Totoaba Fish: বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিকের ব্যবহার যে হারে বেড়ে চলেছে, তাতে বিপদে পড়েছে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম স্তন্যপায়ী সামুদ্রিক (Smallest Mammal) প্রাণী। 2.5 মিলিয়ন বছর আগে অস্তিত্বে আসা এই প্রাণীগুলি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। কারণ গবেষকরা জানাচ্ছেন, তাদের মধ্যে মাত্র 10টি পুরো পৃথিবীতে অবশিষ্ট রয়েছে। যা ক্যালিফোর্নিয়ার মেক্সিকো উপসাগরে রয়েছে। এই প্রাণীদের বলা হয় vaquita porpoises বা Totoaba মাছ। গবেষকরা এই প্রাণীদের বেঁচে থাকার উপায় খুঁজছেন। উদ্বেগের বিষয় এই যে, 1950 সাল থেকে প্রায় 8 দশমিক 3 বিলিয়ন টন প্লাস্টিক অপরিশোধিত তেল থেকে তৈরি করা হয়েছে। এর প্রায় 30 শতাংশ এখনও বাড়ি, গাড়ি বা কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছে। আরও 10 শতাংশ প্লাস্টিক পুড়ে গিয়েছে। প্লাস্টিকের বাকি 60 শতাংশ বর্জ্য সমুদ্রের পরিবেশ দূষণ (Water Pollution) ঘটাচ্ছে। আর সেই দূষণ এত পরিমানে বেড়ে গিয়েছে যে, ক্ষুদ্রতম স্তন্যপায়ী (Mammal) সামুদ্রিক প্রাণীদের বাঁচানো যাচ্ছে না। আর এই কারণেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বিজ্ঞানীরা (Scientists)।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (IUCN) বলছে, উৎপাদিত প্লাস্টিকের প্রায় 2 শতাংশ সমুদ্রের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। 2012 সালের এক সমীক্ষা অনুসারে, বিশ্বের সমুদ্রে প্রায় 165 মিলিয়ন টন প্লাস্টিকের বর্জ্য রয়েছে। বর্তমানে প্রায় এক দিনে 8 মিলিয়ন প্লাস্টিক সমুদ্রগুলিতে প্রবেশ করছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্য়ে সামুদ্রিক প্রাণীদের অনেকাংশে বিলুপ্তি ঘটবে।
vaquita porpoises-এর দৈর্ঘ্য 4 থেকে 5 ফুট। এই মাছগুলির একটি বিশেষ ধরণের মূত্রাশয় রয়েছে, যা চিনে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। যার কারণে তাদের ধরা হচ্ছে। মেক্সিকো টোটোবা মাছ ধরা এবং জিলনেটিং ব্যবহার করাকে অবৈধ করেছে। কিন্তু এ কাজ চলছে নির্বিচারে। আর তারফলেই তাদের সংখ্য়া প্রচুর পরিমানে কমছে।
বিজ্ঞানী বারবারা টেলর এবং লরেঞ্জো রোজাস ব্রাচো, 20 বছর ধরে এই জীবের (vaquita porpoises) ঝুঁকি নিয়ে গবেষণা করেছেন। আর বর্তমানে সেই গবেষণার ফলাফল তাঁদের উদ্বিগ্ন করেছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, জেলিং বন্ধ করাই vaquita porpoises বা Totoaba মাছদের জনসংখ্যা বাড়ানোর একমাত্র উপায় হবে। গবেষণার সহ-লেখক রোজাস ব্রাচো বলেন, যদি জিলনেটিং বন্ধ করা হয়, তবে তাদের সংখ্যা বাড়তে পারে। তারা আরও জানাচ্ছেন, প্লাস্টিকের ধ্বংসাবশেষ যে পরিমাণে মহাসাগরে প্রবেশ করছে, তা যদি থামানো না যায়, তবে 2050 সালের মধ্যে সমুদ্রে মাছের চেয়ে বেশি প্লাস্টিক থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছ, উদ্ভিদ এবং প্রাণী মানব প্রোটিনের প্রয়োজনের একটি বড় অংশকে পূরণ করে। যার অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াবে সমুদ্র দূষণ।