ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা হোক বা হোক সে পৃথিবীর অন্য কোনও প্রান্তে নিদারুণ কোনও সমস্যা, সাইবার অপরাধীরা নানাবিধ নতুন পন্থা অবলম্বন করে অপরাধের জাল বিস্তার করেই যাবে। জিমেল থেকে শুরু করে ফেসবুক, ফিশিং স্ক্যামের জন্য আর কোনও প্ল্যাটফর্ম বাকি রাখেনি স্ক্যামাররা। এক একটা আক্রমণ ধরা পড়ার পর যখন মানুষজন সতর্ক হবেন, আর একটা নতুন স্ক্যামিং (Scamming) পদ্ধতি নিয়ে আসবে জালিয়াতরা। ঠিক যে ভাবে ফেসবুকে (Facebook) এখন একটা মেসেজের (Message) মাধ্যমেই চলছে স্ক্যামিং। বহু ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে একটি নির্দিষ্ট মেসেজ পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর তার নীচেই থাকছে একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলে আপনার যে কী দশা হতে পারে, তা কী আর নতুন করে বলার প্রয়োজন আছে?
এবারের এই ফিশিং স্ক্যামটি চালানো হচ্ছে মূলত ফেসবুক মেসেঞ্জারেই। টুক করে চলে আসছে মেসেজটা, যাতে লেখা হচ্ছে, “লুক হোয়াট আই ফাউন্ড”। অর্থাৎ “দেখ আমি কী পেয়েছি”। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেসেজটি সামান্য হলে কী হবে, ইউজারদের বড়সড় ক্ষতি হতে পারে। তবে ইদানিং কালে স্ক্যামাররা যেমন নতুন কোনও ব্যক্তিকে এই ধরনের মেসেজ পাঠাচ্ছে, তেমনই আবার এই ধরনের প্রতারণামূলক বার্তা পাঠানো হচ্ছে পরিচিতদের কাছেও। অর্থৎ যাদের অ্যাকাউন্ট তারা আগেও হ্যাক করেছিল। আর এটাই হল, তাদের একটি নতুন ফন্দি! এই ভাবেই তারা সক্রিয় থেকে অতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে সাম্প্রতিক অতীতে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মেসেঞ্জারে এই ধরনের মেসেজ কী অপরিচিত কোনও ব্যক্তি পাঠাচ্ছে? অনেকেই অভিযোগ করছেন এই ধরনের প্রতারণামূলক মেসেজ অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়ার। অনেকে আবার এমন কথাও জানিয়েছেন যে, তাঁদের পরিচিত কেউই এমন মেসেজ পাঠিয়েছে। এখন পরিচিত কেউ যদি এমন মেসেজ পাঠায়, তাহলে ধরে নিতে হবে যে, তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি এই ভাবেই হ্যাক করা হয়েছে। এডিথ কোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইবার সিকিওরিটি এক্সপার্ট লেসলি সিকোজ় বলছেন, “ফেসবুকের বন্ধুদের কাছ থেকে আসা এমন মেসেজে ব্যবহারকারীদের ক্লিক করার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা গিয়েছে। অপরিচিতরা কী মেসেজ পাঠালেন, তা অনেকে খুলেও দেখেন না।”
মেসেঞ্জারে “লুক হোয়াট আই ফাউন্ড” টেক্সট মেসেজের সঙ্গে পাঠানো হচ্ছে গুচ্ছের ইমোজিও। লিঙ্কে ক্লিক করলে ইউজারদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে একটি ওয়েবপেজে। সেই ওয়েবপেজে ফেসবুক ব্যবহারকারীকে বলা হচ্ছে, তার লগইন ক্রেডেনশিয়ালস দিতে অর্থাৎ ফেসবুকের লগইন আইডি, পাসওয়ার্ড এগুলি দিয়ে দিতে। আপনি একবার সেই সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য দিয়ে দিলে আপনার স্পর্শকাতর এবং একান্ত গোপনীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে ব্যবহারকারীরা। আর তার মধ্যে দিয়ে আপনার ডিভাইসে তা সে স্মার্টফোন হোক বা ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপ ইনস্টল করা হচ্ছে ম্যালওয়্যার। সেখান থেকে আপনার আরও তথ্য জেনে নিচ্ছে স্ক্যামাররা। হতে পারে তা আপনার ব্যাঙ্কের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
তবে এই স্ক্যাম আজকের নয়, অনেক দিনের পুরনো। জালিয়াতরা নতুন ভাবে আপনার কাছে তা হাজির করছে, যা থেকে বড়সড় বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন আপনি। তাই, সতর্ক থাকুন, সজাগ হন। এই ধরনের কোনও ফাঁদে পা দিয়ে প্রলুব্ধ হতে যাবেন না।
আরও পড়ুন: মেটাভার্সে জমি কিনলেন দালের মেহেন্দি, নাম রাখলেন ‘বল্লে বল্লে ল্যান্ড’
আরও পড়ুন: বাড়িতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ? এক সেকেন্ডে তাদের গিলে নেবে ২১৭ টাকা দামের ছোট্ট এই ডিভাইস!