নয়াদিল্লি: সেই ছয় এখনও মনে, মাথায় গেঁথে রয়েছে ভারতবাসীর। সাদা ডিউজ় বল উড়ে যাচ্ছে গ্যালারিতে। বাইশ গজে দাঁড়িয়ে দেখছেন ভারত অধিনায়ক। আর ওই মহেন্দ্রক্ষণে ওয়াংখেড়ের গ্যালারি দুলে দুলে গাইছে বন্দে মাতারম! ২০১১ সালে ভারতের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ (ODI World Cup) জেতার এক যুগ পূরণ হল। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ফাইনালে লম্বা চুলের সেই মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) রাতারাতি কিংবদন্তি হয়ে গিয়েছিলেন। কপিল দেবের ক্যাপ্টেন্সিতে ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারতীয় টিম। ২৮ বছর পর আবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল ওই রাত থেকে। একমাস ধরে টানা চলেছিল ধোনির টিমের বিশ্বকাপ জয়ের উৎসব। ওই ছয়টাই কি সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত? ধোনি কী বলছেন? তুলে ধরল TV9 Bangla।
রবিবার মুম্বইয়ে আইসিসির তরফে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের ১২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে টিমের ক্যাপ্টেন ধোনি বলছেন, ‘ওই ছয়ের ১৫-২০ মিনিট আগেই সুখকর মুহূর্ত এসে গিয়েছিল। ফাইনালটা জেতার জন্য খুব বেশি রানের দরকার ছিল না। তখন পার্টনারশিপটা চমৎকার এগোচ্ছিল। মাঠের শিশির পড়ছিল। গ্যালারি বন্দে মাতারম গাইতে শুরু করেছিল। ওই রকম পরিবেশ আর কখনও পাইনি। হয়তো এ বার ঘরের মাঠে ওই রকম পরিবেশ দেখতে পাওয়া যেতে পারে।’
ভারতের বিরুদ্ধে আগে ব্যাট করে ২৭৪-৬ তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। ১১৪-৩ যখন, ক্রিজে এসেছিলেন ধোনি। তখন ক্রিজে ছিলেন গৌতম গম্ভীর। নয় আউট ৯১ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন ধোনি। গম্ভীরের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে তাঁর ১০৯ রানের পার্টনারশিপটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যায়। যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে ৫৪ রানের পার্টনারশিপ তৈরি হয়েছিল। আপ্লুত ধোনি বলেছেন, ‘ছয়টা আমার কাছে উইনিং মুহূর্ত নয়। ১৫-২০ মিনিট আগেই আমি ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম। কারণ তখন যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে ম্যাচটা হারা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত কঠিন ছিল। সবাই জেনে গিয়েছিল, আমরাই জিতছি। কতক্ষণে জিতব, সেটাই দেখার বিষয় ছিল। ওই মুহূর্তেই আমি তীব্র খুশিতে ভেসে যাচ্ছিলাম।’
বিশ্বকাপ জয়ই তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে বড় ঘটনা, মানেন ধোনি। তাঁর কথায়, ‘বিশ্বকাপ জয়ের থেকে বড় ঘটনা আর কিছু নেই। যতটা সহজ করে সম্ভব আমি সব সময় নিজের লক্ষ্যের দিকে নজর রাখি। যখন সেটা অর্জন করে ফেলি, তখন তৃপ্তি প্রকাশ করি, তার আগে নয়। কেউ যখন নিজের টার্গেট কী ভাবে পূরণ করা সম্ভব, এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করে, তখনই সে চাপ নিয়ে ফেলে। নিজেকে চাপে ফেলে দেয়।’
সচিন তেন্ডুলকরের কাছে ওটাই ছিল শেষ বিশ্বকাপ। শেষ পর্যন্ত তাঁকে বিশ্বকাপটা জিতে উপহার দিয়েছিল ভারত। ধোনি বলেন, ‘আমরা জানতাম, ঈশ্বর ওকে সব দিয়েছে, শুধু বিশ্বকাপটা দেয়নি। ওকে আমরা বিশ্বকাপটা দিতে চেয়েছিলাম।’