টেস্ট ক্যাপ নেওয়ার সময় নৌশাদ খানের চোখে জল। কোনওরকমে আবেগ চেপে রেখেছিলেন সরফরাজ খান। হাফসেঞ্চুরির পর ছেলে ব্যাট তুলতেই ফ্লাইং কিস নৌশাদের। রাজকোট টেস্টে এমন বেশ কিছু আবেগের মুহূর্ত তৈরি হল। অবশেষে টেস্ট অভিষেক হল সরফরাজ খানের। ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের পুরস্কার পেলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও শুরুটা অনবদ্য। বিধ্বংসী হাফসেঞ্চুরি। তবে নিজের জন্য নয়, বাবার জন্য সবচেয়ে বেশি খুশি সরফরাজ। রাজকোটে ভারত-ইংল্যান্ড টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে বারবার সরফরাজের মুখে বাবার কথা। বিস্তারিত জেনে নিন TV9 Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
টেস্ট অভিষেকের অনুভূতিটা কেমন? সরফরাজ বলছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। মাঠে এলাম, ক্যাপ পেলাম, বাবা ছিল সামনে। ছয় বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলা শেখানো শুরু করেছিল। আমার স্বপ্ন ছিল, বাবা যাতে আমাকে এক বার অন্তত দেশের হয়ে খেলতে দেখতে পারে। বাবার জন্য খুবই ভালো লাগছে।’ রাজকোটের এই দিন ঠিক কতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে? বিন্দুমাত্র সময় নেননি সরফরাজ। ঘুরে ফিরে সেই বাবার প্রসঙ্গেই ঢুকলেন, ‘বাবারও স্বপ্ন ছিল দেশের হয়ে খেলবেন। কিন্তু কিছু কারণে তা সম্ভব হয়নি। বাড়ি থেকে সে ভাবে সমর্থন পাননি। আমার ও ভাইয়ের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছে বাবা। আমার কাছে এই দিনটা স্পেশ্যাল।’
টেস্ট ক্যাপ পাওয়া আর ক্রিজে ব্যাট করতে নামা। এর মাঝে কেটেছে অনেকটা সময়। ক্রিজে নামার পর কী ভাবছিলেন সরফরাজ? বলছেন, ‘রান আসবে কিনা, ঘরোয়া ক্রিকেটে কেমন পারফর্ম করেছি, সে সব নিয়ে ভাবিইনি। প্রথমে তো বাবা আসতেই চাইছিল না। অনেকে তাঁকে বুঝিয়েছে, মাঠে যাও, এটা একটা গর্বের মুহূর্ত। আমার স্বপ্ন ছিল, বাবা বেঁচে থাকতে দেশের জন্য একটা ম্যাচ হলেও যেন খেলতে পারি। তাঁকে আসতেই হয়েছিল। এই দিনটার জন্য বাবাই সবচেয়ে বেশি পরিশ্রম করেছে। ক্যাপটা নেওয়ার সময় মনে হল, আমার কাঁধ থেকে অনেকটা বোঝা নেমে গেল। আমার জন্য বাবা এত পরিশ্রম করেছে, সেটা বেকার হতে দিইনি, এটা ভেবেই ভালো লাগছিল।’
বড় ছেলে টেস্ট দলে, ছোট ছেলে মুশির খান সদ্য অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে নজর কেড়েছেন। জোড়া সেঞ্চুরিও করেছেন বিশ্বকাপ। আর বড় ছেলে টেস্ট অভিষেকেই নজর কাড়লেন। নৌশাদের চেয়ে গর্বিত বাবা আর কে হতে পারেন?