AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Pakistan, Balochistan: ১০ ঘণ্টার ‘স্বাধীনতা’, বদলাবে পাকিস্তানের ম্যাপ?

Pakistan, Balochistan: ১০ ঘণ্টার ‘স্বাধীনতা’, বদলাবে পাকিস্তানের ম্যাপ?

সুপ্রিয় ঘোষ

|

Updated on: Aug 28, 2024 | 12:03 AM

Share

পাক সংবাদপত্র দ্য ডন বলেছে, ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বালুচিস্তান প্রদেশটাই পাকিস্তান থেকে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেনা-পুলিশ-প্রশাসনকে কোথাও খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সত্যি তো এটাই যে বালুচিস্তান কোনওদিন পাকিস্তানের অংশই ছিল না। সব ঠিকঠাক চললে হয় স্বাধীন বালুচিস্তান তৈরি হতো, নয়তো তা ভারতের অংশ হতো।

মাত্র ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মধ্যে দেশের একটা গোটা প্রদেশই হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। বালুচিস্তানের কথা বলছি। বালুচদের অনেকেই যাকে বলেন পাক-অধিকৃত বালুচিস্তান। গত ৭৮ বছরে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসের ঘটনা। একবার নয়, পরপর ছ-বার।

প্রথমে বালুচিস্তান-পাক পঞ্জাব সীমানায় রারাসামে যাত্রীবাহী বাস থামায় জঙ্গিরা। যাত্রীদের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখে ২৩ জনকে গুলি করে খুন করা হয়। সবাই পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা। দ্বিতীয় ঘটনা বালুচিস্তানের কালাত জেলায়। পরপর থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা। যতটা জানা যাচ্ছে, কমবেশি ২৫টা থানায় হামলা চলে। পাক সেনার একটা অস্থায়ী ক্যাম্প বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেয় জঙ্গিরা। কোয়েট্টায় সেনা ক্যাম্পে দীর্ঘক্ষণ গুলির লড়াইয়ে ১৪ জন সেনাকর্মীর মৃত্যুর কথা জানিয়েছে পাক সেনা। তৃতীয় ঘটনা, বালুচিস্তানের সীমান্ত এলাকায়। এখানে পরপর রেললাইন উড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। হামলা চলে অন্যত্রও। পাক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ৬২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। এঁদের মধ্যে অন্তত ১৮ জন পাক সেনার সদস্য। ২১ জন পুলিশ ও বাকিরা সাধারণ নাগরিক। গুলির লড়াইয়ে ২২ জন জঙ্গিরও মৃত্যু হয়েছে। সব ঘটনার দায় নিয়েছে বালুচ লিবারেশন আর্মি-সহ ৩টি সংগঠন। তবে তাঁদের দাবি হামলায় একশো জনেরও বেশি সেনা ও পুলিশের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে নিহতের সংখ্যা দুশোর বেশি।

বালুচিস্তানে এই ধাক্কা খেয়ে এদিনই জরুরি বৈঠকে বসে শাহবাজ শরিফ মন্ত্রিসভা। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে বালুচিস্তানের নিরাপত্তা পাক সেনার স্পেশাল স্কোয়াডের হাতে তুলে দেওয়া হবে। বেশকিছু দিন ধরেই বালুচিস্তানে বিদ্রোহীদের তুলে নিয়ে যাচ্ছিল পাক পুলিশ। অনেকেরই আর খোঁজ মিলছিল না। বালুচিস্তানে বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিলে এইটাই হয় বরাবর। দ্বিতীয়ত, গতবছর মে মাসে বালুচিস্তানে চিনা নির্মাণকর্মীদের গাড়িতে বড়সড় হামলা হয়। সেই ঘটনাতেও হাজারের বেশি বালুচ তরুণকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এখনও তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়নি। তৃতীয়ত, গতকালই বালুচ নেতা আকবর বুগতির মৃত্যুদিবস ছিল। ওই দিন বালুচিস্তানে জমায়েত নিষিদ্ধ করে পাক প্রশাসন। বালুচদের বিভিন্ন সংগঠন তখনই জানিয়েছিল, পাক প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত বালুচদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও মানবাধিকারের উপর আঘাত। ঘটনাচক্রে সেইদিনই বালুচিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রক্তক্ষয়ী হামলার সাক্ষী থাকল পাকিস্তান।

পাক সংবাদপত্র দ্য ডন বলেছে, ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বালুচিস্তান প্রদেশটাই পাকিস্তান থেকে যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেনা-পুলিশ-প্রশাসনকে কোথাও খুঁজেই পাওয়া যায়নি। সত্যি তো এটাই যে বালুচিস্তান কোনওদিন পাকিস্তানের অংশই ছিল না। সব ঠিকঠাক চললে হয় স্বাধীন বালুচিস্তান তৈরি হতো, নয়তো তা ভারতের অংশ হতো। কিন্তু পাকিস্তানে জুড়ে যাওয়াটা বালুচেরা কোনওদিনই মেনে নেননি। সাড়ে সাত দশক পরেও তাই পাকিস্তান থেকে মুক্ত হতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে একজোট হয়ে লড়ছেন বালুচরা।

Published on: Aug 27, 2024 11:44 PM