কলকাতা: সিঁড়ি থেকে হাঁটুতে প্রবল চোট পেয়েছিলেন ২৮ বছরের ক্রিকেটার। এতটাই খারাপ অবস্থা ছিল যে, অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করাতে হয়েছে। জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে দীর্ঘ রিহ্যাব থেকে মাঠে ফেরা— লম্বা সময় লেগেছে তাঁর। তবু যেন সেই ছন্দে দেখা যাচ্ছিল না। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) হয়েই আশ্চর্য উত্থান হয়েছিল ইন্দোরের ছেলের। আইপিএলের (IPL) মঞ্চ থেকেই সরাসরি জাতীয় টিমে সুযোগও পেয়েছিলেন। ভারতীয় দলের হয়ে নিজেকে সে ভাবে প্রমাণ করার সুযোগ মেলেনি। হার্দিক পান্ডিয়ার চোট-পর্বে তাঁকে অলরাউন্ডার হিসেবে খেলানো হয়েছিল। কিন্তু তেমন সাফল্য পাননি ভেঙ্কটেশ আইয়ার (Venkatesh Iyer)। ভেবেছিলেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে আরও প্রমাণ করবেন। গত মরসুমে সৈয়দ মুস্তাক আলিতে দারুণ ফর্মে ছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। আবার যখন আলোচনায় ফিরেছিলেন, তখনই সিঁড়ি থেকে চোট পেয়ে যান। দীর্ঘ চোটের গল্প পার করে ভেঙ্কটেশ আইয়ার আবার সাফল্যের আকাশে। বিস্ফোরক ইনিংসের পিছনে আসল কাহিনি কী? তুলে ধরল TV9 Bangla Sports।
উদ্বোধনী আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই ব্রেন্ডন ম্যাকালাম বিস্ফোরক সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর কেটে গিয়েছে পনেরোটা বছর। কেকেআরের আর কোনও প্লেয়ারই সেঞ্চুরি উপহার দিতে পারেননি সমর্থকদের। পনেরো বছরের খরা কাটিয়ে দিলেন ভেঙ্কটেশ। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে রবিবারের ওয়াংখেড়েতে দুরন্ত পারফর্ম করে গেলেন তিনি। ডান হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন। টিমের ডাক্তার তাঁকে ফিট করেন। তারপরই ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং দেখা গেল। যত না চার মেরেছেন, তার থেকে অনেক বেশি ছয় মেরেছেন। সেই ভেঙ্কটেশই ফাঁস করলেন তাঁর সেঞ্চুরির কাহিনি।
ইন্দোরের ছেলে বলেছেন, ‘এ বারের আইপিএল আমার কাছে প্রত্যাবর্তনের টুর্নামেন্ট। ছ’মাস আগে আমার বাঁ হাঁটু ফ্র্যাকচার হয়ে গিয়েছিল। এই পর্বে বোর্ড পাশে না দাঁড়ালে হয়তো মুশকিলে পড়ে যেতাম। ওই সময় চার-পাঁচ মাস এনসিএতে ছিলাম। চোট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য ডাক্তার, ট্রেনাররা প্রচুর সাহায্য করেছেন। তবে এও বলে দেওয়া হয়েছিল, আমি আগের মতো তীব্র গতিতে দৌড়তে পারব না। তবে তখন একটাই জিনিস চেয়েছিলাম, যে ভাবে হোক মাঠে যেন ফিরতে পারি। সেটা সম্ভব হল।’
দুরন্ত প্রত্যাবর্তনের পিছনে কে রয়েছেন? ভেঙ্কটেশ বলছেন, ‘অভিষেক নায়ারের কথাই বলব। আমি যাতে আবার ফর্মে ফিরতে পারি, তার জন্য দিন-রাত আমাকে নিয়ে নেটে পড়ে থাকত অভিষেকভাই। শুধু তাই নয়, আমার ক্রিকেট ভাবনা নিয়েই কাজ করেছে। এই সেঞ্চুরিটার পুরো কৃতিত্ব অভিষেকভাইয়ের। কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের সঙ্গে তিন বছর খেলছিল। উনি কী চান, ভালো করে জানি। আমি কী করতে পারি, তাও উনি জানেন।’
এ বারের আইপিএলের শুরু থেকে কেকেআরের মিডল ও লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা চমৎকার পারফর্ম করছেন। ক্যাপ্টেন নীতিশ রানা, রিঙ্কু সিং, শার্দূল ঠাকুররা রান পেয়েছেন। কিন্তু আপার অর্ডার, বিশেষ করে ওপেনিং সে ভাবে ভরসা দিচ্ছিল না। গত ম্যাচ থেকে সেটা দেওয়া শুরু করেছেন ভেঙ্কটেশ। একটা সেঞ্চুরিতেই থেমে যেতে চান না ইন্দোরের ছেলে। তিনি আরও একটা সফল আইপিএল চাইছেন। যা তাঁকে আবার ফিরিয়ে দেবে ভারতীয় টিমের জায়গা।