চাঁদের দক্ষিণ মেরু নিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চাঁদের অন্যান্য অংশ নিয়ে গবেষণা হলেও, দক্ষিণ মেরু এখনও অন্ধকারেই রয়েছে। আর এই অন্ধকারাচ্ছন্ন অঞ্চলে কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা জানতেই অভিযান শুরু করতে চলেছে চিন। নতুন বছরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে তিনটি অভিযান চালাবে চিন। সম্প্রতি এমনটাই শোনা গিয়েছে। সেই সঙ্গে এও শোনা গিয়েছে, চাঁদের মাটিতে লুনার স্টেশনও তৈরি করবে চিন।
২০২২ সালে মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে জোরকদমে ময়দানে নেমেছে চিন। চতুর্থ পর্যায়ের চন্দ্রাভিযানের অনুমতি দিয়েছে বেজিং। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আর্টেমিস মিশন (চাঁদ) সম্পর্কে নতুন তথ্য প্রকাশ করার পরেই চিন তাদের নতুন তিনটি লুনার মিশনের কথা ঘোষণা করেছে। আগামী দিনে চন্দ্রপৃষ্ঠে চিন একটি রিসার্চ স্টেশন তৈরি করবে বলেও শোনা গিয়েছে। এর ফলে চাঁদের পরিবেশ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত ভাবে গবেষণা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এর পাশাপাশি চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন সম্পদ কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে সেই ব্যাপারেও নতুন তথ্য জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
China National Space Administration (সিএনএসএ) ঘোষণা করেছে আগামী দিনে চিন চাঁদের মাটিতে বিশেষত চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে যে তিনটি অভিযান চালাবে সেগুলি যেসব মহাকাশযান বা স্পেসক্র্যাফটের উপর নির্ভর করে হবে তা হল Chang’e-6, Chang’e-7 এবং Chang’e-8। আর চাঁদের বুকে লুনার রিসার্চ স্টেশন তৈরির হন্য চিন রাশিয়ার সঙ্গে একযোগে কাজ করবে বলেও জানানো হয়েছে। একথা জানিয়েছেন সিএনএসএ- র ডেপুটি ডিরেক্তর Wu Yanhua। Changé-6 চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসবে। এরপর Chang’e-7 স্পেসক্র্যাফট বা মহাকাশযান পাঠানো হবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে। তবে সবার প্রথমে এই অঞ্চলে অর্থাৎ লুনার সারফেসে স্যাম্পেল সংগ্রহ করতে গিয়েছিল Chang-5। সেবারের মিশনে গত বছরই নমুনা সংগ্রহ করে ধরিত্রীতে ফিরে গিয়েছে মহাকাশযান। অন্যদিকে, জানা গিয়েছে Chang’e-7 স্পেসক্র্যাফটের পর চাঁদের মাটিতে লুনার সায়েন্টিফিক রিসার্চ স্টেশন তৈরি করার জন্য পৌঁছোবে Chang’e-8 মহাকাশযান।
প্রাথমিক ভাবে চাঁদের মাটি পর্যবেক্ষণ করবে এই তিন মহাকাশযান। তারপর ২০২৫ সালের মধ্যে লুনার বেস তৈরির কাজ শুরু হবে। এখনও চূড়ান্ত এলাকা বেছে নেওয়া হয়নি। চূড়ান্ত পর্যায়ে কোনও সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়নি। তবে অনুমান করা হচ্ছে, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর Amundsen ক্র্যাটার বা গহ্বরকে এই রিসার্চ স্টেশন তৈরির জন্য বেছে নেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন- Tianwen-1: মঙ্গলগ্রহের উত্তর মেরুর চোখ ধাঁধানো ছবি! প্রকাশ্যে আনল চিনের তিয়ানওয়েন-১
আরও পড়ুন- Mars: রেড ভেলভেট কেক নাকি মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠদেশ? ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির ছবি নিয়ে ধন্দে নেটিজ়েনরা
আরও পড়ুন- Mars And Rainbow: মঙ্গলগ্রহে কেন রামধনু দেখা যায় না? সবিস্তারে বুঝিয়ে দিলেন নাসার বিশেষজ্ঞ