FIFA World Cup Retro Story: জানেন কি প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে ১৫০০ রিভলভার নিয়ে মাঠে এসেছিলেন দর্শকরা?

Qatar 2022: প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে ৮৯ মিনিটে উরুগুয়ের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন হেক্টর কাস্ত্রো। উরুগুয়ে দলের ২৫ বছর বয়সী এই গোলদাতা বিখ্যাত অন্য আর একটি কারণে।

FIFA World Cup Retro Story: জানেন কি প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে ১৫০০ রিভলভার নিয়ে মাঠে এসেছিলেন দর্শকরা?
Image Credit source: twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 09, 2022 | 10:00 AM

স্বরূপ মুখার্জী

১৯৩০ সালের ৩০শে জুলাই (1930 Football World Cup) অনুষ্ঠিত হয় সর্বপ্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনাল। আগামী কাতার বিশ্বকাপের উত্তেজনায় পুরোপুরি ভেসে যাবার আগে একবার ফিরে দেখা যাক প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালের এমন কিছু তথ্য এবং গল্প, যা আমরা হয়তো জানি না।

মাঠ, না যুদ্ধক্ষেত্র?

১৯৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ (Jules Rimet Trophy) ফাইনাল অর্থাৎ তৎকালীন জুলে রিমে কাপের ফাইনাল খেলা হয় উরুগুয়ের রাজধানী মন্তেভিডিও শহরের ‘এস্তাদিও সেন্তেনারিও ‘তে। ঘরের মাঠে উরুগুয়ের (Uruguay) খেলবে, লাতিন আমেরিকায় তাদের অন্যতম প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনার (Argentina) বিপক্ষে। সেই সময়ের উরুগুয়েতে সমাজবিরোধীদের সংখ্যা ছিল অগুন্তি। বিশ্বকাপ খেলতে আসা অন্যান্য দলগুলির মধ্যেও এ বিষয়ে আতঙ্ক ছিল যথেষ্ট। তবে ফাইনালের আগেই রেফারির কড়া দাবি ছিল যে, প্রতি দর্শককে উপযুক্ত তল্লাশি করেই তবেই মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে। ভীষণ কড়া তল্লাশি প্রক্রিয়ার শেষে যা দেখা গেল, তাতে সকলেরই চক্ষু চড়কগাছ। প্রায় ১৫০০টি আগ্নেয়াস্ত্র বা রিভলভার বাজেয়াপ্ত হয় মাঠে আসা দর্শকদের কাছ থেকে। ফুটবলের পরিসরে আর্জেন্টিনা এবং উরুগুয়ের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দীর্ঘদিনের। তাই বলে প্রায় ১৫০০ দর্শক মাঠে খেলা দেখতে আসবেন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে? ভাবা যায়?

প্রকৃতির ঠেলা, ‘মিস ‘ হল খেলা

এক দলের সমর্থকরা যখন অস্ত্রভাণ্ডার সহ মাঠে ভিড় করছে, আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা অথৈ জলে। আসলে আর্জেন্টিনা থেকে উরুগুয়ে আসতে হলে পেরোতে হয় দুই দেশের মাঝে থাকা একটি নদী। খেলার দিন সকাল থেকেই সেই নদী জমাট কুয়াশায় কবলে। সেই কুয়াশার আস্তরণ ঠেলে জাহাজ যাত্রা ছিল কার্যত অসম্ভব। অতঃপর জলপথেই আটকে রইলেন অজস্র সমর্থক। প্রথমার্ধে ২-১ গোলে এগিয়ে থাকলেও অবশেষে পরাজিত হয় আর্জেন্টিনা। প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপ ম্যাচে উরুগুয়ের কাছে ৪-২ গোলে পরাজিত হল তাদের দল। অথচ কুয়াশার ঠেলায় আটকে থাকা আর্জেন্টিনীয়রা জানতেও পারল না এই খবর।

নাম কিনলেন কারা..

হেক্টর কাস্ত্রো : প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে ৮৯ মিনিটে উরুগুয়ের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন হেক্টর কাস্ত্রো। উরুগুয়ে দলের ২৫ বছর বয়সী এই গোলদাতা বিখ্যাত অন্য আর একটি কারণে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে, বৈদ্যুতিক করাত চালাতে গিয়ে ভুল করে নিজেরই ডান হাতের কিছুটা অংশ কেটে ফেলেন। কনুইয়ের খানিকটা নিচ থেকে বাকি হাত বাদ দিতে হয়েছিল। হেক্টর কাস্ত্রো ভালো খেলোয়াড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন লড়াকু ফুটবলারও।

কোচ ‘ আলবার্তো ‘: ১৯৩০ সালের বিশ্বকাপে উরুগুয়ে দলের কোচ ছিলেন আলবার্তো। তখন মাত্র ৩১ বছর বয়স তাঁর। ফাইনাল জয়ের ফলে তিনি হয়ে যান বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বকাপজয়ী কোচ। এই রেকর্ড আজও অক্ষত। বিপক্ষ আর্জেন্টিনা দলের কোচ হুয়ান হোসে ট্রামুটোলার বয়স সেই সময় ছিল মাত্র ২৭। যদি আর্জেন্টিনা জিতত প্রথম বিশ্বকাপ, তা হলে ২৭ বছর বয়সী ট্রামুটোলাই হতেন সর্বকনিষ্ঠ বিশ্বকাপজয়ী কোচ। মুশকিল হচ্ছে, ইতিহাস বরাবর জয়ীদেরই মনে রাখে। প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে তাঁর টিম খেললেও ট্রামুটোলা তলিয়ে গিয়েছেন স্মৃতির অতলে।