দার-এস-সালাম: মহিলা ফুটবল টিমের এক প্লেয়ারকে নিয়ে কটুক্তি করার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছেন তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহ হাসান। শারীরিক কাঠিন্যের জন্য মেয়ে ফুটবলাররা বিয়ের উপযুক্ত নন। কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট যে এমন মন্তব্য করতে পারেন, তা শুনে আশ্চর্য হয়ে গিয়েছেন অনেকেই। যার পর কার্যত ধিক্কার শুনতে হয়েছে প্রেসিডেন্ট সামিয়াকে। আশ্চর্যের কথা হল, সামিয়া নিজেও এক মহিলা। তার পরও কী করে এই রকম মন্তব্য করতে পারলেন, সেটাই আশ্চর্যের।
গত রবিবার ছেলেদের জাতীয় টিম একটি আঞ্চলিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেই জয়ের উৎসব পালন করা হচ্ছিল। যেখানে হাজির ছিলেন প্রেসিডেন্ট মাসিয়াও। তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘যাদের বুক চ্যাপ্টা, আপনাদের মনে হতে পারে, তারা ছেলে, মেয়ে নন।’
বক্তব্যের শুরুতেই যা বলেছিলেন, তার পর যদি থেমে যেতেন, তা হলে হয়তো এতটা বিতর্কের মুখে পড়তে হত না। কিন্তু তার পর সামিয়া বলেছেন, ‘যদি ওদের মুখের দিকে তাকান, তা হলে হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। তার কারণ, আপনি যদি কাউকে বিয়ে করতে চান, চাইবেন যে, সে যেন আকর্ষণীয় হয়। এমন গুণাবলী থাকবে, সেই রকম মেয়েকে বিয়ে করতে চাইবেন আপনি।’
সারা বিশ্ব যখন ছেলে-মেয়ে সাম্য চাইছে, খেলাতেও ছেলেদের সমান প্রধান্য দেওয়ার কথা বলছে, সবচেয়ে বড় কথা হল, মেয়েদের অগ্রাধিকার দেওয়া কতটা জরুরি, তা যখন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির মতো সংস্থাও মেনে নিয়েছে টোকিও গেমসের সময়, তখন বিশ্বের কিছু মানুষের ধারণা ও ভাবনা একেবারে বদলায়নি। তাঁরা আজও প্রাচীন মনোভাব নিয়েই চলছেন। সামিয়া সেই রকম এক প্রেসিডেন্ট।
তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘মেয়েদের টিম ট্রফি জিতছে, আমাদের গর্বিত করছে। কিন্তু ওরা যখন আর খেলতে পারবে না, তখন কী করবে? বিবাহিত জীবন ওদের কাছে স্বপ্নের মতো। কারণ, আপনাদের কেউ যদি এদের কাউকে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যান, আপনার মা কিন্তু জিজ্ঞেস করবেন, পাত্রী ছেলে না মেয়ে!’
তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিোয়া হাসানের এই মন্তব্য ইউটিউবে ঝড় তুলেছে। কমেন্টে একজন লিখেছেন, ‘এই মহিলা তানজানিয়াকে আফগানিস্তান বানানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের মেয়েদের অধিকারের জায়গাটা কোথায়? আমাদের মায়েরা কিন্তু আমরা যা করতে চাই, আমরা যা হতে চাই, সেই ইচ্ছেকেই সমর্থন করেন।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি উঠেছে, যে ধরণের মন্তব্য করেছেন সামিয়া, তার জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত তাঁর।