টপ স্পিন থেকে ব্যাক হ্যান্ড, টিটি-বোর্ড মাতাচ্ছে খুদে কিয়ান

Apr 06, 2021 | 4:07 PM

খুদে চেহারায় বোর্ডের নাগাল পাওয়া কঠিন, কষ্টেসৃষ্টে কোনও মতে বুক পর্যন্ত পৌঁছয়। তাতে কী? টপ স্পিন, ফোর হ্যান্ড, ব্যাক হ্যান্ড, একের পর এক অস্ত্র দিব্যি বেরোচ্ছে খুদের ঝোলা থেকে। খুদের নাম? কিয়ান রায়।

টপ স্পিন থেকে ব্যাক হ্যান্ড, টিটি-বোর্ড মাতাচ্ছে খুদে কিয়ান
মা-বাবার সঙ্গে ছোট্ট কিয়ান (সৌজন্যে-পৌলমী ঘটক ফেসবুক)

Follow Us

পায়েল মজুমদার

ওয়ার্ল্ড টেবিল টেনিস ডে (World Table Tennis Day) কবে বলো তো? ইচ্ছা থাকলেও প্রশ্নটা করা হয়নি। অবশ্য করলেও যে উত্তর মিলত এমন নয়। সাড়ে পাঁচ বছরের বয়েই গিয়েছে কুইজের উত্তর দিতে। তার সমস্ত মনোযোগ তখন খেলায়…বোর্ডে বল রাখতে হবে…ব্যস্‌! ওয়ার্ল্ড টেবিল টেনিস ডে আজ হোক বা অন্য কোনও দিন, তাতে তার কী যায় আসে?

মনোযোগের কিছু কিছু ফলও মিলছে। যেমন ছোট্ট হাতে কিছুটা এখনই বাগ মেনেছে টেবিল টেনিস RACKET। খুদে চেহারায় বোর্ডের নাগাল পাওয়া কঠিন, কষ্টেসৃষ্টে কোনও মতে বুক পর্যন্ত পৌঁছয়। তাতে কী? টপ স্পিন, ফোর হ্যান্ড, ব্যাক হ্যান্ড, একের পর এক অস্ত্র দিব্যি বেরোচ্ছে খুদের ঝোলা থেকে। খুদের নাম? কিয়ান রায় (Kiaan Roy)।

কে এই কিয়ান রায়?
মা পৌলমী ঘটক (Poulomi Ghatak), বাবা সৌম্যদীপ রায় (Soumyadeep Roy)। এ দেশের অন্যতম বিশিষ্ট টেবিল-টেনিস দম্পতির সাড়ে পাঁচ বছরের ছেলে কিয়ানের এই খেলায় হাতেখড়ি কিন্তু আরও বছর দুয়েক আগে। কী রকম? পৌলমী জানালেন, তাঁদের কোচিংয়ের সঙ্গেই কিয়ানের খেলার শুরু। তবে তিনি বা সৌম্যদীপ কখনও ছেলেকে জোর করেননি। নিজের আনন্দেই খেলতে চাইত ছেলে। এখনও তাই করে।

মা-বাবার সঙ্গে ছোট্ট কিয়ান (সৌজন্যে-পৌলমী ঘটক ফেসবুক)

প্রাথমিক ভাবে অবশ্য বাড়িতেও খেলত কিয়ান। কী রকম? সিলিং থেকে দড়ি দিয়ে বল ঝুলিয়ে দেওয়া হত। সেটিই হিট করার চেষ্টা করত সে। কিন্তু এত খেলার মধ্যে টেবিল টেনিসেই ঝোঁক কেন? এ ব্যাপারে ছেলের একেবারে ছোটবেলার কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দিলেন সৌম্যদীপ। টিভিতে তাঁর বা পৌলমীর খেলার সম্প্রচার শুরু হলে একেবারে চুপ করে যেত ছোট্ট কিয়ান। চোখের পাতা পড়া বন্ধ, খেলার দিকে নজর। নিজের অজান্তেই টেবিল-টেনিসে একটা আলাদা আগ্রহ তৈরি হয় তার।

প্রথাগত প্রশিক্ষণে মায়ের পাশাপাশি বাবাকেও সমানতালে পাশে পেয়েছে খুদে। এমনিতে ভীষণ দুষ্টু, ছটফটে। অ্যাভেঞ্জার্সের ভক্ত, হরেক কিসিমের মিচকেমিতে মহা আগ্রহ তার। কিন্তু খেলার কথা শুনলেই সমস্ত মনোযোগ মুহূর্তে ওই দিকে। লকডাউনের সময়টা এই কারণেই বড় মনোকষ্টে ছিল সে। খেলার জায়গা বন্ধ। এখন ধীরে ধীরে সমস্ত কোভিড-বিধি মেনে ফের চালু হয়েছে পৌলমী-সৌম্যদীপের কোচিং। বাকি ছাত্রছাত্রীর মতো কিয়ানও সেখানে খেলাধুলো করে। কিন্তু সাড়ে পাঁচ বছরেই এমন বোর্ড-কন্ট্রোল?

আরও পড়ুন: টেক্সাস ওপেনে দুরন্ত পারফরম্যান্স গল্ফার অনির্বাণের

তারকা দম্পতি হাসেন। তাঁদের মতে, এরকম বহু প্রতিভা এ রাজ্য তথা এ দেশের আনাচেকানাচে রয়েছে। তাদের খুঁজে এনে শুধু উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার অপেক্ষা। করতে পারলেই তারাও ছোট্ট হাতে টেবিল-টেনিস RACKET শাসন করবে, মেজাজে বোর্ড-কন্ট্রোল করবে, একের পর এক ব্রহ্মাস্ত্রে ঘায়েল করবে প্রতিপক্ষকে…ওয়ার্ল্ড টেবিল টেনিস ডে-তে এই স্বপ্নই দেখাচ্ছে কিয়ান ও তার মতো কচিকাঁচারা। নেই রাজ্যের মাঝে এই আশাই বা কম কী ?

Next Article