Buddhadeb Bhattacharya: পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে শেষবারের মতো বেরলেন, ফেলে রেখে গেলেন বর্ণময় স্মৃতি!

টানা ১১ বছর মুখ্যমন্ত্রী। দল আর সরকারের ভোল বদলের চেষ্টায় বড় হয়ে গিয়েছিল একটা তকমা। সেঁটে যাওয়া সেই তকমা ঝকমকে ছিল। ছিল না সব মত, পথ সঙ্গে নিয়ে চলার দিশা। সেই ছিদ্র দিয়েই বোধহয় ঢুকে পড়েছিল বিপর্যয়ের বীজ। একের পর এক নির্বাচনী জয়ে ঘুণ পোকা ধরে ক্ষমতার কাঠামোয়। একসময় জ্যোতি বসু মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে বেরিয়েও এসেছিলেন। অভিমান ভুলে ফিরে আসেন পরে।

Buddhadeb Bhattacharya: পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে শেষবারের মতো বেরলেন, ফেলে রেখে গেলেন বর্ণময় স্মৃতি!
| Updated on: Aug 08, 2024 | 8:01 PM

“ও প্রিয় চিরপ্রণম্য অগ্নি আমাকে পোড়াও।”
কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের আর্তিটা অনুচ্চারিত ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জীবনে। কিন্তু আগুন তো আগেও ছুঁয়ে গেছে তাঁকে। বাইরে রাজনীতির আগুন, অন্দরে সাফল্য-ব্যর্থতার আগুন। সেসব ফেলে রেখেই আজ অনন্তের পথে বুদ্ধবাবু।

সময় পেরিয়ে বুদ্ধদেব। ছাত্র রাজনীতির সূত্রেই তাঁর বামপন্থায় হাতেখড়ি। তবে ভালোলাগার জগত্‍ ছিল ছড়ানো। বিশ্ব রাজনীতির সঙ্গে বিশ্ব সাহিত্যও ছুঁয়ে যেত তাঁর সহজ সরল জীবনকে। অনেক অনেক স্রোতধারা এসে নিয়ে যেত সাগর অভিমুখে।

তাঁর পূর্বসূরী জ্যোতি বসু, যখন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন, তখন রাইটার্সের গেটে জনতার ঢেউয়ের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতার কুর্সিতে বসেছিল বামেরা। সময়টা ছিল ১৯৭৭। জ্যোতি বসুর হাত থেকে গুরুদায়িত্ব পেয়েছিলেন, নতুন সহস্রাব্দে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে। শুরু হয়েছিল অতীত ছাপিয়ে নতুনের প্রয়াস। মুখ্যমন্ত্রী হিসবে নতুন ইনিংস। সব নতুন সফর সবার সফল হয় না। ঝড়ঝঞ্ঝার মাঝে পড়ে পথভ্রষ্ট হন কত তীরমুখী যাত্রী। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রিয় সাহিত্যিক গ্যাব্রিয়াল গার্সিয়া মার্কেসের সেই ডুবে যাওয়া জাহাজের নাবিকের মতো।

টানা ১১ বছর মুখ্যমন্ত্রী। দল আর সরকারের ভোল বদলের চেষ্টায় বড় হয়ে গিয়েছিল একটা তকমা। সেঁটে যাওয়া সেই তকমা ঝকমকে ছিল। ছিল না সব মত, পথ সঙ্গে নিয়ে চলার দিশা। সেই ছিদ্র দিয়েই বোধহয় ঢুকে পড়েছিল বিপর্যয়ের বীজ। একের পর এক নির্বাচনী জয়ে ঘুণ পোকা ধরে ক্ষমতার কাঠামোয়। একসময় জ্যোতি বসু মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে বেরিয়েও এসেছিলেন। অভিমান ভুলে ফিরে আসেন পরে।

সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস বেড়ে উঠেছিলেন কলকাতার বাইরে। আর বুদ্ধদেব ছিলেন একেবারে কলকাত্তাইয়া। দুই মেরু এসে মিশে গিয়েছিল রাজনীতির প্রাঙ্গনে। অনিল বিশ্বাসের অকাল প্রয়াণে হারিয়ে যায় সেই বোঝাপড়া।

অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া শেষের দিকে চলতে পারতেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা কালে সেই অক্সিজেনরই তো বড় অভাব। তবে চোখের আলো ক্রমশ কমে আসায়, কষ্টটা তীব্র হয়েছিল বইপোকা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। ডিকটেশন দিয়েও বই লেখা শেষ করেন তিনি। আর এবার সব শেষ।

Follow Us: