Israel-Iran Conflict: আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি নাগরিকদের জন্য ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি জারি করেছে, ভারতও সেই পথেই!

War Situation: আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানির মত দেশগুলো তাঁদের নাগরিকদের জন্য ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি জারি করেছে। ভারতও সেই পথেই। ইরান-ইজরায়েলে ভারতীয়দের যেতে নিষেধ করার পাশাপাশি ওই দুই দেশে থাকা ভারতীয়দেরও সতর্ক করেছে বিদেশমন্ত্রক। বলা হয়েছে যে ইজরায়েল ও ইরানে বসবাসকারী ভারতীয়রা অবিলম্বে যেন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবং নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেন। দেখুন গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইজরায়েলের হামলায় নানা দেশে ইরানের একাধিক সেনাকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ১লা এপ্রিলের ঘটনার পর ইরান আর সংযত থাকার কথা ভাবছে না।

Israel-Iran Conflict: আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি নাগরিকদের জন্য ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি জারি করেছে, ভারতও সেই পথেই!
| Edited By: | Updated on: Apr 13, 2024 | 9:55 PM

যে কোনও মুহূর্তে। যে কোনও সময় শুরু হয়ে যাবে যুদ্ধ। খুব বেশি হলে সোমবার। সোমবারের মধ্যেই ইরানের প্রথম মিসাইল উড়ে যাবে ইজরায়েলের দিকে। গত শনিবার রাতে কূটনৈতিক চ্যানেলে ওয়াশিংটনকে বার্তা পাঠায় তেহরান। বলা হয় ইজরায়েলকে চরম শিক্ষা দিতে আমরা এবার অ্যাটাক করব। আমেরিকা যেন এই যুদ্ধে না জড়ায়। সোমবার আমি স্ট্রেট কাটে আপনাদের বলেছিলাম দেশের সেনাপ্রধানকে তলব করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা খামেনেই। আর্মির কথা একবার শুনে নিয়েই ইজরায়েলে হামলার গ্রিন সিগন্যালটা দিয়ে দেবেন তিনি। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রায় এরকমই খবর দিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে বলা হয়েছে খামেনেইয়ের এক উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন আমাদের সুপ্রিম লিডার এখন শেষ মুহূর্তের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। ইজরায়েলে হামলার ব্লু প্রিন্ট তাঁর টেবিলেই রয়েছে। যে কোনও সময় আমরা হামলা করব। খুব বেশি হলে তা সোমবার পর্যন্ত গড়াবে। বাইডেন প্রশাসন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এই রিপোর্ট ঠিক বলেই জানিয়েছে। ইজরায়েল এখনও গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধবিরতিতে না যাওয়ায় দিনকয়েক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন ইজরায়েল ভুল করছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সমালোচনা করেন তিনি। তবে এবার ইরানের হামলার খবর আসতেই হোয়াইট হাউসে প্রেস মিটে বাইডেন জানিয়েছেন ইজরায়েলের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে আমেরিকা সবরকম পদক্ষেপ করবে। আমরা সবসময় তেল আভিভের পাশে আছি। দেখুন ইজরায়েলের সঙ্গে ইরানের সীমান্ত নেই। ইরান ইজরায়েলের দিকে মিসাইল ছুঁড়লে তা ইরাক-সিরিয়া-জডর্নের আকাশসীমা দিয়ে উড়ে যাবে। বুঝতেই পারছেন হুলস্থুল ব্যাপার। এই মুহূর্তে ইরাকে ও সিরিয়ায় প্রচুর মার্কিন সেনা আছে। ইউএস আর্মির বেস আছে। এসবের নিরাপত্তা আর ইজরায়েলকে প্রোটেক্ট করতে একাধিক স্ট্র্যাটেজিক লোকেশনে মার্কিন রণতরীও পাঠিয়ে দিয়েছেন বাইডেন। আর ইজরায়েলে জারি করা হয়েছে চরম সতর্কতা। সেনাবাহিনীর ছুটি বাতিল হয়েছে। এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম জোরদার করা হয়েছে। বসতি এলাকায় আরও বম্ব শেল্টার তৈরি করা হচ্ছে। মার্কিন প্রশাসনের কাছে খবর ইরান শুরুতে উত্তর ও দক্ষিণ ইজরায়েলের কিছু এলাকা টার্গেট করতে পারে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন আমরা জানি ইরান হামলা করবেই। আর তা ঠেকাতে আমরা তৈরি। সবমিলিয়ে উত্তেজনা চরমে। যুদ্ধ শুরু হওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানির মত দেশগুলো তাঁদের নাগরিকদের জন্য ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজারি জারি করেছে। ভারতও সেই পথেই। ইরান-ইজরায়েলে ভারতীয়দের যেতে নিষেধ করার পাশাপাশি ওই দুই দেশে থাকা ভারতীয়দেরও সতর্ক করেছে বিদেশমন্ত্রক। বলা হয়েছে যে ইজরায়েল ও ইরানে বসবাসকারী ভারতীয়রা অবিলম্বে যেন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবং নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেন। দেখুন গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর ইজরায়েলের হামলায় নানা দেশে ইরানের একাধিক সেনাকর্তার মৃত্যু হয়েছে। তবে ১লা এপ্রিলের ঘটনার পর ইরান আর সংযত থাকার কথা ভাবছে না। ওইদিন সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে বিমান হামলা হয়। অত্যাধুনিক ক্রিপেল মিসাইলের আঘাতে নিহত হন ইরানের ৩ আর্মি জেনারেল ও ৪ মিলিটারি অ্যাডভাইসার। এরপরই তেল আভিভের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয় তেহেরান। আর এই যুদ্ধ মানে একদিকে থাকবে ইরান, সিরিয়া, লেবানন। তাদের পিছনে রাশিয়া। অন্যদিকে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়া। তাই full fledged war একবার শুরু হয়ে গেলে অচিরেই তা মিনি বিশ্বযুদ্ধের চেহারা নিতে পারে বলে আশঙ্কায় সারা দুনিয়া।

