AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Sachin Tendulkar: সচিনের যখন সারা, শেফালির হয়েছিল শুরু…। এই কাহিনি জানেন?

Shafali Verma: বহু বছরের অপেক্ষা শেষে ২০১১ সালে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন সচিন তেন্ডুলকর। তাঁকে দেখে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা সেই ছোট্ট শেফালিও সদ্য বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেলেন। তাও আবার দেশের নেতৃত্ব কাঁধে। শুধু তাই নয়, ভারতের ইতিহাসে, মেয়েদের ক্রিকেটে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক এখন শেফালি।

Sachin Tendulkar: সচিনের যখন সারা, শেফালির হয়েছিল শুরু...। এই কাহিনি জানেন?
Image Credit: twitter
| Edited By: | Updated on: Jan 30, 2023 | 7:30 AM
Share

কলকাতা: কয়েক বছর আগের কথা। সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধারার চেষ্টায় শেফালি ভার্মা। সিনিয়র দলে নতুন মুখ। মিতালি রাজ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার পর দরজা খোলে শেফালি ভার্মার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৪৯ বলে ৭৩ রানের একটা ইনিংস। ১৫ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অর্ধশতরান করে কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের রেকর্ড ভেঙেছিলেন শেফালি। তার আগে আরও অনেক কাহিনি রয়েছে। বিশ্বজয়ী শেফালি ভার্মার কেরিয়ারে ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হয়েছে, এক রাত আগেই। কিন্তু সেই দিন কি ভুলে গিয়েছেন শেফালির বাবা সঞ্জীব ভার্মা? বরং বলা ভালো, সেই দিন গুলি! কী ঝক্কিই না পোয়াতে হয়েছিল শেফালির বাবাকে। ক্রিকেট প্রেম আগেই ছিল। তবে তাঁর গভীরতা বাড়ে ক্রিকেটের ভগবান দর্শনে। আরও একটু পরিষ্কার করে তুলে ধরা যাক। TV9Bangla– সেই ঘটনাই তুলে ধরল।

সচিন তেন্ডুলকর তখন ক্রিকেট কেরিয়ারের সায়াহ্নে। লাহলিতে কেরিয়ারের ফেয়ারওয়েল প্রথম শ্রেনির ম্যাচ খেলছেন সচিন তেন্ডুলকর। শেফালির তখন কতই বা বয়স! দাদা সাহিলকে দেখে ব্যাট-বল নিয়ে ‘খেলা’ করতেন শুধু। ক্রিকেটের প্রথম পাঠ বাবা সঞ্জীব বর্মার কাছেই। প্লাস্টিক ও টেনিস বলেই সীমাবদ্ধ ছিল সেই খেলা। ক্রিকেটের প্রতি প্রেম থাকলেও, ক্রিকেটার হয়ে ওঠার স্বপ্ন তখনও জাঁকিয়ে বসেনি। লাহলিতে সচিন দর্শনই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। শেফালির আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শুরুর দিকে, তাঁর বাবা সঞ্জীব বর্মার মুখেই শোনা সেই ঘটনা। শেফালিদের বাড়ি থেকে প্রায় ১৬কিমি দূরে লাহলি স্টেডিয়ামে সচিন খেলতে গিয়েছেন। তবে সচিনের থাকার বন্দোবস্ত হয়েছিল শেফালিদের বাড়ির খুব কাছেই।

বাবার কাছে শেফালি বায়না ধরেছিলেন, তাঁকে ম্যাচ দেখাতে নিয়ে যেতে হবে। মেয়ের আবদার রেখেছিলেন সঞ্জীব ভার্মা। কিন্তু সেখানে গিয়েও স্বস্তি নেই। সচিনকে কাছ থেকে দেখতে হবে। এমন আবদার রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। সচিন যেই বাউন্ডারি লাইনে ফিল্ডিং করতে এসেছেন, সঞ্জীব ভার্মার ব্যস্ততা বেড়েছে। সচিন লং অনে দাঁড়ালে, মেয়েকে নিয়ে ফেন্সিংয়ের পিছনে দাঁড়াতে হয়েছে সঞ্জীব ভার্মাকে। কখনও বা ফেন্সিংয়ের পাশ দিয়ে মেয়েকে কোলে নিয়ে দৌড়ে লং অন বাউন্ডারির পিছনে দাঁড়াতে হয়েছে। কখনও বা লং অফ, মিড উইকেট। সঞ্জীব ভার্মা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন সচিনের ব্য়াটিংয়ের সময়। মেয়েকে নিয়ে ছোটাছুটি থেকে বিরত থাকতে পেরেছিলেন। তবে গ্যালারি থেকে সচিনকে দেখে সাধ মেটেনি শেফালির। যেখানে সচিনের থাকার বন্দোবস্ত হয়েছিল, তার বাইরে মেয়েকে নিয়ে ঠায় অপেক্ষা করতে হয়েছে সঞ্জীব ভার্মাকে। যদি একবার দেখা মেলে সচিনের। আর তাতে যদি শেফালির কঠিন আবদার থেকে ‘মুক্তি’ পাওয়া যায়!

সে সময় সচিনের দেখা মেলেনি। শেফালির চোখে স্বপ্নের দেখা মিলেছিল। সচিনের ম্যাচে এত দর্শক, সকলের উন্মাদনা দেখে ছোট্ট শেফালি বাবাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘পাপা, আমিও এত দর্শকের সামনে খেলতে পারব?’ সঞ্জীব ভার্মা বুঝিয়েছিলেন, পরিশ্রম করলে অবশ্যই পারবে। ব্য়স। বাবার উত্তরে নতুন বায়না, লেদার বলে ক্রিকেট খেলা শুরু করবেন, কোনও একদিন প্রচুর দর্শকের সামনে খেলবেন। সচিনের সেই একটা ম্যাচ শেফালির মধ্যে ক্রিকেটের স্বপ্ন বাস্তবের পথ দেখিয়েছিল। মেয়ের আবদার ফেলতে পারেননি। আবার পড়শিদের বিদ্রুপ উপেক্ষা করাও কঠিন হয়েছিল। ঝামেলা কিছুটা কমাতে ছেলেদের মতো চুলের ছাঁট দেওয়া হয় শেফালির। ভর্তি করা হয় অ্য়াকাডেমিতে। এক বার অনূর্ধ্ব ১২ স্তরে একটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল শেফালির দাদা সাহিলের। ম্যাচের আগের দিন থেকেই সাহিলের ধুম জ্বর। দাদার জায়গায় বোন গিয়েছিলেন পানিপথে ম্যাচ খেলতে। ম্যাচের সেরার পুরস্কার জিতেই ফিরেছিলেন ছোট্ট শেফালি। সে সময় শেফালির বয়স মাত্র ৮ বছর। না কোনও সাজানো গল্প নয়। সঞ্জীব ভার্মাই শুনিয়েছিলেন এই ঘটনা।

বহু বছরের অপেক্ষা শেষে ২০১১ সালে দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন সচিন তেন্ডুলকর। তাঁকে দেখে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা সেই ছোট্ট শেফালিও সদ্য বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেলেন। তাও আবার দেশের নেতৃত্ব কাঁধে। শুধু তাই নয়, ভারতের ইতিহাসে, মেয়েদের ক্রিকেটে একমাত্র বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক এখন শেফালি।

সচিনের অভাবনীয় সফল কেরিয়ারের যে দিন সারা হয়েছিল, সেদিনই যেন শুরু হয়েছিল শেফালির সাফল্যের পথ।