কলকাতা: ঘরোয়া ক্রিকেটকে অবহেলা কোনও মতেই বরদাস্ত করবে না বোর্ড। এই নিয়ে ফতোয়া জারি করলেও ঈশান কিষাণ ও শ্রেয়স আইয়ার তা মানেননি। আইপিএলে টাকা ও খ্যাতির চমক রয়েছে। অনেক ক্রিকেটার আইপিএল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফর্ম করে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু আইপিএলের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটকে গুরুত্ব না দেওয়া বিন্দুমাত্র ভালো চোখে দেখছে না বোর্ড। জাতীয় দল থেকে দূরে থাকলে রঞ্জি খেলো। এই পরিষ্কার বার্তা কেন যে ঈশান ও শ্রেয়স মানলেন না, তা নিয়ে চলছে বিস্তর আলোচনা। এতদিন বার বার শোনা গিয়েছে রঞ্জিতে না খেলে ঈশান কিষাণ (Ishan Kishan) এবং শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) বোর্ডের রোষে পড়েছেন। এই দুই ক্রিকেটার বিসিসিআইয়ের বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ পড়ার পর থেকে একাধিক খবর উঠে এসেছে। এ বার শ্রেয়স আইয়ারকে নিয়ে বড় খবর ফাঁস। কেকেআর শিবিরে যোগ দেওয়ার জন্যই নাকি চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন শ্রেয়স।
কেকেআর শিবিরে যোগ দেওয়াই কাল হল শ্রেয়সের?
RevSportz এর রিপোর্ট অনুযায়ী, শ্রেয়স আইয়ার মুম্বইয়ের মুখ্য নির্বাচক রাজু কুলকার্নিকে তাঁর পিঠের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। এবং ব্যাথার জন্য শ্রেয়স কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেননি। কিন্তু তিনি বেঙ্গালুরুর জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে এই নিয়ে কোনও রিপোর্ট দেননি। একইসঙ্গে তিনি জানাননি যে এনসিএ স্পোর্টস সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিনের প্রধান নীতীন প্যাটেল যে ইমেল মারফত জানিয়েছেন শ্রেয়স ফিট, সে কথাও জানাননি।
নিজের পিঠ ব্যাথার কথা জানিয়ে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে অবশ্য যাননি। বরং তিনি পৌঁছে যান মুম্বইতে কেকেআরের অ্যাকাডেমিতে। মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার জায়গায় সেখানে তিনি কয়েকজন কোচের অধীনে অনুশীলন করেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে না জানিয়ে এ ভাবে শ্রেয়সের কেকেআরের অ্যাকাডেমিতে যাওয়া ভালোভাবে নেননি বিসিসিআই নির্বাচক প্রধান অজিত আগরকর। শোনা গিয়েছে, কেকেআর শিবিরে যোগ দেওয়ার ফলেই বোর্ডের চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন।
শ্রেয়সকে কাছ থেকে দেখা নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির কথায়, ‘ব্যাথার জন্য এক সময় একটা সেশনে ৬০ বল খেলে বিরতি নিতে হচ্ছিল ওকে। এখন ও ফিটনেস লেভেল এমন জায়গায় নিয়ে গিয়েছে যে এখন প্রতি সেশনে ২০০ বল খেলছে। মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এবং মুম্বইয়ের হেড কোচ ওমকার সালভি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল। কেকেআরের অ্যাকাডেমিতেও মুম্বইয়ের কোচ গিয়েছিলেন শ্রেয়স কতটা উন্নতি করেছেন তা দেখার জন্য। এখন তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে খেলবে ও।’
ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছেন যে শ্রেয়স আইয়ার গত বছরের বিশ্বকাপে ব্যথা নিয়েই খেলেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘তিনি বিশ্বকাপ খেলার জন্য আইপিএলে খেলেননি। অস্ত্রোপচারের পরও বিশ্বকাপে ব্যথামুক্ত থাকতে তিনটি ব্যথানাশক ইনজেকশন নিয়েছিলেন তিনি। এবং তবুও, সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের সময় তাঁর ব্যথা ফিরে আসে এবং তিনি ব্যাথা নিয়েই খেলেন। আইয়ারই একমাত্র ক্রিকেটার যাকে বিশ্বকাপের পর বিরতি দেওয়া হয়নি। তিনি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেছিলেন এবং তারপরে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরে আসার পর, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দুই টেস্টের আগে জানুয়ারিতে তাঁকে একটি রঞ্জি খেলা খেলতে বলা হয়েছিল। তিনি তাই করেছিলেন। একজন ক্রিকেটারের কি তাঁর পছন্দের কোচের অধীনে প্রশিক্ষণ নেওয়ার স্বাধীনতা নেই?’