China And Pakistan: ভারতের তুলনায় পাকিস্তানের মোবাইল বাজার অপেক্ষাকৃত সস্তা। কিন্তু সেই দেশেরই পরিস্থিতি এতটাই সঙ্কটজনক হয়ে গিয়েছে যে, মানুষ সেখানে কম দামি ফোন কেনার কথা ভাবতে পর্যন্ত পারছেন না। চিনা সংবাদমাধ্যম সিনহুয়ার একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিগত এক বছরে পাকিস্তানে স্মার্টফোনের আমদানি 69.1 শতাংশ কমে গিয়েছে। পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, সে দেশে সস্তার ফোন কেনার পয়সাও নেই মানুষজনের কাছে। এমনই সময় পাকিস্তানে স্মাফোনের বিক্রিবাট্টা একপ্রকার থমকে গিয়েছে। খুব প্রয়োজন হলে মানুষজন সেকেন্ড হ্যান্ড মোবাইল কিনছেন। আবার পুরনো ফোনটা খারাপ হয়ে গেলে তা পরিবর্তন করার পরিবর্তে কোনও রকম ভাবে সারিয়ে নিয়েই কাজ সারছেন।
পাকিস্তানে কোনও স্মার্টফোন তৈরি হয় না, তা অনেকেই হয়তো জানেন। দেশটি স্মার্টফোনের জন্য সম্পূর্ণভাবে চিন এবং অন্যান্য দেশের উপরে নির্ভরশীল। তবে শুধুই মোবাইল ফোন নয়। সে দেশে মোবাইল সিগন্যালও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ যাদের কাছে পুরনো স্মার্টফোন রয়েছে, তাঁরাও নিজেদের ফোন থেকে কলিং, মেসেজিং, ইন্টারনেট ব্যবহার কিছুই করতে পারছেন না।
খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি না হলে আগামী দিনে সে দেশের পুরনো থেকে নতুন সব স্মার্টফোনের অবস্থা খেলনার মতোই হয়ে যাবে। সেখানে মোবাইলের দাম কেন বাড়ছে, সে বিষয়টা তো বোঝা গিয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানে মোবাইল টাওয়ার চলতে পারছে না কেন? আসলে, সেখানের অধিকাংশ জায়গাতেই 24-48 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ইলেকট্রিসিটি থাকছে না। আর সেই কারণেই মোবাইল টাওয়ারগুলি যথাযথ ভাবে চলছেও না এবং মানুষও তাঁদের মোবাইলে সিগন্যাল পাচ্ছেন না।
পাকিস্তানে স্মার্টফোনের আমদানি অর্ধেকেরও বেশি কমেছে। পাকিস্তানের ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিক্সের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পাকিস্তানে রেকর্ড 362.86 মিলিয়ন ডলারের মোবাইল আমদানি করা হয়েছে। এদিকে, 2021-21 আর্থিক বছরে 1,090 মিলিয়ন ডলারের মোবাইল ফোন সে দেশে আমদানি করা হয়েছিল। এরকম পরিস্থিতিতে স্মার্টফোন আমদানিতে 66.73 শতাংশ পতন রেকর্ড করা হয়েছে।
এই সব কিছুর মূলে রয়েছে পাকিস্তানের দুর্বল আর্থিক অবস্থা। দেনার দায়ে পাকিস্তানের জর্জরিত। বৈদেশিক ঋণ বেড়েছে সে দেশে। এই ঋণ শোধ করার মতো অবস্থায় নেই পাকিস্তান। পাক প্রধানমন্ত্রী IMF এবং অন্যান্য বিদেশী ব্যাঙ্কের সাহায্য আশা করছেন।