Smiling Paragliding Gecko: টিকটিকি দেখে অনেকে ভয়ে পালিয়ে যান! অনেকের কাছেই এই সরীসৃপের চেহারা ভয়ঙ্কর। কিছু কিছু টিকটিকির প্রজাতি আবার অত্যন্ত বিষাক্ত। তবে, টিকটিকি নিয়ে এদেশে কুসংস্কারও রয়েছে। কবির কবিতা ধার করে অনেকেই সত্যি টিকটিকির প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, ‘টিকটিকি তিন বার করে যদি টিকটিক’! শরীরের উপরে টিকটিকি পড়লে তা অশুভ বলেও মনে করেন অনেকে। তবে সম্প্রতি গবেষকরা ভারতে এমনই এক টিকটিকির সন্ধান পেয়েছেন, যার বিষয়ে জানলে আপনি সত্যিই প্রেমে পড়ে যাবেন। সদাহাস্য মুখ তার, বাঁদরের মতো এই গাছ থেকে সেই গাছ লাফিয়েও যেতে পারে সে। দিন কয়েক আগেই দেশের এক প্রান্ত থেকে আবিষ্কার করা হয় এই সরীসৃপটিকে।
নেচারে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে এই টিকটিকির নাম প্যারাগ্লাইডিং গেকো (Paragliding Gecko)। মিজ়োরাম ইউনিভার্সিটি, ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর বায়োলজি এবং জার্মানির টুবিনজেনের গবেষকরা এই টিকটিকির সন্ধান পান। ইন্দো-মায়ানমার সীমান্তে আবিষ্কার করা হয় বিরল প্রজাতির এই টিকটিকি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একে প্যারাগ্লাইডিং গেকো বলা হচ্ছে কেন? আসলে এরা বাঁদরের মতো এক গাছ থেকে অপর গাছে উড়ে যেতে পারে। গেকো আকারে সাধারণ টিকটিকির থেকে অনেকটাই ছোট হয়। বেশির ভাগ মাংসাশী টিকটিকিই পাওয়া যায় বিশ্বের উষ্ণ জলবায়ু প্রবণ অঞ্চলগুলিতে। গবেষকরা উত্তর পূর্ব ভারতে টিকটিকির সংখ্যা গণনা করার সময় হাসি মুখের এই টিকটিকির সন্ধান পান।
মিজ়োরামের নামানুসারে এই ধরনের গেকোর বৈজ্ঞানিক নাম গেকো মিজোরামেনসিস (Gekko Mizoramensis)। যদিও এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে যাওয়ার মতো অভ্যাসের কারণে এদের আর এক নাম প্যারাগ্লাইডিং গেকো। বাতাসে ওড়ার জন্য এরা শরীর ও লেজ-সহ ত্বককে ফ্ল্যাপ করতে পারে। এই ধরনের গেকো দেখা যায় মূলত বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ায়। তবে, ভারতে এই প্রথম বিজ্ঞানীরা এর সন্ধান পেলেন। এদের মধ্যে কিছু টিকটিকি আবার 200 ফুট পর্যন্ত উড়তে পারে।
নেচারে রিপোর্টটি যিনি লিখেছেন, সেই লেখ জিশান এ মির্জ়া বলছেন, এরা শূন্যে ওড়ার সময় বিপদ থেকে নিজেদের বাঁচাতে একটি বিশেষ গন্ধ বের করে। বিশেষ করে সন্ধেবেলা এরা বেশি তৎপর থাকে। সেই সময়েই তারা সবথেকে বেশি শিকার করে। বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়, মথ খেয়ে বেঁচে থাকে প্যারাগ্লাইডিং গেকোরা। ভারতে এটিকে যখন দেখা গিয়েছিল, তখন তা মাটি থেকে প্রায় 150 থেকে 360 সেন্টিমিটার উচ্চতায় ছিল। এদের আর একটি প্রজাতি রয়েছে, যার নাম গেকো পোপেনসিস। তবে, তাদের আকার ও রঙের ধরন কিছুটা আলাদা। দুই প্রজাতির মধ্যে 7-14 শতাংশের পার্থক্য রয়েছে।