দুনিয়ার এক প্রান্তে যখন যুদ্ধের ঘনঘটা, তখন আমাদের দেশে যুদ্ধের মহড়া, সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকার প্রস্তুতি। মাটি থেকে ১৭ হাজার ফুট উঁচুতে ট্যাঙ্কের মহড়ার মতো কঠিন কাজ আর কী হতে পারে, হাতে গুণে বলা যায়। আমি বলছি না, অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তারাই বলছেন। তাঁরা বলছেন, ১৭ হাজার ফুট উপরে ট্যাঙ্ক যুদ্ধের জন্য তৈরি থাকার মানে যে কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি থাকা। আমার পাশের ছবিটা লক্ষ্য করুন, লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের ঘাড়ের কাছে ১৭ হাজার ফুট উঁচুতে ট্যাঙ্কের মহড়া চলছে। মহড়া দিচ্ছে ভারতীয় সেনার ত্রিশক্তি কোর। শক্রপক্ষের ট্যাঙ্ককে উড়িয়ে দেওয়ার মহড়া দিচ্ছে ভারতের অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল। মাত্র কয়েক মাস আগে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গাইডেড মিসাইল নাগ-থ্রি সেনার হাতে এসেছে। এটি সাঁজোয়া গাড়ি, কপ্টার বা যুদ্ধবিমান থেকে ছোঁড়া যায়। মাটি থেকে ছোঁড়া আকাশ ৪ কিলোমিটারের মধ্যে ট্যাঙ্ককে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। আকাশ থেকে ছোঁড়া হলে এর ক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। সাত থেকে দশ কিলোমিটার দূরে থাকা ট্যাঙ্ককে গুঁড়িয়ে দিতে পারে নাগ। এলএসি-তে চিনের মোকাবিলায় এই নাগ থ্রি ব্যবহারে জোর দিতে চাইছে ভারতীয় সেনা। ত্রিশক্তি কোরের মহড়ায় সামিল অর্জুন, চক্র, টি-৭২ ও ভীষ্ম সিরিজের লেটেস্ট ট্যাঙ্ক। নাগ থ্রি-র সামনে তাঁরা টিকতে পারল কীনা, পারলেও কতক্ষণ টিকতে পারল, সেটাই পরখ করা হচ্ছে এই মহড়ায়। একইসঙ্গে ভারতের হাতে থাকা ট্যাঙ্কগুলো ১৭ হাজার ফুট উঁচুতে কীরকম পারফর্ম করছে, সেটাও পরখ করল সেনা। সেনাকর্তারা বলছেন, দুনিয়ার অধিকাংশ ট্যাঙ্ক এতটা উঁচুতে কাজ করতে সক্ষম নয়। অনেক সময় প্রবল ঠাণ্ডাতেও ট্যাঙ্কের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এমন ভৌগলিক পরিস্থিতি একমাত্র অত্যাধুনিক ট্যাঙ্কই কাজ করতে পারে। মুশকিল হল, ভীষ্ম, টি-৭২ বা অজেয় বা ভীষ্ম সিরিজের ট্যাঙ্ক এত প্রতিকূল পরিবেশে লড়াইয়ের কথা মাথায় রেখে তৈরি হয়নি। অন্যদিকে চিনের হাতে অল ওয়েদার জেডটিকিউয়ের মতো ট্যাঙ্ক রয়েছে। ২০১৮ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। সবকিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৫ বাবদ ভারতের হাতে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক এসে যেত। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই প্রকল্প ক্রমশই পিছিয়েই যাচ্ছে। তাই এলএসি-র কথা মাথায় রেখে হাতে থাকা ট্যাঙ্কগুলির আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। সেই কাজ শেষ হতেও দেরি আছে। তাই চিনের তরফে ট্যাঙ্ক হামলা হলে নাগের মতো ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রে জোর দিতে চাইছে সেনা। আশির দশকে ইন্টিগ্রেটেড মিসাইল ডিফেন্স প্রজেক্টের আওতায় পাঁচটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। আকাশ, অগ্নি, ত্রিশূল, পৃথ্বী ও নাগ। প্রতিরক্ষায় মেড ইন ইন্ডিয়ার প্রসঙ্গ এলে ত্রিশূল বাদে এই অস্ত্রগুলোই ভারতের অন্যতম ভরসা। এর মধ্যে আকাশ, অগ্নি, পৃথ্বী ও নাগ প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। ত্রিশূল প্রকল্প বাতিল হয়েছে। চারটি ক্ষেত্রেই একাধিক এডিশন সেনার হাতে এসেছে। ট্যাঙ্কযুদ্ধের পাশাপাশি আকাশ যুদ্ধেও সমান তালে প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। ৯৭টি তেজস এমকে ওয়ান যুদ্ধবিমান কিনতে হ্যালকে ৬৭ হাজার কোটি টাকার বরাত দিল প্রতিরক্ষামন্ত্রক।

 

Follow Us: