2000 Thousand Year Old Comb: লৌহযুগেও কি মাথার চুলে চিরুনি চালাত মানুষ? তখনও মানবজাতি এত সৌখিন ছিল? তবে প্লাস্টিক বা কাঠের চিরুনি নয়। মানুষের মাথার খুলি দিয়ে তৈরি চিরুনি ব্যবহার হত সেই সময়। ভাবলেই অবাক লাগছে তাই না? সম্প্রতি কেমব্রিজ শহরের প্রায় 4 কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে বার হিল নামক একটি জায়গায় ‘মিউজ়িয়াম অফ লন্ডন আর্কিওলজি’ (MOLA)-র প্রত্নতত্ত্ববিদরা খননকার্য চালিয়ে এই চিরুনি আবিষ্কার করেছেন। প্রত্নতত্ত্ববিদদের দাবি, এটি 750 খ্রিস্ট পূর্বাব্দের। অর্থাৎ, লৌহযুগের চিরুনি।
পুরাতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন, সাধারণত প্রাচীন চিরুনি কাঠ বা ধাতু দিয়ে তৈরি হত। কিন্তু বর্তমানে তারা এমন একটি চিরুনির সন্ধান পেয়েছেন, যা মানুষের মাথার খুলি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বার হিল গ্রামে তিন বছর ধরে খননকার্য চলছিল, যা 2018 সালে শেষ হয়। আর সেখান থেকেই পুরাতত্ত্ববিদরা অনেক পুরনো জিনিস উদ্ধার করেছেন। সেগুলির সবই খ্রিস্টপূর্ব 750 থেকে 43 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। অর্থাৎ তখন ছিল লৌহযুগের সময়। সেই লৌহ যুগের চিরুনিটি 2 ইঞ্চি লম্বা এবং এটির প্রায় এক ডজন দাঁত রয়েছে। তাঁরা এই চিরুনির নাম দিয়েছেন বার হিল কম্ব (Bar Hill Comb)।
বার হিল কম্ব (Bar Hill Comb) নাম দেওয়ার কারণ:
পুরাতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, তাঁরা এই চিরুনির খোঁজ বার হিল গ্রামের খনি থেকে পেয়েছেন। তাই এই চিরুনির নাম দিয়েছেন বার হিল কম্ব। শুধু এই চিরুনিই নয়, বার হিল গ্রামের খনি থেকে প্রায় 2.80 লক্ষ পুরনো জিনিস পাওয়া গিয়েছে। যার তদন্ত এখনও চলছে। বর্তমানে পুরাতত্ত্ববিদরা এই চিরুনির ব্যবহার সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে চিরুনির মাঝখানে একটি গোল ফুটো দেখে তাঁরা মনে করেছেন, এটি সাজসজ্জার উদ্দেশ্যে ব্য়বহার করা হত ঠিকই, কিন্তু সেই সময়ের মানুষরা এই চিরুনিকে
তাবিজ হিসেবেও ব্য়বহার করতেন। অর্থাৎ বোঝাই যায়, সেই সমাজে এই চিরুনিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল।
এই চিরুনিটি দেখে পুরাতত্ত্ববিদরা অনুমান করেছেন, কীভাবে লৌহ যুগের মানুষ “মানবদেহের দেহাবশেষ” (Human Body) ব্যবহার করত। পুরাতত্ত্ববিদ মাইকেল মার্শাল (Michael Marshall) বলেন যে, “বার হিল চিরুনিটি লৌহ যুগের মানুষদের কাছে বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”
কেমব্রিজশায়ারে আরও দু’টি এইরকম দেখতে বস্তু পাওয়া গিয়েছে। 1970 এবং 2000 এর দশকে। আর অবাক ব্য়পার হল, দুটোই দেখতে চিরুনির মতো। মাইকেল মার্শাল জানান, “লৌহ যুগের ঐতিহ্য বোঝা সহজ নয়। তবে পুরনো জিনিসগুলি পরীক্ষা করার পরে, সমস্ত প্রত্নতাত্ত্বিকরা ধারণা পান যে, সেগুলি কীভাবে ব্যবহার করা হত।”