জয়পুর, রাজস্থান: ধিংসারি রাজস্থানের একটা ছোট্ট গ্রাম। সেখানকার মেয়েরা পায়ে পায়ে এগোচ্ছে ডর্টমুন্ডের দিকে। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। জয়পুরের সওয়াই মানসিং স্টেডিয়ামে সদ্য এক ফুটবল প্রোগাম আয়োজিত হয়েছিল। সেখানে ধিংসারির একঝাঁক তরুণী অংশ নিয়েছিল। রাজ্য স্তরের একটি ফুটবল ট্রেনিং প্রোগাম আয়োজন করেছিল রাজস্থান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। এই ট্রেনিং প্রোগামটি আয়োজিত করতে সাহায্য করেছে রাজস্থান ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাব ও দ্বারকা জেমস। ধিংসারির মেয়েরা ফুটবল পায়ে ওই ট্রেনিংয়ে নিজেদের দক্ষতা দেখিয়েছে। টিম ওয়ার্ক দেখিয়েছে। শেখার ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। ফুটবলের প্রতি আগ্রহী ধিংসারির মেয়েদের টিম ওয়ার্ক সিনিয়র আইএএস অফিসার নীরজ কুমার পাওয়ানের নজরও কেড়েছে।
ওই ট্রেনিং প্রোগামের সময় ধিংসারির মেয়েদের দৃঢ় সংকল্প মাঠে সকলের নজর কেড়েছে। রাজস্থানের ওই ছোট্ট গ্রামে অনুশীলনের সুযোগ খুবই সীমিত। সেখান থেকে উঠে আসার পরও খেলার মাঠে প্রতিপক্ষকে মাত দেওয়ার মতো ক্ষমতা দেখা গিয়েছে ধিংসারির মেয়েদের মধ্যে। খেলার প্রতি আগ্রহ, ইচ্ছেশক্তি তাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।
জার্মান শিক্ষাবিদ ও বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের এশিয়া প্যাসিফিকের প্রধান জুলিয়া ফার জয়পুরে ২ দিনের এক কর্মসূটিতে ধিংসারির একাধিক তরুণ মহিলা ফুটবলারের পারফরম্যান্স দেখে প্রশংসা করেছেন। জয়পুরে ২ দিনের ওয়ার্কশপ হওয়ার পর মঞ্জু রাজপুত নামের এক তরুণীকে বেছে নিয়েছেন মিস জুলিয়া। মঞ্জু এ বার জার্মানি পাড়ি দেবে। সেখানে ধিংসারির ১৪ জন মহিলা ফুটবলারের সঙ্গে ৫ দিনের অনুশীলন প্রোগামে অংশ নিতে পারবে মঞ্জু।
স্পোর্টস সেক্রেটারি নীরজ কুমার পাওয়ান মঞ্জু রাজপুতকে একটি বিশেষ ডিজাইন করা জার্সি দিয়েছেন। জার্মানিতে ট্রেনিং নেওয়ার জন্য মঞ্জুকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে নীরজ তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। রাজস্থান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের উইমেন্স উইংয়ের প্রেসিডেন্ট রোশনি টাঙ্ক রাজস্থানের প্রতিভাবান মেয়েদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বলেছেন। একইসঙ্গে সিনিয়র উপদেষ্টা কৌশিক মৌলিক এক্কেবারে গ্রাসরুট স্তর থেকে তরুণ প্রতিভাদের উঠে আসা এবং ক্রীড়া বিশ্বে তাঁদের উজ্জ্বল উপস্থিতি ও সম্ভবনার কথা তুলে ধরেছেন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ভজন লাল সিং সম্প্রতি মিউনিখে গিয়েছিলেন। এরপর জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন রাজস্থানের ফুটবলের প্রসারে সাহায্যের হাত বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিল। সেখানে বলা হয় এই উদ্যোগের মাধ্যমে তরুণ ফুটবলারদের অনুশীলন, প্রয়োজনীয় কোচিংয়ের দায়িত্ব নেওয়া হবে। ক্রীড়াক্ষেত্রে তরুণ মহিলাদের অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা, তাঁদের ক্ষমতায়ন করা রাজস্থানের অন্যতম একটি মিশন বলে উঠে এসেছে। রাজস্থানের তরুণ মহিলাদের ফুটবলের প্রতি আগ্রহী করে তোলাও লক্ষ্য।