন ছেলেImage Credit: Twitter
| Edited By: | Updated on: Apr 12, 2022 | 9:30 AM
Share

মুম্বই: রোজ সকালে ৬ কিমি সাইকেল চালিয়ে হরিহরপুর গ্রাম থেকে রেওয়ার শ্রীমোর চৌরাহায় পৌঁছন। তিরিশ বছর ধরে এটাই তাঁর রুটিন। সোমবারও কি বদলেছে তা? না। শুধু রাম পাল সেনকে ঘিরে দিনভর ছিল একটা ভিড়। অনেকেই এসেছেন তাঁর সেলুনে। একটাই আব্দার নিয়ে, কুলদীপ সেনের মতো হেয়ারস্টাইল চাই! রবিবার রাতে শেষ ওভারটার আগেও কেউ চিনতেন না কুলদীপ সেন (Kuldeep Sen) নামের ২৫ বছরের ছেলেটিকে। রাজস্থান রয়্যালের (Rajasthan Royals) বিরুদ্ধে শেষ ওভারে জেতার জন্য লখনউ সুপার জায়েন্টের (Lucknow Super Giants) দরকার ছিল ১৫ রান। উইকেটে ছিলেন মার্কাস স্টোইনিসের মতো মারকুটে ব্যাটার। ১৯তম ওভারের শেষ বলে যিনি ছয়ও মেরেছিলেন। কিন্তু কুলদীপের বিরুদ্ধে তিনি কার্যত কিছু করতে পারেননি। তিনটে বল ডট। রাজস্থান ম্যাচ জিততেই এক নতুন নায়কের উত্থান হল। যাঁর বাবা রাম পাল সেন। পেশায় নাপিত। সারা দিন কাঁচি চলে তাঁর। মাসে ৮ হাজার টাকার মতো আয়। মধ্যপ্রদেশের সেই রাম পাল সেনের দোকানই এখন স্থানীয় মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে।

কুইন্টন ডি ককের বিরুদ্ধে ১৪৬.৩ কিমিতে বোলিং করে চমকে দিয়েছেন। চাপের মুখেও নির্দিষ্ট জায়গায় বোলিং করতে পারেন। শুধু তাই নয়, ওয়াইড ওয়ার্কারে রীতিমতো সিদ্ধহস্ত। ঘটনা হল, এ সব কিন্তু ওই এক রবিবারেই দেখিয়ে ফেলেছেন কুলদীপ। রবিবারই যে আইপিএলে অভিষেক হল তাঁর। ২৫ বছরের ছেলেকে দেখে কিন্তু ক্রিকেট মহল বলতে শুরু করেছে, এ ছেলে অনেক দূর যাবেন।

রাম পাল এতশত বোঝেন না। তিনি ছেলের ম্যাচ দেখেছেন। শেষ ওভারে কুলদীপেরহ দারুণ বোলিং দেখে উচ্ছ্বসিত। তার থেকেও বেশি খুশি সোমবার সকালে সেলুনে পৌঁছে। রাম পালের জন্য সকাল থেকে ভিড় করে ছিলেন স্থানীয় মানুষজন। রাম পাল বলছেনও, ‘আজ তো আমি খাওয়ার সুযোগ পর্যন্ত পাইনি। প্রচুর কাস্টমার এসেছিলেন। তিরিশ বছর ধরে এই সেলুন চালাচ্ছি। ছেলের জন্য সত্যিই গর্ব হচ্ছে। ও আমাদের সবাইকে গর্বিত করেছে। ও ক্রিকেট খেলুক, আমি কখনও চাইনি। ক্রিকেট পাগলামীর জন্য ওকে মেরেছি পর্যন্ত। কিন্তু ও কখনও স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেনি।’

মধ্যপ্রদেশের এক সময়ের অনূর্ধ্ব ১৯ পেস বোলার অরিল অ্যান্থনির হাতে বেড়ে ওঠা কুলদীপের। দারিদ্র ঠেলতে ঠেলতে বড় হওয়া কুলদীপের ক্রিকেট কিটই ছিল না অনেকদিন। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে বেড়ে ওঠা কুলদীপ তবু জেদ থেকে সরে আসেননি। কোচ অ্যান্থনি নিজের বেড়ে ওঠার সময় এমআরএফ পেস অ্যাকাডেমিতে ডেনিস লিলির কাছে ট্রেনিং নিয়েছিলেন। অ্য়ান্থনি বলছেন, ‘লিলি একটা কথা খুব বলতেন, আর্থিক কারণে কোনও প্রতিভার প্রতি অবিচার হতে পারে না। যে কারণে আমি কুলদীপকে বিনা মাইনেতে অ্যাকাডেমিতে খেলতে দিয়েছিলাম। কুলদীপ প্রতি ওভারে বাউন্সার দিতে ভালোবাসত। আর সেটা করতে গিয়ে বল ছুড়ত। যে কারণে আমি ওকে কোনও ট্রায়ালে পাঠাতাম না। বলে জোর আছে। কিন্তু চাক করার জন্য ওর কেরিয়ার শুরুতেই শেষ হয়ে যেতে পারত। ধীরে ধীরে ওর অ্যাকশন ঠিক হয়ে গিয়েছিল।’

২০১৮-১৯ সালে রঞ্জি মরসুমে ২৫টা উইকেট নিয়েছিলেন কুলদীপ সেন। তীব্র গতিতে বল করতে ভালোবাসেন। কয়েক দিন রাজস্থানের ট্রেনিংয়ে কুলদীপের বোলিংয়ের একটা ভিডিও ইন্সটাতে পোস্ট করে বোলিং কোচ স্টেফান জোন্স লিখেছেন, ‘ফাস্টেস্ট অন দ্য স্পিড গান!’ মেগা নিলাম থেকে তাঁকে কিনে যে ভুল করেনি রাজস্থান, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তার উপর লাসিথ মালিঙ্গার মতো পেস বোলিং কোচকে টিমে পেয়েছেন। কুলদীপ কিন্তু অভিষেকেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, লম্বা খেলবেন বলেই পা দিয়েছে আইপিএলে!