Naresh Kumar: প্রয়াত দেশের টেনিস কিংবদন্তি নরেশ কুমার

বুধবার কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন টেনিস কিংবদন্তি নরেশ কুমার। বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।

Naresh Kumar: প্রয়াত দেশের টেনিস কিংবদন্তি নরেশ কুমার
Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 14, 2022 | 4:28 PM

কলকাতা:ভারতীয় টেনিসে যুগের অবসান। প্রয়াত টেনিস কিংবদন্তি নরেশ কুমার (Naresh Kumar Dies)। বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। কলকাতায় নিজের বাড়িতে বুধবার দুপুরে প্রয়াত হন তিনি। ভারতে টেনিসকে (Tennis) জনপ্রিয় করার পিছনে তাঁর অবদান অনেকখানি। আন্তর্জাতিক স্তরে নরেশই পেয়েছিলেন যথেষ্ট সাফল্য। ১৯৫৫ সালে উইম্বলডনের চতুর্থ রাউন্ডে পৌঁছেছিলেন। লিয়েন্ডার পেজকে টেনিস প্লেয়ার তৈরি করার পিছনে ডেভিস কাপ(Davis Cup) কিংবদন্তি নরেশ কুমারের অবদান ভোলার নয়। ২০২০ সালে নরেশ কুমার সম্মানিত হন দ্রোণাচার্য পুরস্কারে। ১৯২৮ সালের ২২ ডিসেম্বর ব্রিটিশ শাসিত ভারতের লাহোরে জন্ম নরেশ কুমারের। সেই প্রিয় শহর কলকাতাতেই শেষ নিঃশ্বাস ফেললেন নরেশ। তাঁর ঝলমলে কেরিয়ার তুলে ধরল TV9 Bangla

পাঁচের দশক জুড়ে প্রচুর সাফল্য পেয়েছেন তিনি। ১৯৪৯ সালে ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্ট থেকে উত্থান নরেশের। ওই প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে উঠেছিলেন। সেই বছরই ইংল্যান্ডের নর্দার্ন চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও উঠেছিলেন তিনি। ফাইনালে হেরে যান টনি মটব়্যামের কাছে। ইংল্য়ান্ড চ্যাম্পিয়নশিপেও সেই ফাইনালে পৌঁছে নিরাশ হতে হয় নরেশকে। জর্জ ওয়ার্থিংটনের কাছে হেরে যান। পরের বছর, ১০৫০ সালে বম্বে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেও তিন সেটের ম্যাচ নরেন্দ্র নাথের কাছে হারেন। সেই নরেশই আবার আইরিশ চ্যাম্পিয়নশিপে ১৯৫২ ও ১৯৫৩ সালে পর পর দু’বার চ্যাম্পিয়ন হন। ১৯৫২ সালের ওলেশ চ্যাম্পিয়নশিপেও খেতাব জেতেন। ১৯৫৫ সালের উইম্বলডনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিলেন। সিঙ্গলসে যা ছিল বিরাট প্রাপ্তি। এছাড়া উইম্বলডনে ডাবলসে তিনবার (১৯৫৩, ১৯৫৫, ১৯৫৮) এবং মিক্সড ডাবলসে (১৯৫৭) একবার কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখেন। ১৯৫৭ সালে এসেক্স চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন। ১৯৫৮ সালে সুইৎজারল্যান্ডে ওয়েজেন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হন নরেশ। সেটাই ছিল তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক খেতাব। ১৯৬৯ সালে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে টেনিস থেকে অবসর নেন নরেশ।

ভারত তো বটেই আন্তর্জাতিক টেনিস জগতেও নরেশ কুমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় নাম। পাঁচের দশক থেকে ধরলে নয়ের দশক পর্যন্ত টেনিসের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে ছিলেন তিনি। ডেভিস কাপের প্রাক্তন অধিনায়ক পরবর্তী প্রজন্মের টেনিস তারকা তুলে আনার কাজও নীরবে চালিয়ে গিয়েছিলেন। সাউথ ক্লাবের টেনিস কোর্ট একসময় ছিল নরেশের প্রিয় বন্ধু। খেলোয়াড় জীবনে তো বটেই এমনকী কোর্টের বাইরেও নরেশ ছিলেন অন্য ধারার মানুষ। বরাবর টেনিস জগতের এলিট প্লেয়ার হিসেবে গণ্য হতেন। ভীষণ স্টাইলিশ, মকবুল ফিদা হুসেইন থেকে মাইক ব্রিয়ারলি — বন্ধু তালিকায় এমন অনেক কিংবদন্তির নাম। স্ত্রী সুনিতাও অত্যন্ত পরিচিত চিত্রশিল্পী। এই নরেশই লিয়েন্ডারের কেরিয়ার গ্রাফ সাজিয়ে দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডে কীভাবে যাবেন, কার কাছে থাকবেন, কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন, আন্তর্জাতিক টু্র্নামেন্ট খেলার জন্য কী হবে লিয়েন্ডারের পরিকল্পনা, এসব নরেশই ঠিক করে দিয়েছিলেন। এমনকী ভারতীয় দলে লিয়েন্ডারের অন্তর্ভুক্তিতেও ছিল নরেশের ভূমিকা।

৯৩ বছর বয়সে নরেশের প্রয়াণ অনেকটাই ক্ষতি করে দিল ভারতীয় টেনিসের। বাংলার তো বটেই, নরেশের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ময়দান।