নয়াদিল্লি: অল্প বয়সেই অনেক ছেলে-মেয়ে সিগারেট, ড্রাগের (Drug) নেশায় বুঁদ হয়ে যায়। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে এগোতে থাকে। আর সেখান থেকে বেরোতে পারলে… তারপর থাকে আরও এক অন্য যন্ত্রণা। গল্প মনে হলেও, এমনই এক সত্যি ঘটনা তুলে ধরা হল TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে। মাত্র ৬ বছর বয়সে এক বাচ্চা ছেলে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। এরপর ৭ বছর বয়সে সে সিগারেট খাওয়া শুরু করে। ৮ বছর বয়সে সেই ছেলেটা মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে। ছেলেবেলাতেই এমন ভাবে অন্ধকার জগতের দিকে এগোতে থাকা কারও ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে কল্পনা করতে পারছেন? যদিও ওই বাচ্চাটির কপালে লেখা ছিল অন্য কিছু। এরপর সেই বাচ্চাটির জীবন কোনদিকে মোড় নিয়েছিল?
এই গল্প ইংল্যান্ডের তারকা ফুটবলার ডেলে আলির (Dele Alli)। আর ডেলে আলির ছেলেবেলার পুরো গল্প শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে। ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার ডেলে আলিকে কে না চেনে। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে সেমিফাইনালে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি ক্লাব ফুটবলে খেলেন এভার্টনের হয়ে। গত মরসুমে তুরস্কের ক্লাব বেসিকতাস লোনে নিয়েছিল তাঁকে। এরপর তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল। তিনি মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যার জন্য রিহ্যাব সেন্টারেও ছিলেন। ঘুমের ওষুধের আসক্তি তাঁকে গ্রাস করেছে। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার লড়াই জারি রয়েছে ডেলে আলির।
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ফুটবলার গ্যারি নেভিলের ইউটিউবে এক সাক্ষাৎকারে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ও ছেলেবেলার যন্ত্রণাদায়ক অধ্যায়ের কথা জানিয়েছেন ডেলে আলি। তুরস্কের ক্লাবে খেলার সময় চোট পেয়েছিলেন ডেলে আলি। সেখান থেকে ফেরার পর তিনি জানতে পারেন তাঁর অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। সেই সময় তাঁর মানসিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এরপর নিজের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ছয় সপ্তাহ পুনর্বাসন কেন্দ্রে কাটানোর পর এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরছেন তিনি। অনুশীলনও করছেন।
এরপরই গ্যারি নেভিলকে ছেলেবেলার অন্ধকার অধ্যায়ের কথা শুনিয়েছেন ডেলে আলি। তিনি জানান, ছয় বছর বয়সে তিনি তাঁর মায়ের বন্ধুর হাতে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। তাঁর মা সেই সময় নেশায় বুঁদ থাকতেন। এরপর তাঁকে শৃঙ্খলা শেখার জন্য আফ্রিকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে ফিরে এসে ৭ বছর বয়সে ডেলে আলি সিগারেট খাওয়া শুরু করেন। ৮ বছর বয়সে মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি। ডেলে আলির কথায়, ‘সেই সময় আমাকে এক বয়স্ক ব্যক্তি বলেছিল, আমি বাচ্চা বলে আমাকে কেউ মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে সন্দেহ করবে না। আমি ফুটবল নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতাম আর মাদক দিয়ে আসতাম। ১১ বছর বয়লে আমাকে এক ব্যক্তি এক সেতুতে ঝুলিয়ে দিয়েছিল। এরপর ১২ বছর বয়সে আমাকে হিকফোর্ড পরিবার দত্তক নেয়।’ সেই পরিবার দত্তক নেওয়ার পরই আলির জীবন পালটে যায়। ওই পরিবারের সদস্যদের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। আর তাঁরা তাঁকে দত্তক নেওয়ার জন্য এখনও ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানান ডেলে আলি।