দোহা: কাতারের (Qatar) আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মরক্কোবাসীরা। কাতার যেন হঠাৎ করেই মিনি মরক্কো হয়ে গিয়েছে। চলতি কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup 2022) সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতিমধ্যেই ইতিহাস গড়ে ফেলেছে মরক্কো। প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ চারে খেলার সুযোগ পেয়েছে মরক্কো (Morocco)। এ বার হাকিম জিয়েচদের হাত ধরে বিশ্বকাপ দেশে আনার স্বপ্ন দেখছেন মরোক্কান সমর্থকরা। মরক্কো থেকে একাধিক সমর্থকরা ভিড় করছেন কাতারে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মরোক্কান সমর্থকরাও ধীরে ধীরে জড়ো হয়েছে কাতারে। হঠাৎ করে কাতার রওনা দিয়ে সেখানে থাকা-খাওয়া এবং ম্যাচ দেখার জন্য গ্যাঁটের কড়ি খসছে অনেক। তা বলে কী দেশের ইতিহাস রচনার সাক্ষী হবেন না মরোক্কানরা? তাই দেশকে সমর্থনে দোহায় হাজির কাতারে কাতারে মরোক্কান সমর্থকরা। সেই তথ্যই তুলে ধরল TV9Bangla।
বর্তমানে কাতারে রয়েছে দালিল আরমানি নামের এক মরোক্কাবন সমর্থক। তার জন্ম মরক্কোয়, কর্মসূত্রে সে আবার পর্তুগালের বাসিন্দা। পেশায় আরমানি শেফ। সে আবার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বড় ভক্ত। কিন্তু বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কো যখন রোনাল্ডোর পর্তুগালের মুখোমুখি হয়েছিল, তখন বিনা দ্বিধায় মরক্কোর জার্সি গায়ে চাপিয়ে নেন আরমানি। তিনি বলেন, “আমার দোহায় আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু মরক্কো নকআউটের জন্য যোগ্যতা অর্জন করে নেওয়ায় আমি অনলাইন রিসেল প্ল্যাটফর্মে টিকিট খোঁজা শুরু করি। তারপর এখানে আসা। আমি একজন মরোক্কান। আমি কোথায় বাস করছি সেটা বড় কথা নয়, আমি সবস ময় আমার দেশকেই সমর্থন করব।”
আমরানি আরও বলেন, “আমাদের দেশ বেশ বিক্ষিপ্ত। ৭০ এবং ৮০-র দশকে, যখন আমাদের অর্থনীতি খারাপ অবস্থায় ছিল, যখন দেশে সংঘাত ও অস্থিরতার পরিস্থিতি ছিল, তখন আমরা আমাদের ফুটবলার এবং কোচের মতো অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে ইউরোপে চলে গিয়েছিলাম। মরক্কোর বহু মানুষ দেশ ছেড়ে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে বসবাস করা শুরু করেন। ”
হাকিম জিয়েচ, আশরাফ হাকিমিরা নকআউটে উঠতেই আরমানির মতো একাধিক মরোক্কান সমর্থকরা কাতারে চলে এসেছেন। কাতারে এমনিতেই প্রায় ৪০ হাজার মরোক্কানের বাস। এই বিশ্বকাপ চলাকালীন প্রায় ৪০ হাজার সমর্থক জড়ো হয়েছেন কাতারে। মরক্কোর ম্যাচের টিকিটের দারুণ চাহিদা রয়েছে। মরক্কো ফুটবল ফেডারেশন ফার্স্ট-কাম-ফার্স্ট-সার্ভ ভিত্তিতে ৫ হাজারটি বিনামূল্যের টিকিট বিতরণ করেছে। কাতারি সরকারও তাদের জন্য টিকিট বরাদ্দ করেছে। কিন্তু এখনও সকল মরোক্কান সমর্থকের চাহিদা মেটাতে পারেনি। অনেকে মরোক্কান সমর্থক স্টেডিয়ামের আশেপাশে ঢুঁ মেরে চলেছেন টিকিটের আশায়।
বিশ্বকাপের মঞ্চে মরক্কোর মতো দেশের অভাবনীয় সাফল্য চমকে দিয়েছে একাধিক ফুটবল বিশেষজ্ঞদের। এ বার দেখার মরক্কো কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কিলিয়ান এমবাপেদের হারিয়ে, প্রথম বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে আরব্য কাব্য লিখতে পারে কিনা।