ট্রোলাররা বার্তা পাবে আকুবাথিনির এই উদাহরণে

TV9 Bangla Digital | Edited By: সঙ্ঘমিত্রা চক্রবর্ত্তী

Nov 11, 2021 | 6:01 PM

কী কুৎসিত মনোভাব হলে একটা শিশুকে আক্রমণ করার হুমকি দেয় একজন? কিন্তু ক্রিকেটের মতো খেলা নিয়ে এই ধরনের কথা ভাবতে গেলে মনটা খারাপ হয়ে যায়।

ট্রোলাররা বার্তা পাবে আকুবাথিনির এই উদাহরণে
বিরাট কোহলি (ছবি-টুইটার)

Follow Us

বিক্রম ভোরা

কী কুৎসিত মনোভাব হলে একটা শিশুকে আক্রমণ করার হুমকি দেয় একজন? কিন্তু ক্রিকেটের মতো খেলা নিয়ে এই ধরনের কথা ভাবতে গেলে মনটা খারাপ হয়ে যায়। যখন আমরা জানতে পারলাম যে অপরাধী হল একজন ২৩ বছর বয়সী হায়দরাবাদী ব্যাক্তি, যার নাম রামনাগেশ আকুবাথিনি (Ramnagesh Akubathini)। সে আবার একজন আইআইটি স্নাতক। এই খবর শুনে বিরক্তি আরও গভীর হয়। রাগের মুহূর্তে কেউ মূর্খতা বুঝতে পারে, কিন্তু নেটে পাকিস্তানের হয়ে প্রতিনিধিত্ব তৈরি করা এবং তারপরে একটি শিশুকে টার্গেট করা সত্যিই ওই ব্যক্তিকে একটি উদাহরণ তৈরি করার জন্য আহ্বান জানায়…কেবল তার বিদ্বেষপূর্ণ আচরণের জন্য নয় বরং অন্যান্য ট্রোলারদের জন্য একটি সতর্কতা হিসেবেও এটি উল্লেখ্য। বিরাট (Virat Kohli) যদি বলত, এই ধরণের বিকৃত মস্তিস্কের মানুষরা নরকে যাওয়ার যোগ্য। আমার তোমাদের কাউকে চাই না। যেখানে খুশি যাও। তোমরা নিজেদের খেলা খেলো। আমি এতে থাকতে চাই না।

এই জঘন্য বিষয়টা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। মহম্মদ সামিকে আক্রমণের সময় এটা যথেষ্ট খারাপ ব্যাপার হয়েছিল। কিছুদিন আগে সইফ আলি খানের ছেলের নাম তৈমুর রাখা নিয়ে এই রকম বোকামি শুরু হয়েছিল এবং তা ঘিরে প্রতিবাদ ও কম হয়নি, মনে আছে? এই তুমি কীসের জন্য উপযুক্ত? এটা তাঁর বাচ্চা, তোমার নয়। এই ধরণের বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন মতামত এবং বিতর্ক রয়েছে, কারণ হয়তো মুসলিম ধর্মের উল্লেখ আমাদের অনেককে সেই অচেনা বিলাসিতা করতে দেয়। কিন্তু তারপরে এই একই লোকেরা যারা যেখানে খায়, সেই জায়গায় নোংরা করে। আর তারপর এই ধরণের মন্তব্য করে। এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখার মতো। এইসব ব্যাক্তির কোনও কাজ নেই। অবসর সময়টা এভাবেই কাটায় তারা। বিকৃত মস্তিস্কের মানুষ ছাড়া একটি নয় মাসের শিশুকে এভাবে আক্রমণ করার কোনও মানে হয় না। ওই স্নাতকের একটা পরিবার আছে, সম্ভবত ও বিবাহিত এবং তার ভাই-বোন রয়েছে। সেও সিনেমা দেখে, পপকর্ন খায় এবং মনে করে এই ধরণের মন্তব্যের পর সে সমর্থন পাবে। তারা মনে করে উচ্চশিক্ষিত হলে কোন কিছুই প্রভাব ফেলে না। অনুমান করেই এতটা অজ্ঞতার পরিচয় দেয়।

এই বিষয়টি নিয়ে ট্রোলের মাত্রা বাড়তেই থাকবে। ট্রোল সহ্য করার কোনও মানে হয় না। নেটে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই ধরণের ঘৃণ্য কাজ করার একটা গ্রুপ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ট্রোলাররা সুযোগ খোঁজে এবং কোনভাবে তা পেলেই সেক্ষেত্রে সেটাকে কাজে লাগাতে মুহূর্তও দেরি করে না। না, এটা হয় না, আপনি সইফ বা সামি বা বিরাট এবং তাদের পরিবারের সাথে যা করেছেন তার পরিণতির কথা ভাবলেও অবাক লাগবে। এছাড়া আপনি তা করবেন না। এবং এই বিষয়গুলো গুরুতর স্পর্শকাতর।

ব্যাপারটি হল যে ভারতীয়দের একটা বড় সংখ্যার লোকজন এক মনের এবং এই ধরণের জঘন্য আচরণকে ঘৃণা করে। কিন্তু এই জাতীয় প্রতিটি বিষয় যেন সম্মিলিত নীরবতায় ডুবে গেছে। কারণ তারা মনে করে তাদের কথা শোনা হবে না। এই বিষয়ে জড়িয়ে যাওয়ার ভয় এত বড় কিন্তু এটি একটি জাতীয় বৈশিষ্ট্যেরও প্রতিফলনও বটে। প্রতিবেশীর বাড়িতে আপনার আবর্জনা ফেলে আপনার ঘর পরিষ্কার রাখুন। এটা কোনও নীতি হতে পারে!

বর্তমানে, অনলাইন আক্রমণের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে একটি দুর্বল এবং প্রায় অস্তিত্বহীন আইনি প্রতিকার রয়েছে। IPC-এর ধারা ৫০৬-এ জানানো হয়েছে যে, যদি কেউ অপরাধ করে, অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শনের অপরাধটি দুই বছর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। যার ফলে কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। ভারতীয় দণ্ডবিধি, ১৮৬০ (“IPC”), অনুসারে এটিকে অপরাধ হিসেবে শাস্তি দেয় না। যাইহোক, আইপিসি এবং তথ্য প্রযুক্তি আইন, ২০০০ (“আইটি আইন”) এর বিভিন্ন বিধান সাইবার বুলিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

আপনি শেষ কবে সাইবার ক্রাইমে এফআইআর দেখেছেন?
এবং যখন আইন শিথিল করে এবং তাৎক্ষণিক যোগাযোগের পিছনে জোর দেয়, তখন আমাদের নিজেদের দিকেও নজর দেওয়া উচিত এবং সঠিক জায়গায় চাপ দেওয়া শুরু করা উচিত। নীরব হয়ে থেমে থাকলে এটা সম্মতি হিসাবে দেখা হয়। আকুবাথানির ক্ষেত্রে হুমকির ঘটনাটি অত্যন্ত জঘন্য। আমাদের সাইবার সেলরা কিন্তু ভালো কাজ করেছে এই অমানবিক আচরণকারী ব্যাক্তিকে শনাক্ত করে।

Next Article