East Bengal: ভরাডুবির আইএসএল, ইস্টবেঙ্গল থেকে কি মুখ ফেরাচ্ছেন সমর্থকরা?
Indian Super League: সমস্যা কি শুধুই ইস্টবেঙ্গলের? এটিকে মোহনবাগানের পরিস্থিতি কী বলছে! সবুজ মেরুন সমর্থকদের ক্লাবের নাম নিয়ে অভিমান দীর্ঘ দিনের। একাংশ রিমুভ এটিকে আন্দোলনও করছে। তারপরও ঘরের মাঠে এটিকে মোহনবাগানের ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি তুলনামূলক অনেকটাই বেশি।
দীপঙ্কর ঘোষাল
সব খেলার সেরা বাঙালির তুমি ফুটবল? বাংলা ও বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। কিন্তু সেই দিন কি আর আছে! ফুটবলের উন্নতি নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ফেডারেশন। ক্লাবগুলিও যথাসাধ্য চেষ্টা করছে (!)। সাফল্য কতটা আসছে, সন্দেহ থাকেই। যাদের জন্য এই উৎসব, সেই সমর্থকরা কোথায়! বাংলা ও বাঙালির কি ফুটবল প্রেম হারিয়ে যাচ্ছে? নাকি বিশেষ কোনও ক্লাবেরই এমন পরিস্থিতি! কোভিডের কারণে গত দু-বছর ইন্ডিয়ান সুপার লিগ হয়েছে গোয়াতে। জৈব-সুরক্ষা বলয়ে দর্শক অনুমতি ছিল না। বাংলার দর্শকদের মধ্যে হতাশা কাজ করছিল। ঘরের মাঠে খেলা দেখার সুযোগ ছিল না। এ বার পরিস্থিতি অন্য। হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে হচ্ছে আইএসএল। ফলে কলকাতায় খেলছে দুই প্রধান। কিন্তু দর্শক কই! কেনই বা এই হাল! খোঁজার চেষ্টায় TV9Bangla।
টেলিভিশনের পর্দায় আইএসএলের কোনও ম্য়াচের গ্যালারির ছবি তুলে ধরলে তা ভরাই মনে হয়। আসলে ভরা গ্যালারির ছবিই ধরা হয়। মাঠের চিত্রটা একেবারে আলাদা। ম্য়াচের পর সরকারিভাবে জানানো হয়, মাঠে উপস্থিতি কত। শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল বনাম হায়দরাবাদ ম্য়াচে দর্শক উপস্থিতির সংখ্যা অনেক প্রশ্নই তোলে। পরিস্থিতি এমনই, আইএসএল-র ওয়েবসাইটে সেই সংখ্যাও দেওয়া হয়নি (এই প্রতিবেদন লেখা অবধি)। মাঠের স্ক্রিনে সংখ্যাটা ছিল ৩২৫১। খালি চোখে দেখে মনে হয়ছে, এর চেয়েও কম। যুবভারতীতে ইস্টবেঙ্গল খেলছে অথচ দর্শক সংখ্যা এত্ত কম! প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।
আইএসএলে গত দু-মরসুমেই হতাশার পারফরম্য়ান্স ইস্টবেঙ্গলের। ইনভেস্টর সমস্যা, শেষ মুহূর্তে দল গড়া এসব ছিলই। সমস্যা কাটিয়ে দল ঘুরে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশায় ছিলেন সমর্থকরা। পরিস্থিতি অবশ্য বদলায়নি। এ মরসুমে ১৪ ম্য়াচ খেলে ৪টি জয়, ১০ ম্যাচে হার। দর্শক উপস্থিতির এই হতাশাজনক সংখ্যা শুধু হায়দরাবাদ ম্য়াচেই নয়। শুরুর দিকে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও ভালো ছিল। গত ১৮ নভেম্বর যুবভারতীতে ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে দর্শক সংখ্যা ১৭৭৭২। মরসুম যত এগিয়েছে সংখ্যা কমেছে। তার আগে ৪ নভেম্বর চেন্নায়িন এফসির বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি ছিল ১৭১৭০। টানা হারে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা মুখ ফেরাচ্ছেন এমনটা আন্দাজ করাই যায়। সংখ্যাটা এক সময় ৫ অঙ্কের থাকলেও সাম্প্রতিক চার অঙ্কের সংখ্যা আতঙ্কের। গত ১৩ জানুয়ারি ঘরের মাঠে জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচে দর্শক সংখ্যা ছিল ৬৭৫৮। বছরের শেষে অর্থাৎ ৩০ ডিসেম্বর বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল জিতলেও দর্শক উপস্থিতি ছিল ৯১৩৭।
সমস্যা কি শুধুই ইস্টবেঙ্গলের? এটিকে মোহনবাগানের পরিস্থিতি কী বলছে! সবুজ মেরুন সমর্থকদের ক্লাবের নাম নিয়ে অভিমান দীর্ঘ দিনের। একাংশ রিমুভ এটিকে আন্দোলনও করছে। তারপরও ঘরের মাঠে এটিকে মোহনবাগানের ম্যাচে দর্শক উপস্থিতি তুলনামূলক অনেকটাই বেশি। খুব বেশি আগের কথা নয়। গত ১৪ জানুয়ারি ঘরের মাঠে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে এটিকে মোহনবাগানের ম্যাচে সরকারি হিসেবে দর্শক উপস্থিতি ছিল ২৯৮৫৭। পরিসংখ্যান ঘাটলে দেখা যাবে, এ মরসুমে ঘরের মাঠে এটিকে মোহনবাগানের ম্যাচে ২০ হাজারের উপর দর্শক উপস্থিতি। প্রত্যাশিত ভাবেই এ মরসুমে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সবচেয়ে বেশি দর্শক উপস্থিতি ছিল ডার্বিতে। গত ২৯ অক্টোবর সেই সংখ্যাটা ছিল ৬২৫৪২।
পরিসংখ্যানে একটা বিষয় অন্তত পরিষ্কার, সমস্যাটা সবচেয়ে বেশি ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রেই। শুধুই কি পারফরম্যান্স এর কারণ? নাকি দল গঠন, ক্লাব কর্তা কিংবা ইনভেস্টরদের উপরও ক্ষোভ রয়েছে!